ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

মার্সেল ফ্রিজে লাখ টাকার ভাউচার পেয়ে আবেগাপ্লুত ইজিবাইক চালক

অগাস্টিন সুজন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৫৩, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মার্সেল ফ্রিজে লাখ টাকার ভাউচার পেয়ে আবেগাপ্লুত ইজিবাইক চালক

মোহাম্মদ নাসির সরদারের হাতে ১ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার এবং অন্যান্য পণ্য তুলে দেওয়া হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : মোহাম্মদ নাসির সরদার। পেশায় ইজিবাইক চালক। অনেক দিন ধরে তার স্বপ্ন ছিল একটি ফ্রিজ কেনার। কিন্তু ইজিবাইক চালিয়ে সংসারের খরচ মেটানোর পর সে স্বপ্ন পূরণ করা নাসিরের পক্ষে সহজ ছিল না। তাই একটু একটু করে টাকা জমাতে থাকেন তিনি। দীর্ঘদিনের তিল তিল করে সঞ্চয় করা টাকায় একটি মার্সেল ফ্রিজ কিনে তিনি পেয়েছেন ১ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার। যা দিয়ে পূরণ হয়েছে তার আরো অনেকগুলো স্বপ্ন। মার্সেলের সৌজন্যে স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় আবেগাপ্লুত নাসির সরদার।

নাসির সরদারের বাড়ি মাদারীপুর জেলার মোস্তফাপুরের চতুর পাড়া গ্রামে। বাবা-মা, ২ বোন আর ৩ ভাইয়ের সংসারে সবার বড় নাসির। ভ্যানচালক বাবার একার আয়ে সংসার চালানো সম্ভব ছিল না। তাই অল্প বয়সেই পরিবারের হাল ধরতে হয় তাকে। কঠোর পরিশ্রমের টাকায় নিজের বোনদের বিয়ে দেন। ছোট দুই ভাইয়ের পড়াশুনারও খরচ যোগান।

অল্প অল্প সঞ্চয় করে ঘরের জন্য বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স পণ্য কেনার পরিকল্পনা করেন। প্রথমেই একটি ফ্রিজ কিনবেন বলে ঠিক করেন। তবে কোন ব্র্যান্ডের ফ্রিজ ভালো সে সম্পর্কে ইজিবাইক চালক নাসিরের ধারণা ছিল না। তিনি বন্ধু-বান্ধব এবং পরিচিতজনদের কাছে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেন। তাদের অনেকেই দেশীয় ব্র্যান্ড মার্সেলের ফ্রিজ কিনতে পরামর্শ দেন। কারণ, বিশ্বমানের মার্সেল পণ্য দামে সাশ্রয়ী। আবার মার্সেল ফ্রিজের কম্প্রেসরে রয়েছে ১২ বছরের গ্যারান্টি। সবার কথা শুনে এবং নিজের বিচারবুদ্ধি খাটিয়ে মার্সেল ফ্রিজ কেনার সিদ্ধান্ত নেন নাসির সরদার।

সে অনুযায়ী গত ১৩ ফেব্রুয়ারি মোস্তফাপুর বাজারে মার্সেলের এক্সক্লুসিভ ডিলার মেসার্স জমাদ্দার ইলেকট্রনিক্সে যান নাসির সরদার। নানা রকম আকর্ষণীয় ডিজাইন ও কালারের ফ্রিজ থেকে বড় আয়তনের একটি ফ্রিজ পছন্দ করেন তার ছোট ভাই। নগদ ৩১ হাজার ৯০০ টাকায় ফ্রিজটি কিনে মার্সেলের ডিজিটাল ক্যাম্পেইনের সিজন-৪ এ নিজের মোবাইল নাম্বার দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করেন নাসির সরদার। এর পরপরই পেয়ে যান ১ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচারের মেসেজ।

লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পাওয়ার মেসেজ পেয়ে খুশিতে আত্মহারা হয়ে যান নাসির সরদার। আনন্দে তার চোখে পানি চলে আসে। প্রথমেই মাকে এই খুশির সংবাদটা জানান তিনি। পরে আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের জানালে এলাকায় আলোড়ন পড়ে যায়। অনেকেই নাসির সরদারের বাড়িতে এসে ভিড় করেন। ওই রাতে আনন্দের আতিশয্যে ঘুমাতেই পারেননি নাসির সরদার।

পরের দিন মার্সেলের পক্ষ থেকে ফোন করে তার কাছে জানতে চাওয়া হয় লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার দিয়ে তিনি কী কী পণ্য কিনতে চান? নাসির সরদার জানান, তিনি তিনটি ফ্রিজ, তিনটি ব্লেন্ডার এবং একটি গ্যাস স্টোভ নিতে চান। ফ্রিজগুলো তিনি তার দুই বোন এবং এক বন্ধুকে উপহার দেবেন বলে জানান। ব্লেন্ডারের দুটি দুই বোনকে দিয়ে বাকি পণ্য দুটি নিজেরা ব্যবহার করবেন।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নাসির সরদারের কাছে লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার এবং সেই টাকায় কেনা পণ্য হস্তান্তর করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মাদারীপুর সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মো. কামরুজ্জামান, মোস্তফাপুর বণিক সমিতির সভাপতি মো. সোহরাব হোসেন খান, মার্সেলের ডেপুটি ডিরেক্টর (মার্কেটিং) নুরুল ইসলাম (রুবেল), এরিয়া ম্যানেজার মো. রানা তালুকদার, মেসার্স জমাদ্দার ইলেকট্রনিক্সের স্বত্বাধিকারী সাইদুর রহমান সাইদসহ অনেকেই।

 

নাসির সরদারকে নিয়ে ব্যান্ড পার্টিসহ পিকআপে করে বিভিন্ন এলাকায় আনন্দ মিছিল

ক্যাশ ভাউচার ও অন্যান্য পণ্য গ্রহণ করে নাসির সরদার মার্সেল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান। বিশেষ করে সাশ্রয়ী দামে উচ্চ মানের পণ্য বাজারজাত এবং ক্রেতাদের জন্য ডিজিটাল ক্যাম্পেইন চালানোয় তিনি মার্সেলের প্রশংসা করেন।

পরে নাসির সরদারকে ফুলের মালা পরিয়ে ব্যান্ড পার্টিসহ পিকআপে করে মোস্তফাপুর, ভুরঘাটাসহ বিভিন্ন এলাকায় আনন্দ মিছিল করা হয়। বিষয়টি স্থানীয় জনগণের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে। মার্সেল ফ্রিজ কিনে লাখ টাকা পাওয়ার সংবাদ শুনে তারা আশ্চর্য হন। অনেকেই দেশীয় এই ব্র্যান্ডের পণ্য কিনবেন বলে জানান।

মার্সেল কর্তৃপক্ষ জানায়, এখন চলছে ডিজিটাল ক্যাম্পেইনের ৪র্থ পর্ব বা সিজন ফোর। এর আওতায় দেশের যেকোনো পরিবেশক শোরুম থেকে মার্সেল ফ্রিজ, টিভি এবং এসি কিনে রেজিস্ট্রেশন করলেই ক্রেতারা পাচ্ছেন সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার। আছে মোটরসাইকেল, এয়ার কন্ডিশনার, ল্যাপটপ, ফ্রিজ, এলইডি টিভিসহ অসংখ্য পণ্য ফ্রি পাওয়ার সুযোগ। এসব না মিললেও রয়েছে নিশ্চিত ক্যাশব্যাক। পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত এ সুযোগ থাকবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/অগাস্টিন সুজন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়