ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

‘মার্সেল থেকে লাখ টাকা পাওয়ার সংবাদে তাজ্জব হয়ে যাই’

জাকির হুসাইন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩০, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘মার্সেল থেকে লাখ টাকা পাওয়ার সংবাদে তাজ্জব হয়ে যাই’

মো. ওবায়দুর মাতুব্বরের হাতে মার্সেলের লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার ও অন্যান্য পণ্য তুলে দেওয়া হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘পরিবারের প্রয়োজনে মার্সেল ব্র্যান্ডের একটি ফ্রিজ কিনি। ফ্রিজ নিয়ে বাসায় গিয়ে চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এমন সময় হঠাৎ শোরুম থেকে ফোন করে জানানো হয়, মার্সেল ফ্রিজ কিনে আমরা লাখ টাকা পেয়েছি। আগে থেকে এ ব্যাপারে কিছু জানা ছিল না। ফ্রিজ কেনার সময় কেউ বলেনও নাই। হঠাৎ লাখ টাকা পাওয়ার সংবাদ শুনে তাজ্জব হয়ে যাই।’

কথাগুলো বলছিলেন মো. ওবায়দুর মাতুব্বর। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি মাদারীপুরের টেকেরহাট থেকে একটি মার্সেল ফ্রিজ কিনে ১ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পান তিনি। এ নিয়ে কথা হয় ওবায়দুর মাতুব্বরের সঙ্গে।

রাইজিংবিডিকে তিনি বলেন, ‘কী ভাগ্য আমার! এ বিষয়ে কিছুই জানতাম না। শুধু প্রয়োজন বলে ফ্রিজ কেনা। আর তাতেই লাখ টাকা উপহার পেলাম। এর চেয়ে খুশির খবর আমার জীবনে এখন পর্যন্ত আর আসেনি। মহাখুশি আমি। শুধু আমি না। আমার মা, স্ত্রী, ভাবি, ভাই-বোনসহ সব আত্মীয়-স্বজন অনেক খুশি হয়েছে।’

মো. ওবায়দুর মাতুব্বরের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তার বাড়ি মাদারীপুরের রাজৈর থানার হোসেনপুরের সত্যবতী গ্রামে। ছয় বছর ধরে ঢাকার কারওয়ান বাজারে একটি কাঁচামালের দোকানে সেলসম্যান হিসেবে কাজ করেন তিনি। ছয় ভাই এবং পাঁচ বোনের মধ্যে সবার ছোট ওবায়দুর মাতুব্বর। মা বেঁচে থাকলেও বাবা অনেক আগে মারা গেছেন। ১০ বছর আগে বিয়ে করেছেন তিনি। কিন্তু এখনো তাদের ঘর আলো করে কোনো সন্তান আসেনি। মাকে নিয়ে তার স্ত্রী গ্রামের বাড়িতে অন্যদের সঙ্গে থাকেন।

ওবায়দুর মাতুব্বর বলেন, ‘বাড়িতে একটা ফ্রিজ খুবই দরকার ছিল। অনেক দিন ধরে কিনব বলে ভাবছি। কিন্তু ব্যাটে-বলে মিলছিল না। সম্প্রতি ছুটি নিয়ে বাড়িতে গেলে এবার ফ্রিজ না কিনে ঢাকা যেতে দেওয়া হবে না বলে বায়না ধরে সবাই। এদিকে আমার এক ভাই মালদ্বীপে কাজ করে। তার স্ত্রীরও জোরালো দাবি, এবার যেকোনো পরিবারে একটা ফ্রিজ কিনতেই হবে। সবার দাবির কারণে আমি নিজেও ফ্রিজ কেনার পরিকল্পনা করি। তবে কোন কোম্পানির ফ্রিজ কিনব, তা ঠিক করা ছিল না। মনে মনে ভেবেছিলাম, টাকা নিয়ে আগে বাজারে যাই। পরে দেখেশুনে যেটা ভালো মনে হয়, সবার যেটা পছন্দ হয়, সেটাই কিনব।’

