ঢাকা     বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৪ ১৪৩১

পড়তে বসে বায়না

ঝুমকি বসু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:১৮, ৯ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পড়তে বসে বায়না

প্রতীকী ছবি

ঝুমকি বসু : হাসিখুশি মিষ্টি মেয়ে তৃষা। সারাদিন খেলছে, কার্টুন দেখছে, বকবক করছে– কোথাও কোনো সমস্যা নেই।

কেবল পড়তে বসলেই যত গণ্ডগোল বেঁধে যায়। বায়না শুরু হয়ে যায় পড়ার বই দেখলেই। কখনো টিভি দেখতে দেওয়ার জন্য আবদার, কখনো শরীর খারাপের অজুহাত, আবার কখনো পানি তেষ্টা পাওয়া বা টয়লেটে যাওয়ার অছিলায় উঠে যাওয়া।

পড়তে বসে তৃষা জানা জিনিসও ভুল করে। এর জন্য মাঝে মাঝে ধৈর্যচ্যুতি ঘটে যায় ওর মা রত্নার। তৃষাকে পড়তে বসালে রীতিমতো হয়রান হয়ে যায় সে।

শিশুকে পড়তে বসানো বাবা-মায়ের কাছে এক মহাঝক্কি। অবাধ্যতা, বায়না, দুষ্টুমি লেগেই থাকে। শিশুর কান্নাকাটি, টিভির দিকে মন পড়ে থাকা, অসমাপ্ত হোমওয়ার্ক, পরের দিন ক্লাসে টিচারের বকুনি এগুলো ভেবে বাবা-মায়ের মনে এক ধরনের চিন্তা তৈরি হয়ে যায়।

কিন্তু যেসব শিশু পড়তে বসতে চায় না, তাদের পড়ানোর জন্য কিছু সমাধান তো বের করতে হবে। আর এই সমাধান বাবা-মা হিসেবে খুঁজতে হবে আপনাকেই। আপনার সমস্যা সমাধানের জন্য কিছু পরামর্শ–

* পড়াশোনাকে চাপের বিষয় ভাববেন না। আপনি নিজে যদি এভাবে ভাবেন, তাহলে শিশুও এটাকে জটিল বিষয় ভাবতে শুরু করবে। খেলাচ্ছলে পড়তে বসান। ও নিজের থেকেই উৎসাহ পাবে।

* শিশুরা স্কুল থেকে ফিরে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। ফেরার পর ওকে হোমওয়ার্ক করতে দেবেন না। একটু বিশ্রাম নিতে দিন। খেলতে দিন। এতে ওর ক্লান্তিবোধ কেটে চনমনে ভাব চলে আসবে।

* পড়তে বসে প্রথম ৫-১০ মিনিট লেগে যায় মনোসংযোগ করতে। তাই শুরু করুন সহজ বা ওর পছন্দের কোনো বিষয় দিয়ে। এতে ওর সুবিধা হবে, পড়ায় উৎসাহী হবে।

* হোমওয়ার্ক করার সময় প্রথমে ওকে নিজে চেষ্টা করতে দিন। না পারলে আপনি দেখিয়ে দিন। এতে ওর ভেতর সাহস সঞ্চিত হবে।

* আপনার শিশু সব বিষয়ে তুখোড় হবে, এমনটা ভাববেন না। কঠিন বিষয় বোঝানোর সময় গল্পের মতো করে বোঝান। ফলে পড়াটা আনন্দময় হবে।

* না বুঝতে পারলে ওকে বকাঝকা বা মারধোর করবেন না। এতে পড়াশোনা নিয়ে শিশুর মনে ভীতি তৈরি হবে।

* পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের জন্য বাড়িতে টিভি বন্ধ, গান শোনা বন্ধ কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে খেলা যাবে না- এমন কঠোর নিয়ম তৈরি করবেন না। কারণ এসব কড়া নিয়মে লাভ খুব একটা হয় না। বরং টিভি দেখা কিংবা কম্পিউটারে গেম খেলার জন্য একটা নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিন। আখেরে ওটা ভালো ফল দেয়।

* শিক্ষণীয় টিভি চ্যানেলগুলো দেখতে সন্তানকে উৎসাহ দিন। এসব চ্যানেল দেখলে ওর ক্রিয়েটিভিটি বাড়বে এবং বাইরের জগৎ সম্পর্কে জানতে পারবে। সারাদিন বইয়ে যেন মুখ গুঁজে না থাকে খেয়াল করুন। না-হলে পড়াটা বোঝা হয়ে ওঠবে তার কাছে।

* শিশুর পড়ার টেবিলটা নিরিবিলি জায়গায় রাখুন। পড়ার সময়টুকুতে যেন কোনো ব্যাঘাত সৃষ্টি না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখুন। শিশুর পড়ার সময় টিভি চালাবেন না এবং আপনিও পড়াতে বসে টিভি বা মোবাইল ফোন চালাবেন না। তাতে পড়াশুনার চেয়ে টিভি বেশি সময় খেয়ে নেবে অনায়াসে।
 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ আগস্ট ২০১৭/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়