ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

বড়দিনের যে ৫০ বিষয় জানা উচিৎ

খালেদ সাইফুল্লাহ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:০৮, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বড়দিনের যে ৫০ বিষয় জানা উচিৎ

খালেদ সাইফুল্লাহ : আজ উদযাপিত হচ্ছে খ্রীষ্টান ধর্মাবলন্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন। বড়দিনকে আরো বেশি উপভোগ্য করে তুলতে এই উৎসবটি সম্পর্কে ৫০টি বিষয় আপনার জানা উচিৎ।

* দ্রুতগামী সান্তাক্লজ : মার্কিন বিজ্ঞানীদের হিসাব অনুযায়ী, সান্তাক্লজ ক্রিসমাস ইভ বা বড়দিন পূর্বসন্ধ্যায় সেকেন্ডে ৬৫০ মাইল বেগে চলে প্রতি সেকেন্ডে ৮২২টি বাড়িতে শিশুদেরকে উপহারসামগ্রী পৌঁছে দেয়।

* রবিন পাখি : ১৫০ বছর আগে ডাকপিয়নরা যখন লাল রঙের পোশাক পরিধান করতো তখন থেকে মজা করে কার্ডের ওপর রবিন নামক বিশেষ একপ্রকার লাল পালক বিশিষ্ট পাখির চিত্র অঙ্কিত করা হয়।

* মিন্স পাই : এখনকার সময়ে অধিকাংশই নিরামিষ ভোজী হলেও ভিক্টোরিয়ান সময়ে মিন্স পাই তৈরি হতো মাংস এবং মসলা জাতীয় দ্রব্যাদির মাধ্যমে।

* ছোট কমলালেবু : মোজার মধ্যে কমলালেবু রাখার প্রথাটি এসেছে ১২ শতকের ফরাসি সন্ন্যাসীদের থেকে, যারা মোজাভর্তি ফলমূল, বাদাম এবং ছোট কমলালেবু গরীবদের বাড়িতে দিয়ে যেত।

* ৩ জন জ্ঞানী ব্যক্তি : যদিও শিশু যিশুকে ৩ জ্ঞানী ব্যক্তির সম্মান জানানোর কথা প্রচলিত আছে, কিন্তু বাইবেলে এমন কোনো সংখ্যার উল্লেখ নেই।

* বাসেলিং : ক্যারল মূলত শুরু হয় বাসেলিং নামক একটি প্রাচীন ইংরেজি প্রথা থেকে, যেখানে প্রতিবেশীদের দীর্ঘায়ু কামনায় মদ্যপান করা হতো।

* ক্যারল : ১৩ শতকে আশিসির সেন্ট ফ্রান্সিসি এর দ্বারা ক্যারল প্রথার উৎপত্তির আগ পর্যন্ত চার্চগুলোতে ক্যারোল গাওয়া হতো না।

* মোজা : মোজা ঝুলিয়ে রাখার পদ্ধতিটি এসেছে একটি ডাচ্ প্রথা থেকে। প্রথানুযায়ী সেন্ট নিকোলাসের গাধার জন্য জুতা এবং খাবার রেখে দেওয়া হতো। সে এর বিনিময়ে কিছু উপহার রেখে যাবে এই আশায় এটি করা হতো।

* ফেরেশতাদের গান গাওয়া? : বাইবেলের কোথাও ফেরেশতাদের গান গাওয়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না।

* ক্রিসমাস ট্রি : ইউরোপে প্রতিবছর প্রায় ৬০ মিলিয়ন ক্রিসমাস ট্রি জন্মায়।

* নোয়েল : নোয়েল শব্দটি মূলত এসেছে ফরাসি শব্দ ‘les bonnes nouvelles’ বা ভালো খবর থেকে।

* শিশু যিশু : বাইবেল বিশারদরা বলেন, যিশুর জন্ম হয়েছিল সম্ভবত একটি গুহার ভেতর, কোনো ঘরের মধ্যে নয়।

* এক্সমাস : ক্রিসমাস এর সংক্ষিপ্তরূপ এক্সমাস কোনো অধর্মীয় বিষয় নয়। গ্রীক এক্স হলো ক্রিস্ট এর সংক্ষিপ্তরূপ।

* দীর্ঘতম ক্রিসমাস ট্রি : বিশ্বের দীর্ঘতম ক্রিসমাস গাছটি ২২১ ফুট লম্বা। এটি ওয়াশিংটনের একটি শপিংমলের ভেতর ১৯৫০ সালে স্থাপিত হয়েছিল।

* সাদা বড়দিন : বড়দিনে যদি তুষারপাত হয় তবে তাকে হোয়াইট ক্রিসমাস বা সাদা বড়দিন বলা হয়।

* যিশুর জন্ম : অনেক ধর্মতাত্ত্বিক ধারণা করেন, যিশুর জন্ম ২৫ ডিসেম্বর নয়। কিন্তু খিষ্টপূর্ব ৬ অব্দ থেকে ৩০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে সেপ্টেম্বরের যেকোনো সময়ে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।

