ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

আয়ের সুযোগের অভাব হাওড়ে

আশরাফ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:১২, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আয়ের সুযোগের অভাব হাওড়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক: হাওড় এলাকায় আয়ের সুযোগের অভাবে দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না মানুষ।

বাংলাদেশের হাওড় অঞ্চলে বসবাসরত জনগোষ্ঠীর টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মঙ্গলবার পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউণ্ডেশনের (পিকেএসএফ) আয়োজনে ‘সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট অব হাওড় পিপল: ইনোভেটিভ ইনিশিয়েটিভ অব পিকেএসএফ’ শীর্ষক সেমিনারে এ তথ্য উপস্থাপন করা হয়।

সেমিনারে বলা হয়, সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, কিশোরগঞ্জ এবং নেত্রকোনা জেলার প্রায় ৪ হাজার ৪৫০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় বিস্তৃত হাওড় অঞ্চল বছরের ৬ থেকে ৭ মাস পানিতে ডুবে থাকে। ফলে এ অঞ্চলের অধিকাংশ স্থানেই শুধু শীতকালে ফসল চাষ হয়। বর্ষাকালে অধিকাংশ কৃষকের সীমিত পরিসরে মাছ ধরা ছাড়া আর কোনো কাজ থাকে না। হাওড় এলাকায় আয়ের সুযোগের অভাবে সেখানকার জনগোষ্ঠী দারিদ্র্যের দুষ্ট চক্র থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না।

পিকেএসএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুল করিমের সভাপতিত্বে পিকেএসএফ ভবনে আয়োজিত এই সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। এ সময় মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির (এমআরএ) ভাইস চেয়ারম্যান অমলেন্দু মুখার্জী, হাওড় এলাকায় কর্মরত বিভিন্ন সংস্থাসহ পিকেএসএফ-এর নির্বাচিত ৪০টি সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

স্বাগত বক্তব্যে মো. আবদুল করিম বলেন, ‘দেশের মোট জনগোষ্ঠীর যে বৃহৎ অংশ এখনও দারিদ্র্যসীমার নীচে বাস করছে, তাদের মধ্যে হাওড়বাসী অন্যতম।’

তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত দূর্গম, প্রত্যন্ত অঞ্চল হওয়া সত্বেও হাওড় এলাকায় বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর ভাগ্য উন্নয়নে বিভিন্ন সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে পিকেএসএফ নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। এই আয়োজনের মাধ্যমে আমরা জানতে পারবো ইতিমধ্যে বাস্তবায়িত কর্মকাণ্ডসমূহের মাধ্যমে অর্জিত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে ভবিষ্যতে আমরা আরও কার্যকরভাবে হাওড়বাসীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করতে পারবো।’

তিনি জানান, প্রত্যন্ত হাওড় অঞ্চলের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে পিকেএসএফ উক্ত অঞ্চলে দুটি সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে ‘এলআইএফটি’ ও ‘সমৃদ্ধি’ শীর্ষক দুটি বিশেষ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।

হাওড় অঞ্চলে ‘এলআইএফটি’ কর্মসূচি বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতার ওপর পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ইকবাল আহাম্মদ এবং ‘সমৃদ্ধি’ কর্মসূচির অভিজ্ঞতার ওপর পল্লী বিকাশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক মো. হাসান আলী দুটি উপস্থাপনা পেশ করেন।

ইকবাল আহাম্মদ তার উপস্থাপনায় উল্লেখ করেন, পিকেএসএফ ২০০৯ সালে হাওড় এলাকার পিছিয়ে পড়া দরিদ্র জনগোষ্ঠীর বিকল্প ও বৈচিত্র্যময় কর্মসংস্থানের সুযোগ ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে ‘এলআইএফটি’ কর্মসূচির আওতায় ‘হাওড় এলাকার অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষায়িত ঋণ কার্যক্রম’ বাস্তবায়ন শুরু করে। এ কর্মসূচির আওতায় এখন পর্যন্ত ২২ হাজার ৩৮ জন অতিদরিদ্র সদস্যের মাঝে ২৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে।

‘সমৃদ্ধি’ বিষয়ক উপস্থাপনায় মো. হাসান আলী বলেন, ‘কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার মিঠামইন ইউনিয়নে সমৃদ্ধি কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই এলাকায় প্রায় চার হাজার খানা সমৃদ্ধি কর্মসূচির আওতায় নানাবিধ পরিসেবা গ্রহণ করছে। সমৃদ্ধি কর্মসূচির আওতায় হাওড় এলাকাভুক্ত এসকল খানা স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও আয়-উপার্জনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।’

প্রধান অতিথি ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ তার বক্তব্যে হাওড় এলাকার পিছিয়ে পড়া দরিদ্র ও অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠির অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ‘সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে কাঙ্খিত সাফল্য অর্জনে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে জাতীয়-স্থানীয় সকল পর্যায়ে যথাযথ সমন্বয় আবশ্যক। সবাইকে মিলে হাওড় এলাকার জন্য উপযুক্ত, বাস্তবায়নযোগ্য, সুনির্দিষ্ট, দীর্ঘমেয়াদী ও টেকসই কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/আশরাফ/হাসান/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়