ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

দলিত নারীদের জন্য সংসদে আসন দাবি

হাসিবুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৪১, ২৫ এপ্রিল ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
দলিত নারীদের জন্য সংসদে আসন দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক : আসন্ন জাতীয় বাজেটে দলিত নারীদের জন্য আলাদা বরাদ্দ ও সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলনসহ কিছু সংগঠন।

বুধবার দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারের চামেলী হাউজ সেমিনার কক্ষে ‘বাংলাদেশে দলিত নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং জাতীয় বাজেট’ শীর্ষক সেমিনারের এ দাবি জানানো হয়।

সেমিনারে ‘বাংলাদেশের দলিত নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং জাতীয় বাজেট’ শীর্ষক মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন নৃবিজ্ঞানী ও গবেষক রাবেয়া রওশন।

দলিত জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন নীতিমালা তুলে ধরার পাশাপাশি দলিত জনগোষ্ঠীর বর্তমান আর্থ-সামাজিক অবস্থা এবং দলিত নারীদের উন্নয়নে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি কিছু সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করেন রাবেয়া রওশন।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ৬৫ লাখ দলিত জনগোষ্ঠী রয়েছে, যা দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪ শতাংশ। দলিত জনগোষ্ঠী তাদের জন্ম ও পেশাগত পরিচয়ের কারণে সমাজে নানা বৈষম্য ও বঞ্চনার শিকার। বিশেষ করে দলিত নারীরা বৃহত্তর সমাজে বৈষম্যের পাশাপাশি নিজ নিজ পরিবার ও সমাজে প্রবল পিতৃতান্ত্রিকতার শিকার হয়, যা তাদের সমাজের অন্যান্য নারীদের তুলনায় পিছিয়ে রাখে। আশার কথা হলো, বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে বাংলাদেশের দলিত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে কিছু কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সবার আগে পিছিয়ে পড়া দলিত জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে দলিত নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কর্মসূচি গ্রহণ করা এবং জাতীয় বাজেটে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ প্রদান করা প্রয়োজন।

বক্তারা আরো বলেন, বাংলাদেশের দলিত নারীদের সমস্যা যথাযথভাবে তুলে ধরতে জাতীয় সংসদে অন্তত একজন দলিত নারীকে সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে রাখার দাবি প্রাসঙ্গিক। জাতীয় বাজেটে দলিত নারীদের জন্য আলাদা বাজেট বরাদ্দ রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী ড. হামিদা হোসেন দলিত জনগোষ্ঠীকে সংগঠিত হওয়ার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের দলিত জনগোষ্ঠীর অবস্থার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। ১০-১৫ বছর আগেও কোনো অনুষ্ঠানে দলিত নারীদের এত স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ চোখে পড়ত না। কিন্তু বর্তমানে নারীদের এগিয়ে আসার বিষয়, সংগঠিত হওয়ার বিষয় সত্যিই প্রসংশার দাবি রাখে। যাদের সমস্যা, তারা নিজেরা বললেই ভালোভাবে বোঝা যায়। আমাদের দেশে আইন হলেও বাস্তবায়ন হচ্ছে না। তথ্য অধিকার আইনটি আমরা ব্যবহার করতে পারি। এতে করে অন্তত আমরা তথ্য বের করে চ্যালেঞ্জ করতে পারি।

তিনি আরো বলেন, স্থানীয় সরকারের ওপর প্রেশার না রাখলে তারা কাজ করতে চায় না। সামাজিক সমস্যাগুলোর সমাধানে আমাদের নিজেদেরই তৎপর হতে হবে। নারীরা সারাজীবন সেলাইয়ের মতো একই ধরনর কাজ করে যাবে, এটি আমাদের কাম্য নয়। এর বাইরেও তাদের কর্মসংস্থানে যুক্ত হতে হবে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ইউপিআরে দলিতদের সমস্যাগুলো অন্তর্ভূক্ত করা জরুরি। পার্থক্য না রেখে দলিতদের মূলধারায় আনার ক্ষেত্রে জোর দেওয়া দরকার।

সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলনের সভাপতি ড. প্রতিমা পাল মজুমদার, বিডিইআরএমর প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন, বাংলাদেশ দলিত নারী ফেডারেশনের (বিডিডব্লিউএফ) সভাপতি মনি রাণী দাস। আরো উপস্থিত ছিলেন বিডিডব্লিউএফের নয়টি সহযোগী সংস্থা এবং বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলনের (বিডিইআরএম) নেতৃবৃন্দ।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ এপ্রিল ২০১৮/হাসিবুল/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়