ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

রোহিঙ্গা শরণার্থী: পুশব্যাক, ব্যবস্থাপনা ও অন্যান্য প্রসঙ্গ

জাফর সোহেল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৪৬, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রোহিঙ্গা শরণার্থী: পুশব্যাক, ব্যবস্থাপনা ও অন্যান্য প্রসঙ্গ

জাফর সোহেল : অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী দুদিন আগে পত্রিকায় একটি লেখায় বলেছেন: ‘রোহিঙ্গাদের ওপর যে সুপরিকল্পিত ও সংঘবদ্ধ হত্যা ও নির্যাতন চালানো হচ্ছে তাকে যে নামেই ডাকা হোক না কেন, এটি আসলে গণহত্যাই’। একটা দেশে যখন গণহত্যা চলে তখন সেখানকার সাধারণ মানুষ প্রাণ বাঁচাতে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটবে- এটাই স্বাভাবিক। একাত্তরে বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষ এভাবেই ভারত সীমান্তের দিকে ছুটে গিয়েছিল। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ঘোষণায় সুস্পষ্টভাবে বলা আছে, এমন ছুটে আসা মানুষদের আশ্রয় দিতে হবে।

জাতীয় একটি দৈনিক গতকাল রোহিঙ্গা সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনে ছবি ছেপেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে- এক বাবা তার শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে অঝোরে কাঁদছেন। কোলের শিশুটি মৃত। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, এই বাবা নাফ নদী পার হওয়ার সময় নৌকাডুবিতে তার দুই জমজ শিশুসন্তান হারিয়েছেন। ঘটনার আরেকটু গভীরে গিয়ে জানা গেল, প্রথম দফায় তারা যখন নৌকা নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে চেয়েছিলেন তখন কিছুটা নিরাপদ ছিল নাফ নদীর মোহনা। সমুদ্রে স্রোত কম ছিল। কিন্তু তখন বাংলাদেশের কোস্ট গার্ডের পাহারা ছিল। পরে কোস্ট গার্ডের অনুপস্থিতিতে পার হওয়ার সময় সমুদ্র উত্তাল হয়ে পড়ায় তাদের নৌকাটি ডুবে যায়। উপকূলের কাছাকাছি হওয়ায় স্বামী-স্ত্রী সাঁতরে উঠতে পারলেও, পানিতে ডুবে মৃত্যু হয় তাঁর দুই আদরের সন্তান হাসান, হোসেনের।

এমন একটি ঘটনা আমাদের সংবাদের ভাষায় খুব সহজেই ‘নৌকাডুবিতে দুই রোহিঙ্গা শিশুর মৃত্যু’ বলে চালিয়ে দেয়া যায়। কিন্তু এটা কি কেবলই একটি নৌকাডুবি? এই প্রশ্নটি এখন করাই যায়। সেইসঙ্গে এই প্রশ্নটিও অত্যুক্তি হবে না যে, বাংলাদেশের কোস্ট গার্ড আর সরকার কি দুটি আলাদা পক্ষ? এক পক্ষের সঙ্গে আরেক পক্ষের কি কোনো যোগ নেই? রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ শুরুর ৪ দিনের মাথায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, রোহিঙ্গাদের প্রতি মানবিক আচরণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গত এক সপ্তাহে আমরা এ কথার বাস্তবায়নও দেখেছি। লাখ লাখ রোহিঙ্গা অনেকটা বিনা বাধায় বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। কিন্তু এর মধ্যেও এ দেশের বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম প্রায় প্রতিদিনই রোহিঙ্গাদের সীমান্ত থেকে ফেরত পাঠানোর খবর প্রকাশ করছে। কক্সবাজারে রোহিঙ্গার ঢল দেখলে অবশ্য এ খবরে কেউ বিশ্বাস করবে না। 

