ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে এগিয়ে নিচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী

সাইফ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:২১, ১৬ এপ্রিল ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে এগিয়ে নিচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী

রাইজিংবিডি ডেস্ক : ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশবাসীকে জাতির পিতার অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার ঐতিহাসিক মুজিব নগর দিবস উপলক্ষে সোমবার দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান  জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান সরকার মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। গত ৯ বছরে দেশের কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান, দারিদ্র্যমোচন, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, বৈদেশিক সম্পর্ক, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে অভাবনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে।

বাংলাদেশ ২০২১ সালের আগেই আমরা মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত, সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে এমন আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ‘রোল মডেল’। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নতদেশ হতে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করেছে। এ স্বীকৃতি বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে।

বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে ১৭ এপ্রিল এক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপ-রাষ্ট্রপতি এবং তাজউদ্দিন আহমেদকে প্রধানমন্ত্রী করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে স্বাধীন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ গ্রহণ করে। পাশাপাশি এদিন স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র অনুমোদন করা হয়। সেদিন থেকে এ স্থানটি ‘মুজিবনগর’ নামে পরিচিতি লাভ করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের প্রচলিত আদালতে বিচার ও রায় কার্যকর করার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি দায়মুক্ত হয়েছে। জেলখানায় নিহত চার জাতীয় নেতা হত্যা মামলার বিচার সম্পন্ন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ৭১-এর মানবতাবিরোধী যুদ্ধপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করা হচ্ছে। আমরা পাকিস্তানি বাহিনী এবং তার দোসরদের নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞ শুরুর দিন ২৫ মার্চকে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করছি।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতাকে হত্যার পর দীর্ঘ ২১ বছর বাংলাদেশে কোনো গণতন্ত্র ছিল না। আইনের শাসন ও জনগণের অধিকার সামরিক স্বৈরাচারের বুটের তলায় পিষ্ট হয়। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হয়। স্বাধীনতাবিরোধীদের রাষ্ট্র ক্ষমতার অংশীদার করা হয়।

তিনি বলেন, জনগণের ভোটে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর দেশে আবারও গণতন্ত্র ফিরে আসে। মানুষ ফিরে পায় তাদের অধিকার। ১৯৯৬-২০০১ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শাসনকাল ছিল বাংলাদেশের জন্য স্বর্ণযুগ।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে, জাতির পিতা স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তার নির্দেশ অনুযায়ী মুক্তিকামী বাঙালি জাতি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ১৭ এপ্রিল স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও সরকার পরিচালনা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার স্বপক্ষের রাজনৈতিক দলসমূহ, সশস্ত্রবাহিনী, পুলিশ ও তদানীন্তন ইপিআরসহ সব  শ্রেণিপেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে এই সরকার দীর্ঘ ৯ মাস দক্ষতার সঙ্গে মহান মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মিত্রশক্তির সহায়তায় চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। বিশ্বের বুকে জন্ম নেয় স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার সাড়ে তিন বছরের মাথায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বকে সমূলে ধ্বংস করার লক্ষ্যে আড়াই মাসের ব্যবধানে ৩ নভেম্বর জেলখানায় মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী চার জাতীয় নেতাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।

বাণীতে তিনি ঐতিহাসিক এ দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ চার জাতীয় নেতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন এবং তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।

এছাড়া শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহিদ এবং ২ লাখ নির্যাতিত মা-বোনকে। সকল মুক্তিযোদ্ধার প্রতি শ্রদ্ধা জানান তিনি।

তথ্যসূত্র : বাসস



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ এপ্রিল ২০১৮/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়