ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

মস্তিষ্ক উন্নত করার পাঁচ উপায়

আহমেদ শরীফ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০৪, ৩ এপ্রিল ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মস্তিষ্ক উন্নত করার পাঁচ উপায়

প্রতীকী ছবি

আহমেদ শরীফ : আমাদের মস্তিষ্ক কোষ বা নিউরোন নতুন করে সৃষ্টি হওয়া ও তা সঠিকভাবে কাজ করার প্রক্রিয়াটি নিউরোজেনেসিস নামে পরিচিত। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে, আঘাত বা ট্রমার কারণে, অতি মাত্রায় অ্যালকোহল পানের মতো বদভ্যাসে মস্তিষ্ক কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলেই আমরা জেনে আসছি।

তবে সম্প্রতি গবেষকরা ‘নিউরোপ্লাস্টিসিটি’ নামে এক শব্দের মাধ্যমে আশার কথা শোনাচ্ছেন। তারা বলছেন, প্রকৃতিগতভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত মস্তিষ্ককোষ আবার গড়ে উঠতে পারে। তবে মস্তিষ্কের ক্ষতিগ্রস্ত কোষ পুনর্জন্মের জন্য বেশ কিছু ভালো অভ্যাস রপ্ত করতে হবে।

আমাদের মস্তিষ্কের ওজন দেড় কেজির মতো। শরীরের ২০ শতাংশের মতো শক্তি শুষে নেয় এই মস্তিষ্ক। খাওয়া, পড়া এমনকি অন্যদের সঙ্গে কথা বলার মতো সব কাজের সময়ই মস্তিষ্কে পরিবর্তন আসে। প্রতিদিন যদি মানসিক চাপ ও হতাশায় কাটে  আপনার, তাহলে মস্তিষ্কের স্মৃতি ধারণকারী অংশ হিপো ক্যামপাস ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই আপনার মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখতে ও মস্তিষ্ককোষ নতুনভাবে গড়ে তোলার জন্য নিচের কিছু অভ্যাস রপ্ত করা জরুরি-

শারীরিক ব্যায়াম : শারীরিক ব্যায়ামের সঙ্গে নিউরোজেনেসিস বা মস্তিষ্ক কোষ সৃষ্টির ব্যাপারটি গভীরভাবে জড়িত। ব্যায়াম করার ফলে মস্তিস্কে অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়ে। ব্যায়ামের পর অক্সিজেন পূর্ণ আরো ভালো রক্ত মস্তিষ্কে প্রবাহিত হয়। এতে এন্ডোরফিন বেশি উৎপন্ন হয়। এন্ডোরফিন আমাদের মেজাজ ভালো রাখে, এতে করে মানসিক চাপ মোকাবেলা করতে পারি আমরা। ব্যায়ামের কারণে নার্ভাস স্ট্রাকচারও উন্নত হয়। তাই মানসিক চাপ দূর করতে নাচা, হাঁটা, সাইক্লিং করার মতো যেকোনো ব্যায়াম করে নিউরোজেনেসিসে অবদান রাখতে পারি আমরা।

প্রার্থনা : আমাদের মস্তিষ্কে প্রার্থনার ভালো প্রভাব পড়ে তাতে সন্দেহ নেই। কারণ এর মাধ্যমে আমরা সুশৃঙ্খল জীবনযাপন করার পথ খুঁজে পাই। এতে মানসিক চাপ ও হতাশাও কমে।

খাবার : মস্তিষ্ক ঠিক রাখতে হলে সব সময় কম ক্যালরিপূর্ণ খাবার খাওয়া জরুরি। তবে পাশাপাশি এটাও খেয়াল রাখতে হবে, যেন বিভিন্ন ভারসাম্য পূর্ণ খাবার খাওয়া হয়, যাতে করে পুষ্টিহীনতা দেখা না দেয়। মনে রাখতে হবে আমাদের মস্তিষ্কের জন্য শক্তি প্রয়োজন। তাই সকালে মিষ্টি জাতীয় কিছু খাওয়া উচিত। এক্ষেত্রে সকালে এক টুকরো ফল বা ডার্ক চকোলেট, এক চামচ মধু বা এক কাপ ওটমিল খেতে পারেন আপনি। স্যাচুরেটেড খাবার খাওয়া মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতির কারণ। নিউরোজেনেসিসের জন্য ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ মাছ বা সে জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত।

যৌনতা : মস্তিষ্কের কোষ তৈরি ও মস্তিষ্কের গঠনে যৌনতা প্রাকৃতিক ইঞ্জিনের মতো কাজ করে। এর কারণ হলো যৌনতা আমাদের শুধু টেনশন বা মানসিক চাপই দূর করে না, এর মাধ্যমে শরীরে এক ধরনের চার্জ উৎপন্ন হয়, যা মস্তিষ্কের স্মৃতিধারণ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। এছাড়া সহবাসের ফলে সৃষ্ট সেরোটিন, ডোপামাইন বা অক্সিটোসিন নতুন মস্তিষ্ক কোষ তৈরিতে সহায়তা করে।

সুস্থ মন, শক্তিশালী মস্তিষ্ক : মন যদি সুস্থ থাকে, তাহলে মস্তিষ্ক শক্তিশালী হবে। তাই মনকে সুন্দর সুস্থ রাখতে হলে প্রতিদিন কাজের মধ্যেই থাকা উচিত। যেমন- প্রতিদিন বই, পত্রিকা পড়া  আপনার মস্তিষ্ককে সক্রিয় রাখবে। বিদেশি কোনো ভাষা শেখা, কোনো মিউজিকাল ইনস্ট্রুমেন্ট বাজানো, মন উন্মুক্ত করা, সত্য অনুসন্ধানে কাজ করা, আশেপাশে যা ঘটছে তা খেয়াল রাখা, সামাজিকতা, ভ্রমণ, শখের কোনো কাজ করা, এসব কিছু আপনার মস্তিষ্ককে আরো উন্নত করবে।

তথ্যসূত্র: ইনস্টিকস



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩ এপ্রিল ২০১৯/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়