লাখ লাখ রোহিঙ্গা যেখানে অনুপ্রবেশ করছে বা করতে বাধ্য হচ্ছে, আটকানো যাচ্ছে না কোনমতেই, সেখানে দু’একটি রোহিঙ্গা নৌকা ফিরিয়ে দিয়ে এবং তা মিডিয়ায় প্রচার করে কী লাভ? এ ধরনের সংবাদ কি মানবিক বাংলাদেশের ছবি কলঙ্কিত করবে না? প্রকাশ্যেই তো সরকার রোহিঙ্গাদের আসতে দিচ্ছে এবং পরিস্থিতি তা দাবিও করে। সুতরাং এই অমানবিক পুশব্যাক বন্ধ করতে হবে। কারণ কোনো শরণার্থী যদি তার দেশে ফিরে যাওয়াকে নিরাপদ মনে না করে তাহলে তাকে জোর করে ফেরত পাঠানো যাবে না- এটা বলা আছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনে। বাংলাদেশ এটি অনুসমর্থন করেছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো, এই অল্পকিছু মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে কী লাভ? অধিকাংশ রোহিঙ্গা তো বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে।  সংশ্লিষ্টরা নিশ্চয়ই এ বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন। 

এবার আসি শরণার্থী ব্যবস্থাপনা বিষয়ে। বাংলাদেশে আগে থেকেই আছে ৩ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী। কয়েক লাখ রোহিঙ্গার নতুন করে এদেশে প্রবেশ নিশ্চয়ই একটি দুর্যোগের সমান। এটি মানবিক দুর্যোগ। বন্যা কিংবা সুনামিতে যে ধরনের দুর্যোগ হয় তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি এ দুর্যোগের প্রভাব। বাংলাদেশ নিজেদের বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোর ব্যবস্থাপনাতেই হিমশিম খায়। এতবড় মানবিক দুর্যোগে সামাল দেওয়া সেখানে কষ্টসাধ্য বৈকি। আমরা শুরুর দিকে সমস্যাটিকে গুরুত্ব না দিয়ে এরই মধ্যে সংকট মোকাবেলায় কিছুটা পিছিয়ে পড়েছি বলা যায়। দরকার ছিল, রাখাইনে হত্যাযজ্ঞ শুরুর পরদিন ২৬ আগস্ট থেকেই সীমান্তে নাফ নদীর তীরে এবং বিভিন্ন পয়েন্টে সরকারি ব্যস্থাপনায় বিশেষ বুথ স্থাপন করা- যেখানে রোহিঙ্গাদের নিবন্ধন করা যেত। এরপর তাদের কোথায় আশ্রয় দেয়া হবে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা  সিদ্ধান্ত  নিতে পারতেন। আশ্রয় দেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের মাধ্যমে একটা ব্যবস্থাও করা যেত। এমনকি প্রয়োজনে অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবি দিয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তা করা যেত। কিন্তু সেরকম কিছু গত দুই সপ্তাহে দেখা যায়নি।

সাম্প্রতিক সময়ে শরণার্থী সমস্যা মোকাবেলা করা গ্রিস ও জার্মানিকে অনুসরণ করা যেত- তাও করা হয়নি। জার্মানি তার দেশে প্রায় দশ লাখ শরণার্থী আশ্রয় দিয়েছে। তারা প্রত্যেক শরণার্থীকে প্রথমে সীমান্ত এলাকায় ক্যাম্প করে থাকতে দিয়েছে। সেখানে তাদের নিবন্ধন যেমন করেছে তেমনি যাবতীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে প্রত্যেককে বিভিন্ন রোগের টিকা দিয়ে তবেই মূল ভূখণ্ডে ঢুকতে দিয়েছে। এই ধরনের ব্যবস্থাপনা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করা রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রে এখনও ঘটেনি।  রোহিঙ্গারা টেকনাফ আর উখিয়া ছেড়ে ঢুকে পড়ছে কক্সবাজার জেলা শহরে। এমনকি চট্টগ্রাম শহরেও চলে আসছে কেউ কেউ। খবরে দেখলাম, অন্তত ৫০ হাজার রোহিঙ্গা ঢুকে পড়েছে কক্সবাজার শহরে। এতবড় একটা সংকটময় পরিস্থিতি কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের একার পক্ষে সামাল দেয়া সম্ভব নয়। এ বিষয়েও সরকারের ধীরে চলো নীতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। আশপাশের জেলাগুলো থেকে জনবল পাঠিয়ে এ সংকট মোকাবেলায় কক্সবাজার প্রশাসনকে সহযোগিতা করা একান্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহায়তা নিয়ে কীভাবে নতুন আসা শরণার্থীদের তালিকাভুক্ত করা যায় সে বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। না হলে এদের ফেরত পাঠানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। অতীতের মতো অনেকেই মিশে যাবে বাংলাদেশের মূল জনগোষ্ঠীর সঙ্গে।

রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় এই মুহূর্তে বাংলাদেশ সরকারের সবচেয়ে বড় কাজ হলো, রাখাইন রাজ্যে গণহত্যা বন্ধে দ্রুত বিশ্ব জনমত গড়ে তোলা। কেননা যতই রোহিঙ্গা ফেরত নেয়ার দাবি আমরা তুলি না কেন, সেখানে একটা স্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত তাদের ফেরত পাঠানো সম্ভব হবে না। সেটা যেমন মানবিক কারণে তেমনি আন্তর্জাতিক শরণার্থী বিষয়ক নিয়মের কারণেও। কারণ কেউ যদি মনে করে তার ফেরত যাওয়া নিরাপদ নয়, তাকে জোর করে ফেরত পাঠানো যাবে না। আর পুশব্যাকের মতো ছোট ছোট উদ্যোগে কখনোই লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠনো সম্ভব নয়। সুতরাং সংকটের কারণ দূর করতে হবে। রোহিঙ্গাদের গণহারে হত্যা ও নির্যাতন বন্ধের উদ্যোগ নিতে হবে। তাদের নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে মিয়ানমারকে বাধ্য করতে হবে। আর এ বিষয়ে বাংলাদেশেরই দায়িত্বটা বেশি। যেহেতু এ সমস্যার সরাসরি ভুক্তভোগি হচ্ছে বাংলাদেশ, সেহেতু কালক্ষেপণ করার সময় আর নেই। অতীতে এ বিষয়ে জোরালো কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলেই মিয়ানমার সরকার এখনো আগের ৩ লাখ শরণার্থী ফেরত নেয়নি। অতএব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সংকটের কারণ ও সমস্যার প্রকৃতি বোঝাতে হবে।

জতিসংঘসহ সব আন্তর্জাতিক সংস্থাকে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টির আহ্বান জানাতে হবে। যাতে এক রোখা মিয়ানমার সরকার তাদের পোড়ামাটি নীতি থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়। রোহিঙ্গারা যে সেখানকার প্রকৃত অধিবাসী সে তথ্য বিশ্ববাসীকে নতুন করে জানাতে হবে। কারণ মিয়ানমার তাদেরকে সে দেশের অধিবাসী হিসেবেই স্বীকার করে না। বিশ্বের কাছে তারা বলে, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশী; রাখাইনে তারা অনুপ্রবেশ করেছে। এই জঘন্য মিথ্যাকে কাউন্টার করে সত্য তুলে ধরতে হবে। এ কাজে বন্ধুরাষ্ট্র এবং মুসলিম বিশ্বের প্রভাবশালী রাষ্ট্রসমূহকে যুক্ত করতে হবে।

আন্তর্জাতিক রাজনীতির কারণে অনেকে এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে সমর্থন করবে না। এমনকি প্রভাবশালী মুসলিম রাষ্ট্র সৌদি আরবও না করতে পারে। ভারত ইতিমধ্যে রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। মিয়ানমারের প্রাকৃতিক সম্পদ আর ভারতের জন্য অর্থনৈতিক বাজার সৃষ্টির সম্ভাবনা এ অবস্থান নেয়ার পেছনে কাজ করছে। একইভাবে চীনও মিয়ানমারের পক্ষে আছে। কারণ, মিয়ানমার থেকে গ্যাস নেয়ার জন্য এরই মধ্যে পাইপ লাইন তৈরি করে ফেলেছে তারা। রোহিঙ্গারা বাঁচল কি মরল তাতে তাদের কিছু যায় আসে না। আরও নানা সমীকরণ আছে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও অর্থনীতির। যেসব সমীকরণকে এই মুহূর্তে নিজেদের পক্ষে ভাবছে মিয়ানমার। এজন্যেই তারা কোনকিছুতেই কর্ণপাত করছে না।

