ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

চাঁদ সম্পর্কে আশ্চর্যজনক তথ্য (শেষ পর্ব)

খালেদ সাইফুল্লাহ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৩৩, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
চাঁদ সম্পর্কে আশ্চর্যজনক তথ্য (শেষ পর্ব)

প্রতীকী ছবি

খালেদ সাইফুল্লাহ : পৃথিবীর একমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহ চাঁদ। বিজ্ঞানীদের ধারণা প্রায় সাড়ে চার বিলিয়ন বছর আগে এটির সৃষ্টি। একমাত্র উপগ্রহটি সম্পর্কে এই গ্রহের মানুষের কৌতুহলের শেষ নেই। প্রথম থেকেই পৃথিবীর এই উপগ্রহটি শিল্পী, মহাকাশবিদ ও বিজ্ঞানীদেরকে অভিভূত করেছে। ১৯৭২ সালে প্রথম চাঁদের মাটিতে পা রাখেন নীল আর্মস্ট্রং। তারপর থেকে চাঁদ সম্পর্কে দিন দিন নানা আশ্চর্যজনক তথ্য উম্মোচিত হচ্ছে। পৃথিবীর ওপর এর প্রভাব, বিভিন্ন সংস্কৃতিতে এর প্রতীকী ব্যবহার এবং বৈজ্ঞানিক গুরুত্ব অনস্বীকার্য।

চাঁদ সম্পর্কে ১৯টি আশ্চর্যজনক বিষয় নিয়ে ২ পর্বের প্রতিবেদনের প্রথম পর্বে ৯টি বিষয় তুলে ধরা হয়েছিল। আজ শেষ পর্বে আরো ১০টি বিষয় তুলে ধরা হলো।

* চাঁদ সৌরজগতের পঞ্চম বৃহত্তম উপগ্রহ : সৌরজগতে বিভিন্ন গ্রহকে কেন্দ্র করে ১৫০টিরও বেশি উপগ্রহ আবর্তন করছে। এর মধ্যে পৃথিবীর উপগ্রহটি পঞ্চম বৃহত্তম। সৌরজগতের সর্ববৃহৎ উপগ্রহটি হলো গ্যানিমেড, যেটি শনি গ্রহের ৭৯টি উপগ্রহের মধ্যে একটি।

* চাঁদে পদার্পণের ভুল ব্যাখ্যা : নিল আর্মস্ট্রং ১৯৬৯ সালে ২০ জুলাই সর্বপ্রথম চন্দ্রপৃষ্ঠে পা রাখার গৌরব অর্জন করেন। তখন তিনি বলেন, ‘একজন মানুষের এই ক্ষুদ্র পদক্ষেপ, সমগ্র মানবজাতির জন্য এক বিশাল আগ্রগতি।’ তবে বিখ্যাত মার্কিন বিজ্ঞানী নীল ডিগ্রাস টাইসন জ্বালানীর হিসাব এবং কমন সেন্স যুক্তির মাধ্যমে চাঁদে মানুষের পদার্পণের বিষয়টিকে সম্পূর্ণ প্রতারণা বলে অভিহিত করেছিলেন।

* চন্দ্রপৃষ্ঠে মানবসৃষ্ট বিভিন্ন জিনিস ছড়ানো হয়েছে : চাঁদের মাটিতে পা রাখা অ্যাপোলো ১১-এর নভোচারীরা আমেরিকার পতাকা উত্তোলনের পাশাপাশি অ্যাপোলো ১-এর দুর্ঘটনায় নিহত নভোচারীদের সম্মানার্থে পোশাকের একটি ব্যাজ চন্দ্রপৃষ্ঠে ফেলে এবং সেই সঙ্গে একটি ফলক। ফলকে লেখা ছিল, ‘পৃথিবী নামক গ্রহ থেকে চাঁদের এই স্থানে সর্বপ্রথম মানুষ পা রাখে। ১৯৬৯ সালে জুলাই মাসে আমরা সকল মানুষের জন্য শান্তিতে আসি।’

দ্য আটলান্টিকের রিপোর্ট অনুযায়ী, তারপর থেকে প্রায় ৪ লক্ষ পাউন্ড বস্তু চাঁদের মাটিতে ছড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মনুষ্যবিহীন মহাকাশযান, উর্দ্ধারোহন ও অবতরণ স্টেশন, ক্ষুদ্র চন্দ্রযান, গলফ বল এবং অ্যাপোলো-১৬ মিশনের চার্লস ডিউকের একটি পারিবারিক ছবি।