তিনি জানান, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি মা, ভাবি, বোন ও স্ত্রীকে সাথে নিয়ে মাদারীপুরের টেকেরহাট যান। বেশ কয়েকটি কোম্পানির শোরুমে ফ্রিজ দেখলেও তাদের কারোই তা পছন্দ হয় না। পরে তারা মার্সেলের শোরুম মেসার্স ন্যাশনাল ট্রেডার্সে যান। সেখানে গিয়ে মাল্টি কালারের সুন্দর সুন্দর অনেক ফ্রিজ দেখে মুগ্ধ হন। মার্সেলের বাহারি ডিজাইনের ফ্রিজ ওবায়দুরের মা, স্ত্রী এবং ভাবির দৃষ্টি কাড়ে। তারা ওবায়দুরকে জানিয়ে দেন মার্সেল থেকেই ফ্রিজ কিনবেন। পরে সবাই মিলে দেখে-শুনে ১৪ সিএফটি আয়তনের একটি ফ্রিজ পছন্দ করেন। স্টাবিলাইজারসহ যার দাম ২৮ হাজার টাকা। নগদ টাকা পরিশোধ করে বহুল কাঙ্ক্ষিত ফ্রিজটি নিয়ে তারা বাড়ি চলে যান।

ওবায়দুর মাতুব্বর বলেন, ‘পছন্দের ফ্রিজটি কেনায় সবাই খুব খুশি। তাদের খুশিতে আমি নিজেও খুশি ছিলাম। পরে বাড়িতে গিয়ে ফ্রিজ বসানোর কাজ করছিলাম। এমন সময় শোরুমের ম্যানেজার আনন্দ দাদা ফোন দেন। কী ব্যাপার, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভালো খবর আছে। বিষয়টা কী, বুঝিয়ে বলতে বললে শোরুমে যেতে বলে ফোন কেটে দেন। সাথে সাথে আমি শোরুমে চলে যাই। সেখানে গিয়ে জানতে পারি, আমরা যে ফ্রিজটি কিনেছিলাম, তাতে অফার ছিল। সেই অফারেই ১ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পেয়েছি। এ খবর শুনে আমি অবাক হয়ে যাই। কারণ, এ বিষয়ে আগে-পিছে আমার কিছুই জানা ছিল না। যখন নিশ্চিত হলাম যে আসলেই আমি ১ লাখ টাকা উপহার পেয়েছি, তখন আমি খুশিতে আত্মহারা হয়ে যাই। সাথে সাথে বাড়িতেসহ বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুমহলে বিষয়টি জানালে সবাই খুব খুশি হয়।’

মার্সেলের ডিলার শোরুম মেসার্স ন্যাশনাল ট্রেডার্সের ম্যানেজার আনন্দ বলেন, ওবায়দুর মাতুব্বর ১ লাখ টাকা পাওয়ায় আমারও খুব ভালো লাগছে। কারণ, আমাদের শোরুম থেকে এর আগে ১০ হাজার টাকার বেশি কোনো কাস্টমার পাননি। তিনি লাখ টাকা পাওয়ায় কোম্পানির পাশাপাশি আমাদের শোরুমের প্রচার-প্রচারণা কয়েক গুণ বেড়েছে। বর্তমানে বিক্রিও আগের থেকে অনেক বেশি হচ্ছে।’

তিনি জানান, টেকেরহাটে প্রতি বুধবার বিশাল বাজার বসে। সে সময় অনেক ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম হয়। তাই বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বড় অনুষ্ঠান করে ওবায়দুর মাতুব্বরের হাতে লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচারে কেনা পণ্য তুলে দেওয়া হয়েছে। ১ লাখ টাকা দিয়ে তিনি আরো তিনটি ফ্রিজ, তিনটি ব্লেন্ডার, রাইসকুকার, ইলেকট্রিক কেটলি এবং আয়রনসহ মোট নয়টি পণ্য নিয়েছেন।

উল্লেখ্য, ক্রেতাদের দোরগোড়ায় অনলাইনে দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা দিতে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালু করেছে মার্সেল। এই কার্যক্রমে ক্রেতাদের অংশগ্রহণকে উদ্বুদ্ধ করতে প্রতিদিন দেওয়া হচ্ছে নিশ্চিত ক্যাশ ভাউচার। মার্সেল শোরুম থেকে ১০ হাজার টাকা বা তার বেশি মূল্যের পণ্য কিনে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন করে সর্বনিম্ন ৩০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পাচ্ছেন ক্রেতারা। ক্যাশ ভাউচার পাওয়ার এই সুযোগ থাকবে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/অগাস্টিন সুজন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়