ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

‘যুদ্ধাপরাধী ও স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে সতর্ক থাকুন’

সাইফুল আহমেদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৪৪, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘যুদ্ধাপরাধী ও স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে সতর্ক থাকুন’

ডেস্ক রিপোর্ট : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুদ্ধাপরাধী ও স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির ষড়যন্ত্র সম্পর্কে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘জাতি কোনো দিনও তাদের ক্ষমা করবে না।’

তিনি বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধী যাদের যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে বিচার হয়ে সাজা হয়েছে, সাজা কার্যকর হয়েছে তাদেরকে যারা মন্ত্রী বানিয়েছিল এবং লাখো শহীদের রক্ত রঞ্জিত জাতীয় পতাকা তাদের হাতে তুলে দিয়েছিল জাতি যেন কোনো দিন তাদের ক্ষমা না করে, ক্ষমা করবে না। সেটাই আমার জাতির কাছে আবেদন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা আমার মা-বোনকে ধর্ষণ করেছে, গণহত্যা চালিয়েছে, অগ্নিসংযোগ-লুটপাট করেছে সেসব যুদ্ধাপরাধীদের আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে তাদের বিচারের রায় আমরা কার্যকর করেছি। যারা এদেরকে মর্যাদা দিয়েছিল, এদের হাতে পতাকা তুলেছিল তাদের ব্যাপারে জাতিকে সচেতন থাকতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা শনিবার বিকেলে রাজধানীর ফার্মগেটস্থ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে অমর একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।

তিনি এর আগের পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘এক সময় দেখেছি অনেকেই নিজে মুক্তিযোদ্ধা তা বলার সাহস পেতেন না। সরকারি চাকরি পাবার জন্য তিনি যে মুক্তিযোদ্ধা কথাটা লিখতে সাহস পেতেন না, কারণ তাহলে চাকরি পাবে না। কী দুর্ভাগ্য আমাদের, পঁচাত্তরে জাতির পিতাকে হারাবার পর এই অবস্থা বাংলাদেশে সৃষ্টি হয়েছিল। তখন ছিল রাজাকারদের দাপট।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০৮ এর নির্বাচনে আমাদের দল জয়ী হয়েছে এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনের জয় অগ্নিসন্ত্রাস করেও বিএনপি-জামায়াত ঠেকাতে পারেনি। এই দীর্ঘ নয় বছর সরকারে থাকার ফলেই অন্তত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিচয় দিতে মানুষ গর্ববোধ করে। আর ভীত-সন্তস্ত্র হয় না।’

তার সরকারের শাসনেই দেশে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আবার সামনে এসেছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘মানুষ অন্তত তা বলার সুযোগ পাচ্ছে, লেখার সুযোগ পাচ্ছে, সেই আত্মবিশ্বাসটা ফিরে এসেছে। এই আত্মবিশ্বাসটা যেন হারিয়ে না যায়, এমন কোনো অন্ধকারে আমরা যেন আবার না পড়ি যাতে করে আবার আমাদেরকে অন্ধকারে চলে যেতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের কথা বলতে দ্বিধাগ্রস্ত হতে হবে সেই পরিবেশ যেন ভবিষ্যতে আর কোনো দিনও বাংলার মাটিতে ফিরে না আসে সেজন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।’

সভায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি, আব্দুল মতিন খসরু এবং প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, এমিরেটাস অধ্যাপক এবং নজরুল ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ড. রফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, দলের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন বক্তৃতা করেন।

সংগঠনের প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ আলোচনা সভা পরিচালনা করেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ দলের সভাপতিমণ্ডলী এবং কার্যনির্বাহী সংসদের সদসবৃন্দ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখা, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে মানুষের সামনে তুলে ধরা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের কাহিনিগুলো মানুষের কাছে বলার উদ্যোগ গ্রহণ করে।’

যাদের হৃদয়ে পাকিস্তান কিন্তু থাকে বাংলাদেশে, সব রকম আরাম-আয়েশ ফল ভোগ করবে এই দেশের আর অন্তরাত্মা পড়ে থাকবে পাকিস্তানে সেই পাকিস্তানওয়ালাদের থেকে বাংলাদেশের মানুষকে সতর্ক থাকারও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

ভাষা আন্দোলনের পথ বেয়েই লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য যে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের খুনিদের ভোট চুরি করে সংসদে বসানো হয়েছিল।’

উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের গ্রাজুয়েশন প্রাপ্তির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়েছে। বাঙালি জাতি আজ মর্যাদা পেয়েছে। এই অগ্রযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘শহীদদের প্রতি আমাদের আজকের অঙ্গীকার, এই অগ্রযাত্রাকে আমরা অব্যাহত রাখব।’

প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে বাংলা ভাষার চর্চা এবং সর্বস্তরে বাংলা ভাষার ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘যে ভাষার জন্য আমরা রক্ত দিয়েছি সেই ভাষার চর্চাটা আমাদের থাকতে হবে। সেটা পরিবার থেকেও উৎসাহিত করতে হবে।’

তথ্যসূত্র : বাসস




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/এসএ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়