ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

চাকরি পাল্টাতে যে ভুলগুলো হয়

আহমেদ শরীফ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:৪৮, ৯ এপ্রিল ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
 চাকরি পাল্টাতে যে ভুলগুলো হয়

প্রতীকী ছবি

আহমেদ শরীফ : চাকরি পাল্টানো সব সময় জটিল একটি বিষয়। পরিচিতরা ভাববে আপনার মাথা নষ্ট হয়ে গেছে। চাকরি করার মানসিকতা নেই আপনার সে কথাও বলতে শুরু করবে অনেকে। কেউ কেউ অযথা উপদেশ দেয়া শুরু করবে।

তাই চাকরি পাল্টানোর জটিল সময়টুকুতে মাথা ঠান্ডা রাখুন। সবার কথা শুনুন। তবে খুব ভালো ভাবে ভেবে আপনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ চাকরি গ্রহণের উদ্যোগ নিন। খেয়াল রাখবেন এ সময় নিচের ভুলগুলো যেন না হয় আপনার।

* গভীর পর্যবেক্ষণ না করা : আপনি যদি অন্য কোম্পানিতে, ভিন্ন ধরনের চাকরি খোঁজেন, তাহলে আপনাকে অবশ্যই আগে গভীর পর্যবেক্ষণ করতে হবে। কোনো কিছু না ভেবে, হুট করে একটি চাকরি ছেড়ে আরেকটি চাকরি নেয়া খুব ঝুঁকিপূর্ণ। নিশ্চিত হোন, যে চাকরিটি থেকে পরিত্রাণ পেতে নতুন চাকরি নিচ্ছেন আপনি, তা যেন আগেরটার মতো পীড়াদায়ক না হয়। আগে নিজের ব্যাপারে পরিপূর্ণ ধারণা থাকতে হবে আপনার।

* লোভনীয় বলেই নতুন চাকরি খোঁজা : পরিচিত বন্ধু, আত্মীয়-স্বজনরা বিভিন্ন সময় আপনাকে নতুন চাকরি নেয়ার ব্যাপারে উপদেশ বা সুপারিশ করতে পারেন। তাদের কথা শুনুন, সময় নিয়ে ভাবুন। এরপর নিজের মতকে প্রাধান্য দিয়ে সিদ্ধান্ত নিন। প্রকৃত পক্ষে আপনি কি করতে চান, নতুন লোভনীয় চাকরির অফারটা গ্রহণ করলে সেখানে মানিয়ে নিতে পারবেন কি না, এ সব নিয়ে ঠান্ডা মাথায় ভাবুন।

* বন্ধুর সাফল্য দেখে অতি উৎসাহী হওয়া : হতে পারে আপনার কোনো কাজিন বা বন্ধু কোনো একটি সেক্টরে ভালো চাকরি করছেন। এতে লোভে পড়ে আপনিও সেই সেক্টরে চাকরি খোঁজার বাড়তি প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। এটা বোকামী। কারণ আপনার কাজিন বা বন্ধুর জন্য যা ভালো আপনার জন্য তা ভালো নাও হতে পারে। তাই আগে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে নতুন ওই সেক্টরের বিষয়ে বিস্তারিত জানুন। অনলাইন রিসার্চ করুন। কলেজ, ইউনিভার্সিটির পুরোনো বন্ধু, সহকর্মী, বন্ধুর সঙ্গে নতুন চাকরির সুযোগ নিয়ে সব সময় আলোচনা করা একটি মজার ব্যাপার।

* জানা সম্ভাবনাগুলোতে আটকে থাকা : চাকরি পরিবর্তন একটি গতিশীল প্রক্রিয়া। তাই শুধু আপনার জানা কয়েকটি কোম্পানিতেই যদি চাকরির জন্য হা করে বসে থাকেন, তাহলে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে না। এছাড়া একই কোম্পানিতে পদোন্নতি বা অন্য পদে চাকরি খোঁজার চেষ্টা করাও সফল হয় না সাধারণত। তাই নতুন নতুন কোম্পানির খবর রাখুন।

* টাকাকে বেশি প্রাধান্য দেয়া : যদি চাকরির পরিবেশ আপনার অনুকূলে না থাকে, তাহলে যতো বেশি টাকা বেতনই পান না কেন, তাতে মানসিক শান্তি পাবেন না আপনি। কর্মস্থলে অশান্তির কারণে বেশিরভাগ চাকরিজীবী নানা শারীরিক ও মানসিক সমস্যায় ভোগেন। মূলত টাকার কথা ভেবে চাকরি পাল্টালে নতুন অফিসে অনুকূল পরিবেশ থেকে হয়তো বঞ্চিত হতে পারেন আপনি। তাই আগে ভাবতে হবে অফিসের কাজের পরিবেশ আপনার অনুকূলে আছে কি না।

* বিরূপ পরিস্থিতি নিয়ে কারো সঙ্গে কথা না বলা : বর্তমান চাকরিতে হয়তো আপনি বিরূপ পরিস্থিতিতে আছেন। কাজের পরিবেশ খারাপ। বসের সঙ্গে মনোমালিন্য চলছে। অথবা বেতন মোটেও আশানুরূপ নয়। বিষয়গুলো নিজে একাকী হজম না করে আপনার বন্ধু, আত্মীয়, শুভাকাঙ্ক্ষীর সঙ্গে কথা বলুন। এতে করে নতুন চাকরির সন্ধান পেলেই তারা আপনাকে জানানোর চেষ্টা করবেন।

* নতুন কোম্পারি কাজের ধরন না জানা : যে অফিসে কাজ করতে ইচ্ছুক আপনি, সেখানে কাজের ধরন কেমন, সেটা আগে জেনে নিতে হবে আপনাকে। বর্তমানে চাকরিরত অবস্থায় ওই কোম্পানিতে পার্ট টাইম কাজ করার সুযোগ নিন। এতে করে বুঝতে পারবেন নতুন অফিস আপনার জন্য কতোটুকু উপযোগী। আর নতুন চাকরি নেয়ার আগে নতুন কোনো ডিগ্রি নেয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলে আগে জেনে নিন আসলেই ডিগ্রিটা কতোটুকু জরুরি।

* খুব দ্রুত চাকরি পাল্টানোর ইচ্ছে : অল্প সময়ে চাকরি পাল্টে ফেলার ইচ্ছে করা বোকামী। কারণ একটি উপযোগী, নতুন কোম্পানির চাকরি খোঁজা, নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা এসব ক্ষেত্রে সাধারণত ছয় মাস থেকে এক বছর সময় লেগে যেতে পারে। অনেক সময় আরো বেশি সময়ও ব্যয় হয়। তাই ধৈর্য্য হারানো ঠিক নয়।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ এপ্রিল ২০১৮/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়