ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক

আরিফ সাওন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১২, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক

নিজস্ব প্রতিবেদক : সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার বিচারের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে সাংবাদিক সংগঠনগুলো।

আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ), বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) দুই অংশ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) দুই অংশ ও জাতীয় প্রেসক্লাবের নেতারা যৌথসভায় বসবেন। জাতীয় প্রেসক্লাবে সকাল ১১টায় এ সভা হবে। সে সভা থেকেই সাগর-রুনি হত্যার বিচারের দাবিতে পরবর্তী আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ডিআরইউ প্রাঙ্গণে সাগর-রুনি হত্যার বিচার দাবিতে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে এ তথ্য জানান সংগঠনের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা। সমাবেশে সাগর-রুনির ছেলে মেঘও উপস্থিত ছিল।

সাংবাদিক নেতারা বলেন, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের পর পাঁচ বছর পার হলেও আজও এর রহস্য উৎঘাটন হয়নি। এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে এমন কি আছে যে বিচার হচ্ছে না? এই ব্যর্থতার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত। সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী বলেন, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্তের জন্য র‌্যাব সময় চেয়েছে, আদালত সময় দিয়েছেন। কিন্তু কোনো তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পারেনি। তারা বলে, আমরা ব্যর্থ। ব্যর্থ হলে চাকরি করছেন কেন? তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি দেওয়া ৪৮ ঘণ্টা পার হয়েছে পাঁচ বছর আগে। বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, আমার প্রথম দায়িত্ব সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার করা। তথ্যমন্ত্রী তার সিটে বসার আগে বলেছিলেন, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমার চোখের পানি থামবে না। আমি জানি না, তথ্যমন্ত্রীর চোখের পানি থেমেছে কি না, তবে সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি। একের পর এক সাংবাদিক নির্যাতন হচ্ছে। সাংবাদিক হত্যা এখন সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়েছে।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শাবান মাহমুদ বলেন, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের পর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তারের কথা বলে সে সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। এখনো এ হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি। বিচারের দাবিতে আমরা সবসময় আন্দোলনে থাকব।

জাতীয় প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক ইলিয়াস খান বলেন, সে সময়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিকে খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনা হবে। কিন্তু পাঁচ বছর পার হলেও কোনো বিচার হয়নি। সাগরের মা বিচারের আশা ছেড়ে দিয়েছেন। বারবার তদন্তের জন্য র‌্যাব সময় নেয় কিন্তু প্রকৃত তথ্য দিতে পারেননি।

তিনি আরো বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের সাথে বাংলাদেশের এমন কোনো মহল জড়িত আছে, যার কারণে বিচার হচ্ছে না। সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের আগে এবং পরে সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন হয়েছে। সাংবাদিকরা কোনো কথা বলতে পারে না। সত্য কথা বলতে গেলে মামলা, হামলা, নির্যাতনের শিকার হতে হয়।

ডিআরইউর দপ্তর সম্পাদক নয়ন মুরাদ বলেন, দেশের এমন গুরুত্বপূর্ণ হত্যা মামলার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিছুই জানেন না। তবে কি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড মামলা আপনারা ডিপ ফ্রিজে ঢুকিয়ে রেখেছেন? নাকি এই মামলা নিয়ে কোনো নাড়াচাড়া করছেন না?

সাংবাদিক নেতা কাদের গণি চৌধুরী বলেন, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়া রাষ্ট্রের জন্য লজ্জার বিষয়। এ লজ্জা সরকারের, এ লজ্জা আমাদের। সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে কি?

সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন- সাংবাদিক নেতা শেখ জামাল, ডিআরইউর সহসভাপতি আবু দারদা জুবায়ের, সাংগঠনিক সম্পাদক জিলানী মিল্টন, অর্থ সম্পাদক মানিক মুন্তাসির, কার্যনির্বাহী সদস্য নুরুল ইসলাম হাসিব, ক্র্যাবের সাধারণ সম্পাক সারওয়ার আলম, নাসিমুন মিনু, কুদ্দুস আফ্রাদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক শাহীন আসাদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম মহাসচিব অমিয় ঘটক পুলক, ডিআরইউয়ের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ প্রমুখ।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ডিআরইউয়ের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা। সঞ্চালনা করেন ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদক মোরসালীন নোমানী।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/সাওন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়