ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

চোখের টিউমারে অনিশ্চিত এসএসসি পরীক্ষা

আবু বকর ইয়ামিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৫২, ১৮ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
চোখের টিউমারে অনিশ্চিত এসএসসি পরীক্ষা

আবু বকর ইয়ামিন : বাবা-মায়ের কোলজুড়ে জন্ম নেওয়া প্রথম ছেলে মো. ওহাব নবী। এরপর আরো পাঁচ সন্তানের জন্ম হলেও প্রথম ছেলে হিসেবে তার আদর ছিল অন্যরকম। বড় হয়ে বাবা-মায়ের অভাব দূর করবে এমনই ছিল আশা। স্কুলে তার ফলাফলও ছিল ঈর্ষণীয়। কিন্তু ছন্দপতন ঘটল ঠিক এসএসসি পরীক্ষার আগে আগে।

জন্মের কয়েক মাস পরেই মশার কামড় বলে মনে হওয়া ছোট্ট ব্রণটি এখন অবস্থান নিয়েছে সারা মুখজুড়ে। চিকিৎসকরা বলছেন, এটি চোখের টিউমার জাতীয় কিছু। এ কারণে পড়াশুনার পাশাপাশি তার জীবনও সংশয়ের মুখে পড়েছে।

তবে এখনো মনোবল হারায়নি ওহাব নবী। তার আপাতত শঙ্কা দৃষ্টিশক্তি হারানো নিয়ে। তার মতে, চিকিৎসা হলে বাংলাদেশে এখন অনেক দুরারোগ্য রোগ ভাল হচ্ছে। আমিও ভাল হতে চাই, পরীক্ষা দিতে চাই।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওহাব নবী ফেনীর পরশুরাম উপজেলার দক্ষিণ গুথুমা গ্রামের বাসিন্দা। চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা রয়েছে তার। কিন্তু চোখের টিউমার ক্রমশ বড় হতে থাকায় বেশ কিছুদিন ধরে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে সে।

ওহাবের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাম চোখে ছোট গোঁটা থেকে দিন দিন বড় হচ্ছে টিউমার আকৃতির মাংসপিণ্ড। চট্টগ্রাম পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতালে গিয়েছিলেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওই হাসপাতালে চিকিৎসা সম্ভব নয়। আরো উন্নত হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হবে। তবে চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল। দরিদ্র পিতার পক্ষে সংসারের ব্যয় বহন করে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব নয়।

ওহাব নবীর বাবা আবদুল গণি রাইজিংবিডিকে জানান, জন্মের দুই-তিন মাসের সময় ওহাব নবীকে একটা মশা কামড় দেয়। মশার কামড়ের ওই জায়গাটি তখন একটু ফুলে যায়। পরে দিন দিন সেটি বাড়তে থাকে। এর মধ্যে স্থানীয় ডাক্তারের পরামর্শে বিভিন্ন ওষুধ নিই। কিন্তু আর্থিক সমস্যার কারণে বড় কোনো ডাক্তার দেখাতে পারিনি। এক পর্যায়ে যখন এটি বেড়ে যায় তখন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ডাক্তার বলে তার টিউমার হয়েছে। তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু আর্থিক অভাবে ঢাকা নিতে পারিনি।’

চিকিৎসায় খরচে কেমন লাগবে? জানতে চাইলে আবদুল গণি বলেন, ডাক্তাররা এখনো নির্দিষ্ট কিছু বলেননি। কারণ ডাক্তাররা এখনো আশ্বস্ত হতে পারছে না যে, আমরা কত টাকা খরচ করে চিকিৎসা করাতে পারব। তবে আমি আমার ছেলের চিকিৎসা করাতে চাই। আমি চাই সে আবার পড়াশুনা করবে।

সামনে ছেলের এসএসসি পরীক্ষা। এদিকে টিউমারটি দিন দিন বড় হয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় আছেন আবদুল গণি।

ছেলের চিকিৎসার জন্য সচ্ছল ও হৃদয়বানদের কাছে সাহায্য চেয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘আমি একজন কৃষক। অন্যের জমি বর্গা চাষ করে দিনাতিপাত করি। ছেলের চিকিৎসা কীভাবে করব। তাই ঢাকা নিয়ে যেতে পারছি না। ছেলেকে ঢাকা নিয়ে যেতে পারলে হয়তো ভাল হতো। কোনো বিত্তবান যদি আমার ছেলের চিকিৎসার জন্য এগিয়ে আসতেন হয়তো রোগটা সেরে যেত।’

ওহাব নবীকে কেউ সাহায্য করতে চাইলে তার বাবার বিকাশ নাম্বারে (01815435744) যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৮ আগস্ট ২০১৭/ইয়ামিন/হাসান/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়