* চাঁদ থেকে পৃথিবীতে এসেছে ৮৪২ পাউন্ড জিনিস : নাসার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯৬৯ সাল থেকে ১৯৭২ সালের মধ্যে ৬ বারে চাঁদ থেকে চন্দ্রশিলা, চাঁদের কেন্দ্রীয় নমুনা, নুড়ি এবং বালির প্রায় ২২০০ ভিন্ন ভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে আনা হয়। এই নমুনাসমূহ চাঁদের ৬টি ভিন্ন ভিন্ন গবেষণাস্থল থেকে আনা হয়।

* সর্বপ্রথম চাঁদে পদার্পণ সত্ত্বেও আমেরিকা চাঁদের কোনো অঞ্চলের মালিক নয় : মহাকাশ আইন তৈরির প্রক্রিয়ায় পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৯৬০ সালে ‘ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্পেস ল’ প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি মহাকাশ চুক্তি তৈরি করে, যেটি ১৯৬৭ সালে কার্যকর হয়। এই চুক্তি যেকোনো জাতিকে কোনো গ্রহ, উপগ্রহ কিংবা নক্ষত্রের মালিক হওয়া থেকে নিষিদ্ধ করে। এটি আরো বলে যে, সকল মহাকাশ যাত্রা হবে শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে।

* ২১ শতকে ২২৮টি চন্দ্রগ্রহণ হবে : ২১ শতক জুড়ে যতগুলো চন্দ্রগ্রহণ হবে নাসা ইতিমধ্যেই সেগুলোকে গণনা করে ফেলেছে। ২০১৯ সালে একটি পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ এবং একটি আংশিক চন্দ্রগ্রহণ হবে। এছাড়া ২০২০ সালে ৪টি চন্দ্রগ্রহণ হবে।

* চাঁদের ব্যাস চীনের প্রস্থের সমান : চাঁদের ব্যাস ২১৫৯ মাইল, কিলোমিটার স্কেলে যা ৩৪৭৬ কি.মি.। যেখানে চীনের প্রস্থ ২১৯৩ মাইল বা ৩৫৩০ কি.মি.। অর্থাৎ চাঁদের ব্যাস চীনের প্রস্থের প্রায় সমান।

* চাঁদের অন্ধকার অংশে প্রথমবারের মতো চীনের সফল মিশন : গত বছরের ৮ ডিসেম্বর চীনের জাতীয় মহাকাশ সংস্থা চাঁদের দক্ষিণ মেরুন আইকন বেসিনের উদ্দেশ্যে চাং’ই ৪ মিশন শুরু করে। যেটি চাঁদের পৃথিবীর বিপরীত দিকের অংশে অবতরণ করেছে। এই মিশনের উদ্দেশ্যসমূহের মধ্যে রয়েছে- চাঁদের ভূতত্ত্ব সম্পর্কে জানা, বরফের খোঁজ করা, বেতার যোগাযোগের পরিবেশ তৈরি করা প্রভৃতি।

চাঁদের অদেখা অংশে চীনের সফল অবতরণ বৈশ্বিক প্রেক্ষিতে চীনের বৈজ্ঞানিক, প্রযুক্তিগত, শিক্ষাগত এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে প্রভূত সফলতার উদাহরণ।

* চাঁদের কালো দাগগুলোকে বলা হয় ‘মারিয়া’ : ল্যাটিন শব্দ মারিয়া’র অর্থ সাগর। প্রাচীন মহাকাশবিদরা বিশ্বাস করত, চাঁদের কালো দাগগুলো হলো সেখানকার জলভাগের চিহ্ন। কিন্তু এগুলো মূলত একীভূত লাভার সমষ্টি, যেগুলো কঠিন হয়ে ব্যাসল্টে পরিণত হয়েছে, যা একপ্রকার কালো লবণ।

* চাঁদের ২৩ ফুট প্রশস্ত প্রতিরূপ তৈরি করা হয়েছে : ‘মিউজিয়াম অব দ্য মুন’ হলো ব্রিটিশ শিল্পী লুক জেরামের তৈরি একটি ভ্রাম্যমাণ স্থাপনা। নাসার চাঁদ পরিক্রমনকারী ক্যামেরা থেকে প্রাপ্ত স্থিরচিত্রগুলো ব্যবহার করে এই নকল চাঁদ তৈরি করা হয়েছে।

তথ্যসূত্র : বিজনেস ইনসাইডার

পড়ুন :



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়