ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

ধেয়ে আসছে ‘মোরা’, ৭ নম্বর বিপদ সংকেত

আরিফ সাওন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:২৭, ২৯ মে ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ধেয়ে আসছে ‘মোরা’, ৭ নম্বর বিপদ সংকেত

নিজস্ব প্রতিবেদক ‍: পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ’মোরা’ আরো সামান্য উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছিল।

আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ জানান, এটি সোমবার সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫২৫ কি. মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৪৫ কি. মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৮০ কি. মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫১০ কি. মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব দিকে অবস্থান করছিল। এটি আরো ঘনীভূত ও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে মঙ্গলবার সকাল নাগাদ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কি. মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কি. মি. যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কি. মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।

চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরসমূহকে চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে সাত নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের দপ্তরে জরুরি সভা আহ্বান করা হয়েছে। 

এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের সার্বিক প্রস্তুতির জন্য বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে দুর্যোগবিষয়ক কমিটির বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় নানা নিদের্শনা দেওয়া হয়। সভার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় সর্তকতামূলক মাইকিংসহ নিরাপত্তা ও আশ্রয়ের জন্য প্রচারের কাজ শুরু হয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত কোনো মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়নি।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস জানায়, ঘূর্ণিঝড় মোরা আরো উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে মঙ্গলবার ভোরে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমের সময় ঘণ্টায় ৭০-৯০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টি সমুদ্রবন্দরের খুব কাছ দিয়ে অথবা ওপর দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে৷ 

৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হলেও কক্সবাজারের পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক রয়েছে। রাতে মাঝারি আকারে বৃষ্টিপাত হলেও সোমবার সকাল থেকে থেমে থেমে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। আকাশ মেঘলা রয়েছে। সমুদ্র স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে একটু উত্তাল রয়েছে। ঢেউয়ের সংখ্যাও বেশি। সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া ট্রলার সমুহ ফিরে আসছে। 

উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ সাত নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে পাঁচ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ পাঁচ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

ঘূর্ণিঝড় ’মোরা’-এর প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল  স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। এ সব এলাকায় ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কি. মি. বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলার সমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৯ মে ২০১৭/সাওন/রেজাউল/রুবেল/উজ্জল/এসএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়