ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

পাবনায় অনুমোদনহীন করাত কলের ছড়াছড়ি

শাহীন রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ১৯ জুন ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পাবনায় অনুমোদনহীন করাত কলের ছড়াছড়ি

পাবনা সংবাদদাতা : পাবনায় বর্তমানে ৩৬৭টি করাত কল রয়েছে। অবাক করা সত্যি এই যে, এর ৩৪০টি করাত কলই অবৈধভাবে পরিচালিত হচ্ছে।

আবার প্রশাসনের নাকের ডগায়ই সামাজিক বন বিভাগের অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজসে যত্রতত্র এসব করাত কল দেদার গাছ ধ্বংসে ব্যবহৃত হচ্ছে।

সামাজিক বন বিভাগ থেকে জানা যায়, পাবনা জেলায় যথাযথ প্রক্রিয়ায় লাইসেন্সপ্রাপ্ত করাত কলের সংখ্যা মাত্র ২৭টি। অপরদিকে লাইসেন্সবিহীন অবৈধভাবে পরিচালিত করাত কলের সংখ্যা ৩৪০টি।

তথ্য মতে, পাবনা সদর উপজেলায় ৭৪টি করাত কলের মধ্যে বৈধ কলের সংখ্যা মাত্র ৯টি। ঈশ্বরদীতে ৪৬টির মধ্যে বৈধ ৩টি, আটঘরিয়ায় ২০টির মধ্যে বৈধ ৩টি। চাটমোহরে ৪৫টির মধ্যে বৈধ ৩টি, ভাঙ্গুড়ায় ২৫টির মধ্যে বৈধ ৬টি, সাঁথিয়ায় ৪৬টির মধ্যে বৈধ মাত্র ১টি এবং বেড়ায় ৩২টির মধ্যে মাত্র ২টি করাত কল লাইসেন্স প্রাপ্ত।

এছাড়াও জেলার সুজানগরে ৬৬ এবং ফরিদপুরে ১০টি কলের মধ্যে একটিরও অনুমোদন নেই।

এই অনুমোদনহীন অবৈধভাবে পরিচালিত করাত কলের মাধ্যমে লাগাতার চলছে বৃক্ষ নিধন ও কাঠ চেরাই। প্রতিদিনই পাবনা থেকে ট্রাকযোগে বিপুল পরিমাণ কাঠ কোন জবাবদিহি ছাড়াই অন্যত্র চলে যাচ্ছে। 

 



দেখা যায়, অধিকাংশ করাত কলই গড়ে উঠেছে মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়ক ঘেঁষে। ফলে মাসের পর মাস সংশ্লিষ্ট সড়কজুড়েই ফেলে রাখা হচ্ছে কাঠের স্তুপ্।

শহরতলীর সিংগা বাইপাস সড়কে আব্দুল আওয়াল টিটু নামে একজন করাত কল মালিক বলেন, ‘নতুন ব্যবসা শুরু করেছি। পৌরসভা থেকে ট্রেড লাইন্সেস নিয়েছি। তবে সামাজিক বন বিভাগ থেকে ছাড়পত্র বা অনুমোদন লাগে তা আমার জানা নেই।’

পাবনা শহরসহ জেলার কয়েকটি উপজেলার একাধিক করাত কল মালিক ও সংশ্লিষ্টদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, ফার্নিচার ব্যবসার সূত্র ধরেই করাত কলের ব্যবসা। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা থেকে ট্রেড লাইসেন্স করা হয়। কোন সময়ে কেউ এলে তাদেরকে ‘ম্যানেজ’ করা হয়।

সামাজিক বন বিভাগ পাবনার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কবির হোসেন পাটোয়ারী বলেন, ‘অবৈধ ও অনুমোদনবিহীন করাতকলগুলোর মালিকদের বিশেষ করে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ইউএনও এবং বন বিভাগের স্থানীয় কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সর্তক করা ও নোটিশ প্রদান করেছি। তাদেরকে উচ্ছেদ করতে হলে প্রশাসনের সহযোগিতা প্রয়োজন। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা পেলেই আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবো।’

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শাফিউল ইসলাম বলেন, ‘৩৪০টি করাত কল একদিনে গড়ে উঠেনি। শুরুতেই বন বিভাগের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করলে এমনটি হতো না।’

সচেতন মহলের দাবী, পাবনা জেলায় কোন সংরক্ষিত বনভূমি নেই। তাই ইতিমধ্যেই প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। জেলা প্রশাসন ও বন প্রশাসন যদি নিস্ক্রিয় থাকে, তাহলে অচিরেই ফুরিয়ে যাবে এখানের গাছের অস্তিত্ব।



রাইজিংবিডি/পাবনা/১৯ জুন ২০১৮/শাহীন রহমান/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়