ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ইমরুলের আক্ষেপ, ইমরুলের আত্মবিশ্বাস

ইয়াসিন হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৫৮, ১৩ জুলাই ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ইমরুলের আক্ষেপ, ইমরুলের আত্মবিশ্বাস

ইমরুল কায়েস (ফাইল ছবি)

ক্রীড়া প্রতিবেদক : ইমরুল কায়েস, নামটা ক্রিকেট বিশ্বে বহুল প্রচলিত, বহুবার উচ্চারিত। কিন্তু সেই নামের ধারাবাহিকতা নেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। দীর্ঘদিন পর শুনতে পাওয়া যায় সেই নামের গর্জন। সে সময়ে মাতামাতি-লাফালাফির হিড়িক পড়ে যায়। কিন্তু খানিকটা আড়াল হলেই ফিরে তাকানোর লোকের অভাব!

২০০৮ সালের ১৪ অক্টোবর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথচলা শুরু ইমরুলের। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন প্রায় নয় বছর ধরে। কিন্তু এ নয় বছরে এখনো ধারাবাহিক হতে পারেননি কুষ্টিয়ার মেহেরপুরের এ সন্তান। কখনো কন্ডিশন, কখনো কম্বিনেশন; আবার কখনো প্রতিপক্ষ, আবার কখনো ইনজুরি। সব মিলিয়ে জর্জরিত ইমরুল! আট বছর ধরলেও ইমরুলের ম্যাচ খেলার কথা অন্তত ১৩০-১৪০টি। সেখানে নামের পাশে ইমরুলের ওয়ানডে ম্যাচ মাত্র ৬৭টি! অর্থাৎ গড়ে প্রতি বছর ম্যাচ খেলছেন মাত্র পাঁচটি!

জাতীয় দলে নিয়মিত না হওয়ার দায়টা কিছুটা টিম ম্যানেজমেন্টকেও দিয়েছেন ইমরুল। আক্ষেপ নিয়েই যেন বললেন,‘আমি আমার কাজটা করার চেষ্টা করি যখনই সুযোগ পাই। ম্যানেজমেন্ট হয়তো আমাকে নিয়ে ভিন্ন কিছু চিন্তা করে, যার জন্য আমি হয়তো দলে নিয়মিত হতে পারি না! যদি ওনারা চিন্তা করে আমাকে নিয়ে কন্টিনিউ করতে পারবে, তখন ভিন্ন কিছু হতে পারে আমার ক্রিকেট জীবনে।’

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ওয়ানডেতে সেরা সময় পার করছে। ব্যাটিংয়ে তামিম দুর্দান্ত। কিন্তু তার যোগ্য সঙ্গীর অভাব। সৌম্য সরকার দ্যুতি ছড়িয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এলেও ভালো করতে পারছে না সাম্প্রতিক সময়ে। অন্যদিকে ইমরুল সুযোগের অভাবে সাইডবেঞ্চে। যে দুই-তিনটি ম্যাচে ‍সুযোগ পাচ্ছেন সেগুলোতেও পুরো দলের সঙ্গে ফ্লপ ইমরুল। কিন্তু বড় সাফল্য এসেছে ইমরুলের হাত ধরেও। ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে ইমরুল-তামিমের ৩১২ রানের উদ্বোধনী জুটি নজর কেড়েছে ক্রিকেটবোদ্ধাদের।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে হুটহাট সাফল্য পাওয়া কঠিন। তবে ইমরুল বলছেন, পেশাদার ক্রিকেটারদের এমন পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেওয়ার অভ্যাস গড়ে ওঠা ইতিবাচক। তার ভাষ্য, ‘হঠাৎ করে যদি একটা ম্যাচ খেলেন তখন পারফর্ম করা কঠিন হয়ে যায়। তবে পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে এটার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া ভালো। মানসিকভাবে আমার মনে হয় ইতিবাচক থাকা জরুরী। একটা সুযোগ আসলে সেটাকে সঠিকভাবে ব্যবহার করা।’

ওপেনিংয়ে জায়গাটি কঠিন। একটি সুযোগ মিস করলে ফিরে আসার সুযোগ পাওয়া যায় না। অলরাউন্ডার হলে অন্তত বোলিংয়ে ‍পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা যায়। ব্যাটিংয়ে টিম ম্যানেজমেন্টকে মন ভরাতে না পারা ইমরুলকে জিজ্ঞাসা করা হলো বোলিং নিয়ে। বেশ হাসিমুখেই উত্তর দিলেন এভাবে, ‘বোলিংয়ের থেকে মনে হয় কিপিংটা ভালো হয়।’ কেনই হবে না। চলতি বছর ওয়েলিংটনের মুশফিকের ইনজুরিতে উইকেটের পেছনে দাঁড়িয়ে সর্বোচ্চ পাঁচটি ক্যাচ নিয়ে ১৪১ বছরের পুরোনো রেকর্ডও ভাঙেন এ ক্রিকেটার। পরিসংখ্যান তো ভালো কিছুরই ইঙ্গিত দিচ্ছে!

প্রায় প্রতিটি দলেই এমন কিছু খেলোয়াড় থাকে যারা অনেকটা নীরবেই নিজের কাজটা করে যায়। দলের প্রয়োজনে এগিয়ে এসে নিজের সেরাটা খেলে থাকেন। বাংলাদেশ ক্রিকেটে নীরবেই কাজটা করে যাচ্ছেন ইমরুল কায়েস। পরিসংখ্যানের বিচারে তামিমের সবচেয়ে পরীক্ষিত সঙ্গী ইমরুল কায়েস। দুজনের ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ সাফল্যও পেয়েছে একাধিকবার। কিন্তু সেই ইমরুলের কাজটা এখন লাইমলাইটের বাইরে। ফিটনেস ট্রেনিং উপভোগ করা আত্মবিশ্বাসী ইমরুল সেরা একাদশে নিজের জায়গা ফিরে পেতে চাচ্ছেন, প্রয়োজন টিম ম্যানেজমেন্টের একটু উদারতা, একটু আগ্রহ।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ জুলাই ২০১৭/ইয়াসিন/পরাগ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়