ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

নয়টি ধারা সংশোধনসহ ৭ দাবি সম্পাদক পরিষদের

আরিফ সাওন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:০৪, ১৫ অক্টোবর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নয়টি ধারা সংশোধনসহ ৭ দাবি সম্পাদক পরিষদের

নিজস্ব প্রতিবেদক : ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নয়টি ধারা সংশোধনসহ সাত দফা দাবি জানিয়েছেন সম্পাদক পরিষদ।

সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, আমরা চাই আগামী সংসদ অধিবেশনে এই আইনটি সংশোধন করে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও স্বাধীন সাংবাদিকতা নিশ্চিত করা হোক।

সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে সম্পাদক পরিষদের পক্ষে থেকে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় লিখিত বক্তব্যে মাহফুজ আনাম বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হওয়ার আগে থেকেই এই আইনটির বিভিন্ন ধারা নিয়ে আমরা প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলাম। আমরা মনে করি, এই আইনটি স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মুক্ত গণমাধ্যমের পরিপন্থী। আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিরোধী নই। আমরা চাই আগামী সংসদ অধিবেশনে এই আইনটি সংশোধন করে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও স্বাধীন সাংবাদিকতা নিশ্চিত করা হোক।

মানববন্ধনে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও স্বাধীন সাংবাদিকতা নিশ্চিতে সম্পাদক পরিষদের পক্ষ থেকে সাতটি দাবি উত্থাপন করা হয়।

দাবিগুলো হচ্ছে : সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা ও বাক স্বাধীনতা সুরক্ষার লক্ষ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩ ধারা অবশ্যই যথাযথভাবে সংশোধন করতে হবে। এসব সংশোধনী বর্তমান সংসদের শেষ অধিবেশনে আনতে হবে।

পুলিশ বা অন্য কোনো সংস্থার মাধ্যমে কোনো সংবাদ মাধ্যম প্রতিষ্ঠানে তল্লাশি চালানোর ক্ষেত্রে তাদেরকে শুধু নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু আটকে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া যাবে, কিন্তু কোনো কম্পিউটার ব্যবস্থা বন্ধ করার অনুমতি দেওয়া যাবে না। তারা শুধু তখনই প্রকাশের বিষয়বস্তু আটকাতে পারবে, যখন সংশ্লিষ্ট সংবাদ প্রতিষ্ঠানের সম্পাদকের সঙ্গে আলোচনা করে কেন ওই বিষয়বস্তু আটকে দেওয়া উচিত , সে বিষয়ে যৌক্তিকতা প্রমাণ করতে পারবে।

কোনো সংবাদ মাধ্যম প্রতিষ্ঠানের কোনো কম্পিউটার ব্যবস্থা আটকে দেওয়া বা জব্দ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই আদালতের মাধ্যমে আগাম নির্দেশ নিতে হবে।

সংবাদ মাধ্যমে পেশাজীবী সাংবাদিকতার দায়িত্বের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অপরাধের ক্ষেত্রে প্রথমেই আদালতে হাজির হওয়ার জন্য তাদের বিরুদ্ধে সমন জারি করতে হবে (যেমনটা বর্তমান আইনে আছে) এবং সংবাদ মাধ্যমের পেশাজীবীদের কোনো অবস্থাতেই পরোয়ানা ছাড়া ও যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ ছাড়া আটক কিংবা গ্রেপ্তার করা যাবে না।

সংবাদ মাধ্যমের পেশাজীবীর দ্বারা সংগঠিত অপরাধের ক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের গ্রহণযোগ্যতা আছে কি না, তার প্রাথমিক তদন্ত প্রেস কাউন্সিলের মাধ্যমে করা উচিত। এই লক্ষ্যে প্রেস কাউন্সিলকে যথাযথচাবে শক্তিশালী করা যেতে পারে।

এই সরকারের পাস করা তথ্য অধিকার আইনকে দার্থহীনভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ওপর প্রাধান্য দেওয়া উচিত। এই আইনে নাগরিক ও সংবাদ মাধ্যমের জন্য যেসব স্বাধীনতা ও অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে, সেগুলোর সুরক্ষা আবশ্যক।

সাত দফা দাবি ঘোষণার পর  সম্পাদকরা ১০ মিনিট নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলো পত্রিকার সম্পাদক মতিউর রহমান, মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, নিউএজ সম্পাদক নূরুল কবীর, দৈনিক যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম, কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, নয়া দিগন্ত সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দীন, সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনিরুজ্জামান, করতোয়া সম্পাদক মো. মোজাম্মেল হক, ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন, বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ঢাকা ট্রিবিউন সম্পাদক জাফর সোবহান, সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, ইনডিপেনডেন্ট সম্পাদক এম শামসুর রহমান প্রমুখ ।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ অক্টোবর ২০১৮/সাওন/ইভা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়