ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

‘না’ বলতে শিখুন

ফজলে আজিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:১০, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘না’ বলতে শিখুন

প্রতীকী ছবি

ফজলে আজিম : ‘না’ বলতে শিখুন। কখন? যখন আপনি আপনার ওপর অর্পিত কোনো দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না তখন। যাতে করে বিকল্প কাউকে সময় থাকতে ওই কাজে নিয়োগ করা যায়। আপনার অদক্ষতা, কাজের ব্যস্ততা কিংবা সীমাবদ্ধতা যে কারণেই হোক না কেন যা করতে পারবেন না, তা স্পষ্টভাবে বিনয়ের সঙ্গে জানিয়ে দিন।

মানসিক চাপ সৃষ্টির অনেক কারণ রয়েছে। একটি কারণ হচ্ছে যুক্তিসঙ্গত কারণে ‘না’ বলতে না পারা।

প্রত্যেককে একটা নির্দিষ্ট সময়ের ফ্রেমে কাজ করতে হয়। কিছু কিছু কাজের একটা নির্দিষ্ট সময় রয়েছে। যে সময়ের মধ্যে অবশ্যই সে কাজ শেষ করতে হয়। এ ধরনের বিষয়ে সচেতন থাকুন। আপনি যদি নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারেন তবে আগে সময় চেয়ে নিন। এতে করে আপনি মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকবেন।

অনেক সময় ‘না’ বলতে না পারার কারণে বাড়তে থাকে মানসিক অস্থিরতা। আর মানসিক চাপের ফলে শরীরে নানারকম সমস্যা দেখা যেতে পারে। মাথাব্যথা, পেটে গণ্ডগোল, পায়ে ব্যথা এমন অনেক কিছু রোগ আকারে দেখা যেতে পারে। আর তাই মানসিক চাপকে কেউ কেউ ‘বিষ’এর সঙ্গে তুলনা করে থাকেন। কেননা মানসিক চাপের ফলে মস্তিষ্কের একটা বিশেষ হরমোন নিঃসরণ হয় যা টক্সিনের সৃষ্টি করে। টক্সিন শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে ক্রমশ দুর্বল করে ফেলে। সেখান থেকেই ছড়ায় নানারকম মনোদৈহিক ব্যধি। আর তাই সুস্থ থাকার জন্য মানসিক চাপমুক্ত থাকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

আপনার হাতে পর্যাপ্ত সময়, অর্থ কিংবা অন্যকোনো সুবিধা দেয়ার মতো অবস্থা না থাকলে ‘না’ বলুন। অফিস শেষে বাসায় একটা প্রোগ্রাম আছে এদিকে সহকর্মীরা মিলে পার্টিতে যাবে আপনার পক্ষে একসঙ্গে দুইজায়গায় থাকা সম্ভব না। যেটা কম গুরুত্বপূর্ণ সেটাকে না বলুন। আপনার পেটে সমস্যা, এমন কোনো খাবারের আয়োজন হলো যা আপনি গ্রহণ করলে সমস্যা হতে পারে সেখানে না বলুন। তবে তা বিনয়ের সঙ্গে বলুন। প্রয়োজনে বিকল্প কিছু পছন্দ করুন। কিংবা কৌশলে পরিস্থিতি মোকাবেলা করুন। বাজারে গেলেন। মাছ, মুরগী কিংবা সবজি বিক্রেতার (প্রশংসার!) ফাঁদে পড়ে অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটাকে না বলুন।

আপনি যদি যুক্তিসঙ্গত কারণে না বলতে না পারেন তবে নিজের টেবিলের দায়িত্ব, অন্যের টেবিলের দায়িত্ব, অফিসের বাইরের দায়িত্ব এমন আরো কত যে কাজের দায়িত্ব এসে পড়তে পারে তা শেষ করা যাবে না। তার মানে এই নয় যে দায়িত্ব এড়িয়ে চলতে হবে। নিজের প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করার পর অন্যের জন্যে কাজ করুন। এতে করে আপনি মানসিকভাবে উৎফুল্লতার সঙ্গে অন্যের জন্যও সেবা দিতে সক্ষম হবেন।

ক্ষেত্র বিশেষে না বলতে পারা বেয়াদবি কিংবা দুর্বলতা নয়। বরং দায়িত্বশীলতার পরিচয় বহন করে। আপনি যে প্রতিষ্ঠানেই কাজ করেন না কেন প্রথমেই আপনাকে আপনার নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হবে। কারো ব্যক্তিগত সন্তুষ্টি কিংবা অসন্তুষ্টি সেখানে মুখ্য বিষয় নয়।

সাধ্যের অতিরিক্ত দায়িত্ব যখন কারো ওপর বর্তায় তখন মানসিক চাপ বাড়াটাই স্বাভাবিক। এজন্য মাঝে মধ্যে না বলতে শিখুন।

আপনি যা করতে পারবেন না তা সরাসরি জানিয়ে দিন। এতে করে আপনি ছোট হবেন না। পেশাগতজীবনে সবাইকেই কমবেশি কিছু দায়িত্ব পালন করতে হয়। কিছু কিছু সময় যোগ হয় বাড়তি দায়িত্ব। যেগুলোকে কেউ কেউ অনুরোধের কাজও বলে থাকেন। এ ধরনের ক্ষেত্রেও যে কাজ আপনি করতে পারবেন না তা বিনয়ের সঙ্গে জানান।
 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়