ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ঈদ সামনে রেখে বেনারসি পল্লীতে ব্যস্ততা

হাসিবুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৪৭, ২৪ মে ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ঈদ সামনে রেখে বেনারসি পল্লীতে ব্যস্ততা

হাসিবুল ইসলাম মিথুন : পবিত্র রমজান মাস চলে এসেছে। রমজান মাস শেষে ঈদ। আর এই ঈদকে সামনে রেখে শাড়ি তৈরির ধুম লেগেছে মিরপুর বেনারসি পল্লীতে। ক্রেতাদের হাতে পছন্দের শাড়িটি তুলে দিতে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন বেনারসি পল্লীর কারিগররা।

বুধবার মিরপুর বেনারসি পল্লীতে গিয়ে জানা যায়, প্রায় প্রতিটি দোকানেই নতুন নতুন সাড়ি উঠানো হচ্ছে। সব দোকানেই রয়েছে ঈদের বিশেষ আয়োজন। বেনারসি পল্লীর কারিগররা শাড়ি, থ্রিপিস ও টুপিসে ঢেলে দিয়েছেন তাদের দক্ষতা।

কারিগররা বলছেন, আমাদের এখানে তৈরি প্রতিটি শাড়িতেই রয়েছে আভিজাত্যের ছাপ। এসব শাড়ির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো পাকা রং আর ওজনে হালকা। দামও সাধ্যের মধ্যে। তাই সমাজের উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্ন মধ্যবিত্ত সব শ্রেণির তরুণী কিংবা নারীদের প্রথম পছন্দ মিরপুর বেনারসি পল্লীর শাড়ি।

বেনারসি পল্লীর হানিফ সিল্কের কর্মী মোহাম্মদ রহিম মিয়া জানান, যারা শাড়ি পরে অভ্যস্ত নন তাদের জন্য মিলবে তিন হাজার টাকা থেকে শুরু করে সাড়ে চার হাজার টাকার সেলাই ছাড়া থ্রিপিস। ক্রেতারা থ্রিপিস বা টুপিস নিয়ে টেইলার্সে অর্ডার দিয়ে বানিয়ে নিতে পারবেন সালোয়ার-কামিজ।

বেনারসি পল্লী ঘুরে কিছু ক্রেতাও চোখে পড়ে। উত্তরা থেকে আসা সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘অনেক আগে থেকেই ভেবেছি এবার ঈদে আমি মিরপুর বেনারসি পল্লীর শাড়ি পরবো। তাই আজ আম্মুর সঙ্গে এখানে এসেছি। পছন্দ হলে আজই কিনে নিবো। আর ঈদের চার থেকে পাঁচ দিন আগে আবারো আসবো। কারণ, তখন এখানে নতুন নতুন ডিজাইনের শাড়ি পাওয়া যাবে যা এখন পাওয়া যাচ্ছে না।’



বেনারসি পল্লীর এক দোকানের কর্মী মিজানুর রহমানের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই পল্লীতে বর্তমানে তাঁত রয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার। এই তাতেই তৈরি হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী বেনারসি।

টয়া সিল্কের মালিক জসীমউদ্দিন বলেন, ‘মানসম্পন্ন ও আকর্ষণীয় ডিজাইনের কারণেই আমাদের এই বেনারসি পল্লীর এতো সুনাম। সচেতন ক্রেতারা যাচাই-বাছাই করেই এই শাড়ির প্রতি ঝুঁকছেন।’

তিনি জানান, ঈদ বাজারের জন্য কিছু শাড়ি আগেভাগেই তৈরি করে রাখা হয়। তবে ডিজাইন নকল হওয়ার ভয়ে তা বিলম্বে বাজারে ছাড়া হয়।

হানিফ সিল্কে গিয়ে জানা গেছে, তারা এবার নতুন ও পুরোনো শাড়ির সংমিশ্রণ করেছেন। পুরোনো কিছু ডিজাইনের সাথে নতুন কিছু স্পেশাল আইটেম রেখেছেন।

প্রসঙ্গত, ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর ভারতের বেনারসের প্রায় ৩৭০টি মুসলমান তাঁতি পরিবার তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসে। তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ব্যবসা শুরু করে। তাদের বৃহৎ অংশটি ছিল প্রায় ২০০ পরিবারের, যারা ঢাকার মিরপুরে বসতি স্থাপন করে। তবে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর স্থানীয়রা এই পেশায় ব্যাপকভাবে জড়িত হওয়ার পরই বেনারসি শিল্পের অগ্রগতির সূচনা ঘটে।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ মে ২০১৭/হাসিবুল/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়