* জিঙ্গেল বেলস: ১৮৫৭ সালে জেমস পিয়েরপন্টস এর গান জিঙ্গেল বেলসকে প্রথমে বলা হতো ওয়ান হর্স ওপেন স্লেজ এবং এটি রচিত হয়েছিল অভিবাদন জানানোর জন্য।

* টার্কি : টার্কির পূর্বে ইংল্যান্ডে প্রচলিত বড়দিনের খাবার ছিল শুকরের মাথা।

* নিষিদ্ধ বড়দিন : ইংল্যান্ডে গৃহযুদ্ধের পরে ১৬৪৭ সালে অলিভার ক্রমবেল সব ধরনের উৎসবকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ১৬৬০ সালের আগ পর্যন্ত এই আইন স্থগিত হয়নি।

* বিশ্বের বৃহত্তম স্নোম্যান : ১৯৯৯ সালে আমেরিকার মাইন রাজ্যের লোকেরা বিশ্বের সর্ববৃহৎ স্নোম্যান তৈরি করে, যার উচ্চতা ছিল ১১৩ ফুট।

* মেরি গ্রিক ক্রিসমাস : পুরাতন জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী গ্রিকরা জানুয়ারির ৭ তারিখে বড়দিন উৎসব পালন করে।

* ক্রিসমাস ট্রি ভোজন : ক্রিসমাস গাছের বিভিন্ন অংশ খাবার উপযোগী। এর নিডলগুলো ভিটামিন- সি এর উৎস।

* গুল্মবিশেষ : মালায় লতাগুল্মের ব্যবহার যিশুর কন্টকাকীর্ণ মুকুটকে নির্দেশ করে। যেখানে লাল ফলগুলো তার রক্তের ফোঁটা বলে মনে করা হয়।

* বড়দিনের কার্ড : সরকারি কর্মকর্তা স্যার হেনরি কোলের দ্বারা সর্বপ্রথম বাণিজ্যিকভাবে বড়দিনের কার্ড অনুমোদিত হয়। একটি পরিবারের মদ্যপানের দৃশ্য অঙ্কিত কার্ডগুলোর একটি গতবছর ৮,৪৬৯ ডলারে বিক্রি হয়েছে।

* ঝুলন্ত উপহার : গাছে ঝুলন্ত উপহার সামগ্রী আসে যাজকদের থেকে, যারা বিশ্বাস করে যে, গাছই সকল ভালো জিনিস দিয়ে থাকে।

* বড়দিনের সবচেয়ে বড় বিস্কুট : সবচেয়ে বৃহদাকার বড়দিনের বিস্কুট ছিল-৪৫.৭২ মিটার লম্বা এবং ৩.০৪ মিটার ব্যসবিশিষ্ট। এটি ১৯৯১ সালে অস্ট্রেলিয়াতে তৈরি হয়।

* কেনাকাটার ধুম : বড়দিনের পূর্বে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে কেনাকাটার ধুম পড়েছিল আমেরিকাতে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ে যখন সৈন্যদের আত্মীয়-স্বজনরা বিদেশে থাকে এবং তারা আগে আগে উপহার পাঠাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

* বড়দিনের গান : জিঙ্গেল বেলস ছিল প্রথম গান যেটি সম্প্রচারিত হয়েছিল মহাশূন্য থেকে। ১৯৬৫ সালের ১৬ ডিসেম্বর জেমিনি-৬ মহাকাশযানের নভোচারী স্টাফোর্ড এবং ওয়ালি স্কিরা এটি গেয়েছিলেন।

* বড়দিনের ধূমকেতু : জ্যোতির্বিদরা বেথেলহামের তারাকে একটি ধূমকেতু কিংবা ইউরেনাস গ্রহ বলে মনে করে, যেটি জ্ঞানী ব্যক্তিদেরকে পথ দেখিয়ে যিশুর কাছে নিয়ে এসেছিল।

* সান্তাক্লজের বিভিন্ন নাম : বিশ্বব্যাপী সান্তাক্লজের বিভিন্ন নাম প্রচলিত রয়েছে। জার্মানিতে ক্রিস রিঙ্গল, ইতালিতে লি বেফানা, ফ্রান্সে পেরে নোয়েল এবং রাশিয়াতে দেউশকা মোরোজ বলে পরিচিত।

* ক্রিস্ট এর দল : ক্রিসমাস শব্দটি এসেছে পুরাতন ইংরেজি ‘Cristes maess’ থেকে, যার অর্থ- ক্রিস্টের দল।

* বিং ক্রসবি : বিং ক্রসবির হোয়াইট ক্রিসমাস বিশ্বব্যাপী সর্বাধিক বিক্রিত ক্রিসমাস সংগীত। ১৯৪২ সাল থেকে গানটির ৫০ মিলিয়ন কপি বাজারে এসেছে।

* ব্যান্ড এইড : বিট্রেনে সর্বাধিক বিক্রিত ক্রিসমাস সংগীত হলো ব্যান্ড এইড এর ১৯৮৪ সালের ডু দে নো ইট’স ক্রিসমাস। এটির সাড়ে তিন’শ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়েছে।

* কৃত্রিম গাছ: কৃত্রিম ক্রিসমাস গাছের উপরের অংশ কিনতে পাওয়া যায়, যেন বেশি উপহার সামগ্রী সেখানে রাখা যায়।