তারপরও বসে থাকলে চলবে না। বাংলাদেশের আহ্বানে যারা এগিয়ে আসবে তাদের নিয়েই এই লড়াইয়ে নামতে হবে। বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক একটা বিষয় হলো, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের কমিশন রাখাইনে শান্তি ফেরাতে যেসব সুপারিশ করেছে, তা বাংলাদেশের এই লড়াইয়ের পক্ষে যাবে। সুতরাং এই সুপারিশ সামনে রেখে বাংলাদেশর কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করতে হবে। আনান কমিশন বলেছে, রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিতে হবে, তাদের চলাফেরার স্বাধীনতা দিতে হবে। এ সুপারিশ গৃহীত হলেই মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো যাবে। চাইলে ১৯৭৮ সালে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় যে চুক্তি করেছে মিয়ানমার, সেটিও সামনে আনা যায়। তখন তারা রোহিঙ্গাদের নিজেদের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে নিয়েছিল।

এ বিষয়ে ১৯৭১ সালে ভারতের ইন্দিরা গান্ধির কূটনৈতিক তৎপরতার অভিজ্ঞতাও কাজে লাগাতে পারেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। একাত্তরেও বহু দেশ ও পরাশক্তি বাংলাদেশকে সমর্থন না দিয়ে পাকিস্তানিদের গণহত্যাকে সমর্থন করেছিল। কিন্তু ইন্দিরা গান্ধির প্রচেষ্টা আর বিশ্বমিডিয়ার চাপে শেষমেষ একটা বিশ্বজনমত গড়ে উঠেছিল পাকিস্তানি গণহত্যার বিরুদ্ধে। এই সময়ে মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধেও এরকম একটা বিশ্বজনমত তৈরির প্রয়োজন আছে এবং এ কাজে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে পারেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি এরই মধ্যে মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের জন্য একটি নিরাপত্তা অঞ্চল গঠনের প্রস্তাব করেছেন বিশ্বসমাজের কাছে। আমার কাছে এই প্রস্তাব খুবই তাৎপর্যপূর্ণ মনে হয়েছে। এর মধ্যে একটা বৈচিত্র্য আছে, কৌশলও আছে। রোহিঙ্গাদের জন্য তিনি কিন্তু স্বাধীন রাষ্ট্র চাননি, চেয়েছেন নিরাপদ আবাসভূমি। এ প্রস্তাবটিই বিশ্বসভায় জোরালোভাবে তুলে ধরতে হবে। সেজন্যে যে সমস্ত পক্ষের সমর্থন জরুরি তাদের দেশ সফর করতে হবে; দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ও আলোচনা করতে হবে। 

বাংলাদেশের কিছু বুদ্ধিজীবী টেলিভিশনের টকশো আর পত্রিকার কলামে রোহিঙ্গাদের ছোটখাট প্রতিরোধকে জঙ্গি তৎপরতা বলে আখ্যায়িত করছেন। কেউ কেউ বলছেন, এরা আইএস অথবা পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই থেকে অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ পাচ্ছে। আরাকান স্যালভেশন আর্মি যদিও প্রকাশ্যে ভিডিও বার্তায় বলেছে, তাদের সঙ্গে ধর্মীয় জঙ্গিবাদের সম্পর্ক নেই। তারা কেবল নিজেদের অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করছেন। এমনকি তাঁরা স্বাধীনতার কথাও বলেননি। তাঁরা বলেছেন নাগরিক অধিকারের কথা। আমার কথা হলো, একটি দেশে শত শত বছর ধরে বসবাস করার পরও যদি কেউ নাগরিক অধিকার না পায়, তবে কি সে অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করবে না? আর কেবলই কি অধিকার? যে নির্যাতন আর নৃশংসতা চলছে তাদের জনগোষ্ঠীর ওপর, তাদের মা-বোনের ওপর- তার জবাব কি তারা দিতে চাইবে না? যেভাবে তাদের লোকদের হত্যা করা হচ্ছে এর প্রতিকার কি তারা চাইবে না?

রোহিঙ্গাদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে তারা যে কারও সাহায্য নিতে পারে এবং নেবে। নিকট প্রতিবেশী হিসেবে এবং ঘটনার ভুক্তভোগি হিসেবে বাংলাদেশের এবং অন্যান্য আঞ্চলিক শক্তির দায়িত্ব হচ্ছে, তারা যেন জঙ্গিগোষ্ঠীর কাছ থেকে সাহায্য নিতে বাধ্য না হয়, সে ব্যাপারে নজর রাখা এবং পদক্ষেপ নেয়া। প্রয়োজনে বিপন্ন মানুষের অধিকার আদায়ে সাহায্য নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। সে সাহায্য হবে নৈতিক দায়িত্ব।
 

লেখক: সাংবাদিক



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়