ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধিসহ যৌক্তিক দাবি মেনে নিন

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:২৬, ২০ এপ্রিল ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধিসহ যৌক্তিক দাবি মেনে নিন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধিসহ যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন গার্মেন্টস-টেক্সটাইল শ্রমিক  ফোরামের নেতারা।

শুক্রবার রাজধানীর তোপখানা রোডস্থ, কমরেড নির্মল সেন মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির আহ্বায়ক শ্রমিক নেতা শহীদুল ইসলাম সবুজ এ আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, শ্রমিকরা যে বেতন পান তাতে বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়। তার মধ্যে কথায় কথায় শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন চলছে এবং প্রতিবাদ করলেই চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে শ্রমিকরা মুক্তি চায়। বেতন বৃদ্ধিসহ যৌক্তিক দাবি মেনে নিতে মালিকপক্ষের ওপর চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

গার্মেন্টস শ্রমিকদের মূল মজুরি ১০ হাজার টাকা, মোট মজুরি ১৬ হাজার টাকা, অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন নিশ্চিত করা, শ্রমিক ছাঁটাই-নির্যাতন বন্ধ ও গণতান্ত্রিক শ্রম আইন প্রণয়নের দাবিতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গার্মেন্টস-টেক্সটাইল শ্রমিক ফোরামের আহ্বায়ক নেতা শহীদুল ইসলাম সবুজ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আহ্বায়ক কমিটির কেন্দ্রীয় নেতা মিন্টু মিয়া, মাহা মির্জা, শাহ আলম হোসাইন, তমিজ উদ্দিন হোসেন বিপ্লব, খোরশেদ আলম প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, মজুরি বৃদ্ধি, ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার, গণতান্ত্রিক শ্রম আইনসহ শ্রমিকদের যে কোনো দাবিতে আন্দোলন সংগ্রামের প্রসঙ্গ এলেই মালিকপক্ষ ও সরকার বিশৃঙ্খলা ও ষড়যন্ত্রের গন্ধ খুঁজে।

অথচ দেশের জনগোষ্ঠির একটি বিরাট অংশ পোশাক খাতে কর্মরত। তাদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত না হলে দেশের গণতন্ত্রও প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। তাই শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি এখন সার্বজনীন দাবি। সেই দাবি পূরণে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ লড়াই-আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানাই।

গার্মেন্টস-টেক্সটাইল শ্রমিক ফোরাম গার্মেন্ট শ্রমিকদের ন্যূনতম বেসিক মজুরি ১০ হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন মোট মজুরি ১৬ হাজার টাকা, শ্রমিকদের মহার্ঘ্য ভাতা, ৩টি উৎসব বোনাস, হাজিরা ও উৎপাদন বোনাস, সোয়েটার কারখানায় ফ্লোরে মাল ছাড়ার আগেই শ্রমিকের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে পিস রেট নির্ধারণ, শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র এবং সার্ভিস বুক নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে যখন তখন শ্রমিক ছাঁটাই-নির্যাতন বন্ধ, ইপিজেডসহ সকল কারখানায় অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত, শ্রম আইনের অগণতান্ত্রিক ও শ্রমিক স্বার্থবিরোধী ধারাসমূহ বাতিল করে গণতান্ত্রিক শ্রম আইন প্রণয়ন, সকল শিল্প এলাকায় শ্রম আদালত গড়ে তোলা, শ্রম আদালতে মামলা ৩ মাসে নিষ্পত্তি, শ্রমিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দের নামে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা নিঃশর্ত প্রত্যাহার, নারী শ্রমিকদের ওপর যৌন হয়রানিসহ সকল ধরনের নির্যাতন বন্ধ, যৌননিপীড়ন বিরোধী নীতিমালা প্রণয়ন, প্রতি কারখানায় নারী শ্রমিকদের বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, আলাদা ও পর্যাপ্ত টয়লেটের ব্যবস্থা, সন্তান সম্ভবা নারী শ্রমিকদের ৬ মাসের সবেতনে মাতৃত্বকালীন ছুটি, প্রতিটি কারখানায় শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র গড়ে তোলা, প্রতিটি কারখানায় নিরাপদ, স্বাস্থ্যকর ও গণতান্ত্রিক কর্মপরিবেশ, শ্রমঘন এলাকায় শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য কলোনি নির্মাণ, যাতায়াতের ক্ষেত্রে যানবাহনের ব্যবস্থা নিশ্চিত, ২৪ এপ্রিলকে শ্রমিক শোক দিবস ঘোষণা করে সকল কারখানায় ছুটি ঘোষণা, তাজরীন ও রানা প্লাজার খুনি মালিকদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের ব্যবস্থা, কারখানাগুলোতে আধুনিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, সুপরিসর বিকল্প সিঁড়ি, বিপদ সংকেত সিস্টেম আধুনিক, এবং ক্ষতিপূরণ আইন সংশোধন করার দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

এসব দাবি আদায়ে ফোরামের নেতারা ২০ মে পর্যন্ত কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্মসূচি হলো- ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজায় শ্রমিক হত্যা দিবসে পালন, রানা প্লাজার ভবন মালিকের বিচার ও আহত শ্রমিকদের চিকিৎসার দাবিতে রানা প্লাজার সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ, ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবসে শ্রমিক সমাবেশ ও আলোচনা সভা, মে মাস জুড়ে গার্মেন্ট শ্রমিক অঞ্চলগুলোতে সভা-সমাবেশ বিক্ষোভ মিছিল এবং ২০ মে সোহাগ হত্যা দিবসে আলোচনা সভা।

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ এপ্রিল ২০১৮/নঈমুদ্দীন/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়