ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

মুক্তিপণের জন্যই অপহরণ, দাবি মোবাশ্বারের

আহমদ নূর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৪৩, ২২ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মুক্তিপণের জন্যই অপহরণ, দাবি মোবাশ্বারের

নিজস্ব প্রতিবেদক : মুক্তিপণের জন্যই নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোবাশ্বার হাসানকে অপহরণ করা হয়েছিল বলে ধারণা করছেন তিনি।

নিখোঁজের ৪৪ দিন পর বাসায় ফিরে শুক্রবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেছেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মোবাশ্বার হাসান সিজার। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে রাজধানীর বনশ্রীর বাসায় ফেরেন তিনি।

মোবাশ্বার বলেন, ‘ওরা আসলে মুক্তিপণ চায়। একদিন পরিবারকে ফোনও করেছিল। তাদের আসল উদ্দেশ্য টাকা। শেষের দিকে এদের মধ্যে একটা বিষয় নিয়ে বাকবিতণ্ডা হচ্ছিল, আমাকে ছাড়বে, না কি মেরে ফেলবে? আমার একটা ধারণা, ওদের কোনো একজন কোনোভাবে মিসিং হয়েছে। কবে হয়েছে জানি না। তারা অনেক ভীত ছিল।’

তিনি বলেন, ‘মাঝখানে তারা বলেছিল, টাকা পয়সার বিষয়টা তোর পরিবার ও কোনো বন্ধু-বান্ধবীকে জানা। অথবা তোর কোনো টাকা পয়সাওয়ালা বন্ধু-বান্ধবী আছে কি না তারে ফোন দে।’

মোবাশ্বার বলেন, ‘এ সময়টা আমার সাইক্লোনের মতো গেছে। আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার ফ্যামিলি নরমাল। যেন সুস্থ-স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারি।’

অপহরণের দিনের কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, একটি মিটিং শেষে ইউএনডিপি থেকে বাসায় আসার জন্য উবারের গাড়িতে উঠেছিলেন। রোকেয়া স্মরণিতে কয়েকজন গাড়িটা থামিয়ে বলে, এটা চোরাই গাড়ি আপনি নামেন। নেমে অন্য গাড়ির খোঁজ করছিলেন। এ সময় পেছন থেকে তার চোখে মলম লাগিয়ে দেয়। পরে ধাক্কা দিয়ে গাড়িতে ওঠানো হয়। চোখে জ্বালা শুরু হয়। এরপর তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। এরপর তার আর কিছু মনে ছিল না।

তিনি বলেন, ‘পরদিন আমার ঘুম ভাঙে। মনে হলো আমি অনেকক্ষণ ঘুমিয়েছি। ঘুম থেকে ওঠে দেখি আমি একটা কক্ষে বন্দি। পেছনে আমার হাত বাঁধা। একটা ময়লা তোশক। জানালা আছে, তবে বাইরে থেকে আটকানো। পাশে আরেকটা কক্ষ আছে। সেখানে ৪/৫ জন কথা বলছিল। তারপর থেকেই সেখানেই ছিলাম।’

মোবাশ্বার হাসান বলেন, ‘ওরা আমাকে বলেছিল, তুই তো অনেক জায়গায় কাজ করিস। তুই টাকা দে। আমার কাছে নগদ ২৭ হাজার টাকা ছিল, নিয়ে নিয়েছে। ওই দিন আমি কোনো ক্রেডিট কার্ডও নিয়ে যাইনি। উবারে আমার অটোমেটিক বিল পরিশোধের লিঙ্ক ছিল।’

তিনি বলেন, ‘গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাতে আমাকে একটি গাড়ির মধ্যে বসানো হয়। গাড়িতে বসা একজনের কোলের মধ্যে আমাকে এক থেকে দেড় ঘণ্টার মতো শুইয়ে রাখা হয়েছিল। বিমানবন্দর এলাকায় আমাকে নামিয়ে দিয়ে বলে, তুই যা। পেছনে ফিরে তাকালে মাইরা ফালামু। নামার পর বিমানবন্দর এলাকা থেকে সিএনজি (অটোরিকশা) নিয়ে বাসায় আসি। সিএনজি চালকের মোবাইল থেকে আব্বাকে ফোন দিয়েছি। ৫০০ টাকা নিয়ে আব্বাকে বাসার নিচে আসতে বলি। পরে টাকা দিয়ে বাসায় ঢুকেছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমাকে একটা ঘরে আটকে রাখা হয়। হোটেলের ঠান্ডা খাবার দেওয়া হতো। আমি অপহৃত হওয়ার পর আসলে কী হয়েছিল তা জানি না। আমাকে মিডিয়া অনেক সাপোর্ট করেছে জেনেছি। অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই মিডিয়াকে।’

একমাত্র ছেলেকে ফিরে পাওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেন মোবাশ্বারের বাবা মোতাহার হোসেন।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ ডিসেম্বর ২০১৭/নূর/এসএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়