ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

পায়রা সমুদ্রবন্দরের ব্যয় বাড়ল দ্বিগুণ

হাসিবুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:১১, ২০ মার্চ ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পায়রা সমুদ্রবন্দরের ব্যয় বাড়ল দ্বিগুণ

নিজস্ব প্রতিবেদক : পায়রা সমুদ্রবন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নে সংশোধনীয় প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে পায়রা সমুদ্রবন্দরের ব্যয় বেড়েছে দ্বিগুণ।

এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৩৫০ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এটি প্রথম সংশোধিত প্রকল্প। ২০১৫ সালে অনুমোদনের সময় এর ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ১২৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।

মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসির সম্মেলন কক্ষে একনেক সভায় পায়রা বন্দরসহ ১৬টি (নতুন ও সংশোধিত) প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। যার মোট টাকার পরিমাণ ৯ হাজার ৬৮০ কোটি ৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে জিওবি ৯ হাজার ৫৯১ কোটি ৩ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল ৮৯ কোটি ২ লাখ টাকা।

সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের প্রকল্পগুলো সম্পর্কে ব্রিফ করেন। তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু যেমন আমাদের স্বপ্নের প্রকল্প তেমনি পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর আমাদের স্বপ্নের প্রকল্প। এটা আমাদের মূল প্রকল্প। এ প্রকল্পে ৬ হাজার ৫৯ একর ভূমি অধিগ্রহণ করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের পুনর্বাসনের জন্য ৪৯৩.০৮ একর ভূমি অধিগ্রহণ করতে হবে।’

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘প্রকল্পের অংশ হিসেবে পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দরের কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন করা হবে। প্রকল্পের ব্যয় ৩ হাজার ৩৫০ কোটি ৫১ লাখ টাকা, যা পুরোটাই সরকারের নিজস্ব টাকা (জিওবি)। পায়রা সমুদ্রবন্দর পূর্ণোদ্যোমে চালুকরণ এবং আমদানি-রপ্তানি পণ্যের অবাধ পরিবহনের লক্ষ্যে একটি প্রশাসনিক ভবন, একটি ওয়্যার হাউজ নির্মাণসহ পাইলট বোট, টাগ বোট, বয়া লেইয়িং ভেসেল, সার্ভে বোট এবং নিরাপত্তা যন্ত্রসামগ্রী সংগ্রহ এবং বন্দর টার্মিনাল থেকে বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়ক পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ করা হবে।’

আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘পায়রা বন্দর পরিপূর্ণভাবে কাজ হয়ে গেলে বাকি থাকবে সমুদ্র ড্রেজিং করা। এটা বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানের নেই। এর জন্য বিদেশি একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করব।’

প্রকল্পের পটভূমিতে জানা যায়, ২৯ অক্টোবর ২০১৫ সালের একনেক সভায় ১ হাজার ১২৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ব্যয়ে পায়রা বন্দর প্রথম অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে ১৬ একর জায়গার ওপর সীমিত ভৌত অবকাঠামোগত সুবিধা যেমন-পন্টুন, ক্রেন, নিরাপত্তা ভবন, অভ্যন্তরীণ রাস্তা উন্নয়নের মাধ্যমে একটি বন্দর টার্মিনাল তৈরি করা হলেও এখনো নিয়মিতভাবে পণ্য ওঠা-নামা ও খালাস করা হচ্ছে না। তবে পূর্ণাঙ্গ পায়রা বন্দর ব্যবস্থা গড়ে না উঠা পর্যন্ত বহিঃনোঙ্গরে বাণিজ্যিক জাহাজ আনয়নের মাধ্যমে ডিসেম্বর ২০১৫ থেকে পণ্য খালাসের কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে।

পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার রাবনাবাদ চ্যানেলের পশ্চিম তীরে অবস্থিত পায়রা বন্দর দেশের তৃতীয় ও দক্ষিণ এশিয়ার একটি অন্যতম সামুদ্রিক বন্দর। অবস্থানগত কারণে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে এর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

মঙ্গলবার অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হলো- সীমান্ত সড়ক নির্মাণ প্রকল্প (রাঙ্গামাটি, খাগড়াছঢ়ি ও বান্দবান পার্বত্য জেলা), এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ৬৯৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ (ঢাকা জোন), প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৫৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।

ভবের চর–গজারিয়া-মুন্সীগঞ্জ জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প হবে ৮০ কোটি ৬ লাখ টাকা।

সিলেট সিটি করপোরেশনের অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৫৪৭ কোটি ২৮ লাখ।

জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা কার্যালয়ের ২০ তলা ভিত বিশিষ্ট দুটি বেইজমেন্টসহ ২০ তলা প্রধান কার্যালয় নির্মাণ (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪৯ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।

নোয়াখালী সদরে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচাবীদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ প্রকল্পে ব্যয় হবে ২১৯ কোটি ৫ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ ডাক অধিদপ্তরের সদর দপ্তর নির্মাণ (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্পে ব্যয় হবে ৯১ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলাধীন তেতুঁলিয়া নদীর ভাঙন থেকে বকসী লঞ্চঘাট থেকে বাবুরহাট পর্যন্ত প্রতিরক্ষা ও ড্রেজিং এবং কুকরি–মুকরি চর বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।

বিএডিসির উদ্যান উন্নয়ন বিভাগের সক্ষমতা প্রকল্প বৃদ্ধির মাধ্যমে উদ্যান জাতীয় ফসল সরবরাহ ও পুষ্টি নিরাপত্তা উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

এক্সপারশন অব ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসয়েন্স অ্যান্ড হসপিটাল প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪২০ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ ভূমি জরিপ উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ সরকারের জন্য নিরাপদ ই-মেইল ও ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার স্থাপন প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৬ কোটি ৩১ লাখ টাকা।

শেখ হসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, ঢাকা স্থাপন (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্পে ব্যয় হবে ৯১২ কোটি ৮০ লাখ টাকা।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ মার্চ ২০১৮/হাসিবুল/সাইফ/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়