ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

বহুমুখী পদক্ষেপে দুদকের প্রতি আস্থা বাড়ছে

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:০৩, ২০ নভেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বহুমুখী পদক্ষেপে দুদকের প্রতি আস্থা বাড়ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মো. ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, ‘বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণের কারণেই দুদকের প্রতি জনগণের আস্থা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৫ সাল থেকে ২০১৭ সালে কমিশনে অভিযোগপ্রাপ্তি বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৬০ শতাংশ।’

তিনি বলেন, ২০১৭ সালের শুরুতেই কমিশন থেকে বলা হয়েছিল বছরটি হবে ঘুষগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের আতঙ্কের বছর। এ পর্যন্ত ২৩টি  ফাঁদ-মামলা পরিচালনা করে ঘুষখোর কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখন প্রকাশ্যে ঘুষ খাওয়ার প্রবণতা কমে এসেছে। ঘুষ এখন গোপন বিষয়ে পরিণত হয়েছে।

সোমবার দুদকের ত্রয়োদশ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি এসব কথা বলেন। দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

দুদক সূত্রে জানায়, ২১ নভেম্বর মঙ্গলবার দুর্নীতি দমন কমিশনের ত্রয়োদশ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ২০০৪ সালের ২১ নভেম্বর দুদক একজন চেয়ারম্যান ও দুজন কমিশনারের যোগদানের মাধ্যমে কমিশন প্রতিষ্ঠিত হয়।

এবারের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর কেন্দ্রীয় কর্মসূচির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- মঙ্গলবার সাড়ে ৯টায় কমিশনের প্রধান কার্যালয় প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা ও কমিশনের পতাকা উত্তোলন করবেন কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। সকাল পৌনে ১০টায় একই স্থানে শান্তির প্রতীক পায়রা অবমুক্ত করবেন দুদক চেয়ারম্যান এবং একই সময় বেলুন ও ফেস্টুন উড়াবেন। বেলা ১০টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা অডিটোরিয়ামে কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতিমুক্ত থেকে দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনায় অঙ্গীকারাবদ্ধ থাকার লক্ষ্যে তাদের দুর্নীতিবিরোধী শপথবাক্য পাঠ করাবেন দুদক চেয়ারম্যান। একই স্থানে একই সময়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের বর্তমান বছরের সার্বিক কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাক্তন গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দীন। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কমিশনের ছয়টি বিভাগীয় কার্যালয় এবং ২২টি সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে একই জাতীয় কর্মসূচি উদযাপন করা হবে।

প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর কর্মসূচি উদযাপন উপলক্ষে কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, আমাদের সব আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়নি। আমাদের আশা ছিল এমন অবস্থার সৃষ্টি হবে, যাতে দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তিরা বিশেষ করে সরকারি কর্মকর্তারা দুর্নীতি করার অনৈতিক সাহস সম্পূর্ণ হারিয়ে ফেলবেন। বাস্তবতা হচ্ছে, আমরা এখনও সে পর্যায়ে যেতে পারিনি। তবে আমরা চেষ্টা করছি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমাদের কিছু সাফল্য রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘২০১৭ সালের শুরুতেই কমিশন থেকে বলা হয়েছিল ২০১৭ সাল হবে ঘুষগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের আতঙ্কের বছর। আমরা আমাদের কথা রাখার চেষ্টা করেছি। আজ পর্যন্ত ২৩টি ফাঁদ-মামলা পরিচালনা করে ঘুষখোর কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখন প্রকাশ্যে ঘুষ খাওয়ার প্রবণতা কমে এসেছে। ঘুষ এখন গোপন বিষয়ে পরিণত হয়েছে। তাছাড়া কমিশনের প্রসিকিউশনে বিভিন্ন সংস্কার করা হয়েছে। ২০১৭ সালে মামলার সাজার হার বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৭০ শতাংশে উপনীত হযেছে। আমরা চেষ্টা করছি প্রায় শতভাগ মামলার সাজার বিষয়ে প্রসিকিউটিং এজেন্সি হিসেবে সঠিক দায়িত্ব পালন করা।’

এক্ষেত্রে তিনি কমিশনের আইন অনুবিভাগের কর্মকর্তাদের প্রতিটি মামলায় সম্পৃক্ত আইনজীবীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ এবং ধার্য তারিখে আইনজীবী ও স্বাক্ষীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার নিদের্শনা দিয়েছেন।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘দুদকের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কর্মকর্তাদের দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এ বছরে কমিশনের নিজস্ব হাজতখানা, সশস্ত্র পুলিশ ইউনিট, গোয়েন্দা ইউনিট, দুদক অভিযোগ কেন্দ্রের হটলাইন ১০৬, রেকর্ড রুম নির্মাণ, সম্পদ পুনরুদ্ধার ইউনিট গঠনসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এসব উদ্যোগের পাশাপশি কমিশনের কর্মকর্তাদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। কমিশনের কোনো কর্মকর্তা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়লে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গত দুই বছরে সাতজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গুরুদণ্ড দেওয়া হয়েছে এবং পাঁচজন কর্মকর্তা–কর্মচারীকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ১৩টি বিভাগীয় মামলা পেন্ডিং রয়েছে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ নভেম্বর ২০১৭/এম এ রহমান/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়