* ক্রিসমাস পুডিং : ক্রিসমাস পুডিং মূলত কিসমিস এবং মদ দিয়ে তৈরি একপ্রকার স্যুপ।

* বিস্কুটের নকশা : লন্ডনের মিষ্টি প্রস্তুতকারী টম স্মিথ প্রথম ১৮৪৭ সালে মিষ্টির মোড়কের নকশার আদলে বড়দিনের বিস্কুট তৈরি করে।

* ডাচ সান্তা : ডাচ লোককাহিনির সেন্ট নিকোলাসের গল্প থেকেই সান্তা ক্লজের কাহিনি এসেছে। সেন্ট নিকোলাস বা সিন্টারক্লাস ডিসেম্বরের ৬ তারিখে উপহার সামগ্রী বিতরণ করতো।

* পরগাছা চুম্বন : পরগাছার নিচে চুম্বনের প্রথাটি এসেছে স্ক্যান্ডিনেভিয়ার প্রাচীন নর্স পৌরাণিক কাহিনির প্রেমের দেবী ফ্রিগা থেকে। সে এই পরগাছাটির দ্বারা তার ছেলেকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছিল।

* দ্য বিটলস: ব্যান্ড দল দ্য বিটলস ১৯৬৩, ৬৫ এবং ৬৭ সালে সর্বাধিক বার ক্রিসমাস সংগীত পরিবেশনে প্রথম স্থান অর্জন করে রেকর্ড করেছে।

* আলোকিত ক্রিসমাস ট্রি: আমেরিকার বিজ্ঞানী এডওয়ার্ড জনসন ১৯৮২ সালে আলোযুক্ত বৈদ্যুতিক ক্রিসমাস গাছ উদ্ভাবন করেন।

* প্রথমদিককার ক্রিসমাস ট্রি:  এটির উৎপত্তি মূলত প্যাগান প্রথার আমলে। কিন্তু একটি জার্মান পুস্তকের উদ্ধৃতি অনুযায়ী এটির উৎপত্তি ১৫৭০ সালে।

* বড়দিনের চলচ্চিত্র : এখন পর্যন্ত সর্বাধিক অর্থ আয় করা বড়দিনের চলচ্চিত্রটি হলো ২০০০ সালের হাউ দ্য গ্রিন্স স্টোল ক্রিসমাস। এটি সর্বোচ্চ ১৭৫ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে।

* আইসল্যান্ডে সান্তা : আইসল্যান্ডে ১৩ জন সান্তা রয়েছে এবং তারা প্রত্যেকেই শিশুদেরকে একটি করে উপহার প্রদান করে। ডিসেম্বরের ১২ তারিখ থেকে তারা একে একে পর্বত থেকে নেমে আসে। তাদের প্রত্যেকের একেকটি নাম আছে।

* রেইনডিয়ার রুডলফ : রুডলফ নামক লাল নাকযুক্ত রেইনডিয়ার প্রথম ব্যবহৃত হয় ১৯৩৮ সালে একটি মার্কিন ফার্মের বড়দিনের প্রচার কাজে।

* চকোলেট মুদ্রা : সোনালী বর্ণের চকোলেট মুদ্রাগুলো সেন্ট নিকোলাসকে স্মরণ করিয়ে দেয়। সে গরিবদেরকে স্বর্ণমুদ্রা ভর্তি থলে উপহার দিত বলে প্রচলিত আছে।

* প্রথম বড়দিন : ব্রিটেনের ইয়র্কে সর্বপ্রথম ৫২১ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে বড়দিন উৎসব পালিত হয় বলে ধারণা করা হয়।

* বড়দিনের বোনাসের আইন : গ্রিস, ইতালি, স্পেন এবং জার্মানিতে বড়দিন উপলক্ষে এক মাসের বেতনের সমান বোনাস দেওয়ার আইন রয়েছে।

* চেক বড়দিন : চেক প্রজাতন্ত্রের বড়দিনে স্যুপ, ডিম এবং মাছ দিয়ে নৈশভোজের আয়োজন করা হয়। খাবার টেবিলে লোকসংখ্যা অবশ্যই জোড় সংখ্যক হবে অন্যথায় পরবর্তী বছরে অতিরিক্ত ব্যক্তিটির মৃত্যু হবে বলে মনে করা হয়।

* বড়দিনের অন্যান্য নাম : প্রাচীনকাল থেকেই বড়দিনকে বিভিন্ন নামে সম্বোধন করা হয়। মিডউইন্টার, নেটিভিটি, ইয়ুল ছাড়াও বড়দিনের আরো অনেক নাম রয়েছে।

* বড়দিনের বিস্কুট উদ্ভাবন : ১৮৪৫ থেকে ১৮৫০ এর মধ্যবর্তী কোনো সময়ে লন্ডনের একজন মিষ্টি প্রস্তুতকারী সর্বপ্রথম বড়দিনের বিস্কুট তৈরি করে।

তথ্যসূত্র : মিরর

পড়ুন : 



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ ডিসেম্বর ২০১৮/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়