ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

রায় ‘উদ্দেশ্যমূলক’, প্রত্যাখ্যান বিএনপির

এসকে রেজা পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৩৬, ১০ অক্টোবর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রায় ‘উদ্দেশ্যমূলক’, প্রত্যাখ্যান বিএনপির

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য সরকার উদ্দেশ্যমূলকভাবে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় দলটির নেতাদের কারাদণ্ড ও মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে বলে দাবি করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার রায়ের পর রাজধানীর পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ দাবি করেন।

রায়কে ‘ফরমায়েশী রায়’ অভিহিত করে তা প্রত্যাখ্যানের কথা জানান বিএনপির মহাসচিব।

২০০৪ সালের আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, প্রাক্তন উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় এসেছে আদালতে। এছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ ১৯ জনকে দেওয়া হয়েছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।

রায়ের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি মনে করে এই রায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ক্ষমতাসীন সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার নগ্ন প্রকাশ। আমরা এই ফরমায়েসী প্রত্যাখান করছি। জাতির দুর্ভাগ্য এই যে, সরকার তার এই প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য আদালতকে ব্যবহার করে আরেকটি মন্দ দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো-যেমনটি করেছে মিথ্যা মামলায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাদণ্ড দিয়ে।’

তিনি বলেন, ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার নৃশংস ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তৎকালীন বিএনপি সরকারই সে সময় প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি দেওয়ার জন্য মামলা দায়ের করেছে। স্থানীয় তদন্ত সংস্থাগুলোর পাশাপাশি এফবিআই এবং ইন্টারপোলকে তদন্তে সম্পৃক্ত করেছে। বিএনপি সরকারই এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করার জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্তের ব্যবস্থা করেছে। এসব তদন্ত এবং ১/১১ এর সরকারের আমলের তদন্ত প্রতিবেদনে কোথাও তারেক রহমান কিংবা বিএনপি নেতাদের সম্পৃক্ত করা হয়নি।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘ওই সময় ১৬১ ধারা অনুযায়ী তখন তদন্তকারী কর্মকর্তাদের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে কারারুদ্ধ শেখ হাসিনাও তারেক রহমান কিংবা বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করেননি। ৬২ জন সাক্ষীর কেউই তারেক রহমান কিংবা বিএনপির নামও উচ্চারণ করেননি। ২০০৯ সালে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী লীগ সরকার বিএনপিকে হেয়, ক্ষতিগ্রস্ত ও বিপদগ্রস্ত করার লক্ষ্যে অবসরপ্রাপ্ত ও বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল কাহার আকন্দকে চাকরিতে পুনরায় নিয়োগ দিয়ে এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত করার মাধ্যমে এটিকে একটি রাজনৈতিক মামলায় রুপান্তরিত করে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই নতুন তদন্ত কর্মকর্তাই মামলার অন্যতম আসামি মুফতি হান্নানকে দীর্ঘদিন রিমান্ডে নিয়ে, সীমাহীন ও অকথ্য অত্যাচার করে তারেক রহমানকে জড়িয়ে বানানো এক জবানবন্দিতে মুফতি হান্নান এর স্বাক্ষর নিয়ে তারেক রহমানকে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে। পরবর্তী পর্যায়ে মুফতি হান্নান আদালতে লিখিতভাবে তার সেই কথিত জবানবন্দি এই মর্মে প্রত্যাহার করেন যে, তিনি তারেক রহমানকে চেনেন না, তার সাথে কোনো কথা হয়নি এবং অত্যাচার করে তাকে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেছে।’

‘গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক রহমানের আর কোনো সম্পৃক্ততা না থাকা সত্ত্বেও আজ তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ার মাধ্যমে পুনরায় প্রমাণিত হলো যে, এদেশে কোনো নাগরিকেরই আর সুবিচার পাওয়ার সুযোগ নেই। সরকারের বিরুদ্ধে রায় দেওয়ায় পদত্যাগ ও দেশত্যাগে বাধ্য হওয়া সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ কুমার সিনহার কথাই সঠিক প্রমাণিত হলো যে, যে দেশে প্রধান বিচারপতি সুবিচার পায় না সে দেশে কোনো নাগরিকেরই সুবিচার পাওয়ার সুযোগ নেই’, বলেন বিএনপির এই নেতা।

সরকার আদালতকে ব্যবহার করে প্রতিহিংসামূলক আচরণ এবং নোংরা কৌশল নিচ্ছে দাবি করে এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১০ অক্টোবর ২০১৮/রেজা/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়