ম্যাক্স হাসপাতালের ২ চিকিৎসক চাকরিচ্যুত
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম : আড়াই বছরের শিশু রাইফার মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে চিকিৎসায় অবহেলার প্রমাণ পাওয়ায় দুই চিকিৎসককে চাকরিচ্যুত করেছে চট্টগ্রামের বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
শনিবার হাসপাতালের পরিচালক ডা. লিয়াকত আলী খান দুই চিকিৎসককে চাকরিচ্যুত করার বিষয়টি রাইজিংবিডিকে নিশ্চিত করেছেন।
চাকরিচ্যুত দুই চিকিৎসক হলেন- ডা. দেবাশীষ সেন গুপ্ত ও ডা. শুভ্র দেব। এ ছাড়া অবহেলায় শিশু মৃত্যুর ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. বিধান রায় চৌধুরী ম্যাক্স হাসপাতালে নিয়োগকৃত চিকিৎসক না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। তবে ভবিষ্যতে এই শিশু বিশেষজ্ঞকে কখনো ম্যাক্স হাসপাতালে ডাকা হবে না বলেও কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।
গত ২৯ জুন রাতে দৈনিক সমকালের চট্টগ্রাম ব্যুরোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রুবেল খানের একমাত্র মেয়ে আড়াই বছরের রাইফা খান গলায় ব্যথা নিয়ে নগরীর মেহেদীবাগের ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরদিন রাতে তার মৃত্যু ঘটে।
এ ঘটনায় ‘ভুল চিকিৎসায়’ তার মৃত্যু হয়েছে অভিযোগ করে বিক্ষোভ করেন সাংবাদিকরা। ঘটনা তদন্তে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। শুক্রবার দেওয়া তদন্ত রিপোর্টে চিকিৎসকের অবহেলায় রাইফার মৃত্যু হয়েছে উল্লেখ করে তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকীর নেতৃত্বে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, রাইফার মৃত্যুর পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে রাইফার পিতা-মাতা যে অভিযোগ করেছিলেন তার সত্যতা পাওয়া গেছে। রাইফা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকে তার রোগ নির্ণয় ও ওষুধ প্রয়োগ যথাযথ থাকলেও রাইফা যখন খিচুনিতে আক্রান্ত হয় তখন চিকিৎসকের অনভিজ্ঞতা ও আন্তরিকতার অভাব পরিলক্ষিত হয়। ওই সময় সংশ্লিষ্ট নার্সদের আন্তরিকতার অভাব না থাকলেও জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলার দক্ষতা ও জ্ঞান তাদের ছিল না।
ম্যাক্স হাসপাতালে জরুরি বিভাগ থেকে ভর্তি এবং চিকিৎসা শুরুর প্রতিটি ক্ষেত্রে রাইফার অভিভাবকদের ভোগান্তি চরমে ছিল। শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. বিধান রায় চৌধুরী শিশুটিকে যথেষ্ট সময় ও মনোযোগ সহকারে পরীক্ষা করে দেখেননি। রোগ জটিলতায় বিপদকালীন সময়ে আন্তরিকতার সাথে সেবা প্রদান করেননি বলে রাইফার পিতা-মাতা যে অভিযোগ করেছেন তা সত্য বলে প্রতীয়মান হয়।
তদন্ত রিপোর্টে আরো উল্লেখ করা হয়, ম্যাক্স হাসপাতালে ভোগান্তি অনেক প্রকট, চিকিৎসক ও নার্সদের সেবা প্রদানের সমন্বয় নেই, অদক্ষ নার্স ও অনভিজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগের ফলে এই হাসপাতালে কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা সেবা পায় না রোগীরা।
রাইজিংবিডি/চট্টগ্রাম/৭ জুলাই ২০১৮/রেজাউল/সাইফুল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন