ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

নিহত ২ জঙ্গি জেএমবির সদস্য

আহমদ নূর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:০৫, ২৯ এপ্রিল ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নিহত ২ জঙ্গি জেএমবির সদস্য

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলায় জঙ্গি আস্তানায় র‍্যাপিড একশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) অভিযানে নিহত দুই জঙ্গি নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য।

সোমবার দুপুরে র‌্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা জেএমবির সদস্য। তবে কোন গ্রুপের তা জানা যায়নি। এর আগে র‍্যাবের ডিজি বেনজীর আহমেদ জানান, জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পাওয়ার মেট্রো হাউজিংয়ে ৮ নম্বর রোডের শেষ মাথায় ওই টিনশেড বাসা ঘিরে ফেলে সোমবার ভোর রাত ৩টা থেকে অভিযান শুরু হয়।

অভিযান শুরুর পরপরই ওই বাসার ভেতরে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পরে র‌্যাবের সঙ্গে গোলাগুলি হয় সেখানে। ভোর পৌনে ৫টার দিকে বড় বিস্ফোরণে ওই বাসার টিনের চাল উড়ে যায়।

জঙ্গিদের বিষয়ে তথ্য পাওয়ার জন্য ওই বাড়ির মালিক ওয়াহাব, কেয়াটেকার সোহাগ, তার স্ত্রী মৌসুমী এবং পাশের মসজিদের ইমাম ইউসুফকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে র‌্যাব কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

র‌্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাসার মধ্যে নিহত দুই জঙ্গি চলতি গত ১ তারিখে এ বাসায় ওঠেন। বাসার মালিক আব্দুল ওয়াহাবের কাছে নিজেদের এনজিও’র নিরাপত্তাকর্মী পরিচয়ে বাসা ভাড়া নেন তারা। বাসা দেখাশোনা করতেন ওয়াহাবের নিয়োজিত কেয়ারটেকার সোহাগ। সোহাগের সঙ্গে তার স্ত্রী মৌসুমী আর দুই ছেলে ওই বাসায় থাকে।

এই জঙ্গি আস্তানার বিষয়ে তেমন কিছু জানে না প্রতিবেশীরা। এক মাস আগে বাসায় মেস ভাড়া দেয়া হয়েছে- এটুকুই প্রতিবেশীরা জানেন। তবে তাদের কখন দেখেননি। তাছাড়া সোহাগ ও তার স্ত্রীর সঙ্গে প্রতিবেশীদের তেমন হৃদ্যতা ছিল না।

জঙ্গি আস্তানার বাড়ির পাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আব্দুল ওয়াহাবের ওই বাসায় সোহাগ দুই বছর ধরে তার পরিবার নিয়ে কেয়ারটেকার হিসেবে থাকছেন। সোহাগ প্রথমে ইটভাটায় শ্রমিকের করতেন সোহাগ। কয়েক মাস আগে কাজ ছেড়ে বাসার মালিকের ডিস ক্যাবল সংযোগের ব্যবসার বিল বাসায় বাসায় গিয়ে তুলতেন।

সোহাগ ও তার স্ত্রীর মৌসুমীর সঙ্গে প্রতিবেশীদের সু-সম্পর্ক ছিল না। মৌসুমী প্রতিবেশীদের বাসায় গেলে সোহাগ বকাঝকা করতেন। সোহাগ মাদকাসক্ত বলেও জানান তারা।

এ বিষয়ে প্রতিবেশী সাথী বলেন, ‘‘মাঝে মধ্যে ওই বাড়ির মধ্যে গরু-ছাগল চলে গেলে আনতে যেতাম। তখন বাড়ির লোকজন বেশি কথা বলতে চাইতেন না। টিভি চালু থাকলে বন্ধ করে দিতেন। তারা চাইতেন না আমরা সেখানে বেশিক্ষণ থাকি।’’

বাড়ির বর্ণনা দিয়ে প্রতিবেশীরা বলেন, ওই বাড়িতে ৪/৫টি কক্ষ ছিল। মাসখানেক আগে হঠাৎ করে কক্ষগুলো ভেঙে একটি মসজিদ বানানো হয়। ১০-১৫ দিন আগে মসজিদে মাইক লাগানো হয়। মাইকে আজান দেয়া হতো। মাত্র কয়েক জন মানুষ মসজিদে নামাজ পড়তে যেতেন। একজন ইমাম নিয়োগ দেয়া হয়েছিল।

তারা জানান, মসজিদ বানানোর পর বাকি দুটি কক্ষ ছিল। কক্ষের সামনে ছোট বারান্দা। একটি কক্ষে বাড়ির কেয়ারটেকার সোহাগ থাকতেন। বাকি কক্ষে একজনকে মেস হিসেবে ভাড়া দেয়া হয়। ওই নতুন ভাড়াটিয়াকে প্রতিবেশীরা কখনো দেখেনি। কিন্তু মসজিদ হওয়ার পর বাড়িতে অপরিচিত লোক আসা-যাওয়া করত।

প্রতিবেশী রহিমা বেগম বলেন, ‘‘বাসায় সোহাগ, তার স্ত্রী মৌসুমী আর তাদের দুই ছেলে ছাড়া কাউকে কখনো দেখিনি। মৌসুমী আমাকে বলেছিল- একটি রুমে একজনকে ভাড়া দেয়া হয়েছে। তবে ওই লোককে আমরা কখনো দেখিনি।’’

তিনি বলেন, ‘‘ইদানিং সোহাগের চলাফেরা কিছুটা অন্যরকম ছিল। সারা দিন ঘুমাতেন, আর সারারাত সজাগ থেকে বাড়ির আশপাশে হাঁটাচলা করতেন। কী কারণে, তা জানি না।’’




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৯ এপ্রিল ২০১৯/নূর/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়