ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

‘গণতন্ত্র ফেরাতে গণজাগরণ চাই’

এসকে রেজা পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৫৩, ৫ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘গণতন্ত্র ফেরাতে গণজাগরণ চাই’

জ‌্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : নতুন বছরে জনগণের মাঝে গণজাগরণ তৈরি করে দেশে ‘গণতন্ত্র ফেরানো’র বিষয়ে আশাবাদ ব‌্যক্ত করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আন্দোলনের মাধ‌্যমে এর প্রমাণ রাখতে চান বিএনপির এই নেতা।

শুক্রবার সন্ধ‌্যায় সুপ্রিম কোর্টে শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে ‘৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত‌্যা দিবস’ উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এই আশাবাদ ব‌্যক্ত করেন। ‘জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম’ এর আয়োজন করে। এতে আইনজীবীরা কালো পতাকা প্রদর্শন করেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট শক্তির সঙ্গে গণতান্ত্রিক শক্তির লড়াইটা এত সহজ লড়াই নয়। অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়, সেই ত্যাগ আমরা করেছি। এখন জোট বাঁধতে হবে, আমাদের জেগে উঠতে হবে। মানুষকে জাগিয়ে তুলে হবে এবং মানুষকে জাগিয়ে তোলার মধ্য দিয়ে গণজাগরণ সৃষ্টি করতে হবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে।’

নতুন বছরে আন্দোলনের মাধ‌্যমে বিএনপি জয়ী হবে বলেও আশাবাদ ব‌্যক্ত করেন মির্জা ফখরুল।

“আমি দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই, ২০১৮ হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়ার বছর, বিএনপির বছর। ২০১৮ সাল হচ্ছে জনগণের বছর, গণতন্ত্রের বছর। সেটা ইনশাল্লাহ আমরা প্রমাণ করব আন্দোলনের মধ্য দিয়ে, বিজয়ের মধ্য দিয়ে।”

দেশের মানুষকে আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করতে দলের নেতাকর্মীদের গ্রামে-গঞ্জে ছড়িয়ে পড়ার আহ্বান জানান ফখরুল।

বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি না দেওয়ার সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা নয়াপল্টনে কর্মসূচি করার কথা বললেও পুলিশ যানজটের কথা বলে অনুমতি দেয়নি। মজার বিষয়, আওয়ামী লীগকে ঢাকায় দুই জায়গায় সমাবেশ করতে দিয়েছে। আমি আসার সময় দেখলাম গুলশান, বনানীর পুরো রাস্তায় যানজট। এটা জায়েজ।’

৫ জানুয়ারিকে ‘কলঙ্কের দিন’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আজ কোন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে যে তাদের পুলিশ-র‌্যাব-বন্দুক-পিস্তলের সহায়তা নিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে হচ্ছে নির্বাচন না দিয়ে। নির্বাচন দিলে পরাজয় অবশ্যম্ভাবী হবে, ভরাডুবি হবে তাদের।’

তিনি বলেন, ‘প্রায় এক যুগ হতে চলেছে। আমরা একটা ফ্যাসিবাদের ফ্যাসিস্ট সরকারের অধীনে বাস করছি। আমাদের রাষ্ট্র, প্রশাসন, আইন-বিচার- সবকিছুই ফ্যাসিস্টরা পরিচালিত করছে। পোশাকে গণতন্ত্র লেবাসের ছাপ দেওয়া আছে, কিন্তু ভেতরে একদলীয় শাসন।’

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার পদত্যাগের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সুপ্রিম কোর্টকে বলা হয় সবচেয়ে পবিত্র জায়গা, সবচেয়ে নির্ভরশীল জায়গা। যখন আমি অত্যাচারিত নিপীড়িত হচ্ছি তখন সেখানে গেলে আমি আশ্রয় পাব। সেই জায়গার কী হাল হয়েছে? তার প্রধানকে কীভাবে চলে যেতে হয়েছে? পৃথিবীতে এই ধরনের নজির কম আছে।

বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর সরকারের নিপীড়ন-নির্যাতন, মিথ্যা মামলা এবং ৭৪৪ জন ‘গুম’ হওয়ার পরিসংখ্যানও তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, এই রকম অচলায়তন থেকে মুক্তি সহজে হয় না, হবে না, ইতিহাসে নেই।’

“এখন পর্যন্ত আমাদের বাংলাদেশে আমাদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ৭৮ হাজার মামলা হয়েছে, ৭ লাখ ৩৮ জন আসামি হয়েছে। আমাদের নেতা-কর্মীরা নিহত হয়েছে। ৭৪৪ জনের মতো ডিজঅ্যাপিয়ার (গুম) হয়েছে। বিরোধী আইনজীবীদের এমন কেউ নেই যে তাদের বিরুদ্ধে মামলা নেই”, বলেন মির্জা ফখরুল।

জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দীন খোকনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বোরহান উদ্দিন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/৫ জানুয়ারি ২০১৮/রেজা/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়