ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

এসডিজি অর্জনে তামাকজাত দ্রব্যে কর বৃদ্ধির তাগিদ

আরিফ সাওন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৫৭, ২৫ এপ্রিল ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
এসডিজি অর্জনে তামাকজাত দ্রব্যে কর বৃদ্ধির তাগিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক : পৃথিবীর যেসব দেশের মধ্যে তামাকজাত দ্রব্য সস্তা সেসবের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। তামাক কোনো মৌলিক প্রয়োজনীয় দ্রব্য নয় বরং স্বাস্থ্যহানিকর বিলাসবহুল পণ্য। এটি এমন একটি পণ্য যা ভোক্তার মৃত্যু ডেকে আনে। কাজেই এ ধরনের পণ্য ব্যবহারে নিরুৎসাহিতকরণ এবং জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে এর ওপর উচ্চ হারে কর আরোপ জরুরি।

বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যুরো অব ইকোনোমিক রিসার্চ, বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্টের আয়োজনে ‘এসডিজি অর্জনে তামাকজাত দ্রব্যের ওপর কর বৃদ্ধির গুরুত্ব’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

জাতীয় যক্ষ্মা নিরোধ সমিতির (নাটাব) সভাপতি ও বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোটের (বাটা) উপদেষ্টা মোজাফফর হোসেন পল্টুর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বাজেট ও উন্নয়ন) মোহাম্মদ রূহুল কুদ্দুস, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার ডা. সৈয়দ মাহফুজুল হক, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সহসভাপতি নূরুল ইসলাম হাসিব, দি ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক। সেমিনার সঞ্চালনা করেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক সৈয়দা অনন্যা রহমান।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা হক। তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতি বছর ১ লাখ ৬২ হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে, জিডিপির ১.৪ শতাংশ টাকা খরচ হচ্ছে শুধু তামাক ব্যবহারে সৃষ্ট রোগের চিকিৎসার জন্য। তামাক নিয়ন্ত্রণ এসডিজির লক্ষ্য পূরণে সহায়ক। কিন্তু আমাদের তামাক কর কাঠামো খুবই দুর্বল। তামাকের ওপর কর আরোপে কোম্পানির হস্তক্ষেপ প্রতিহত করে সঠিকভাবে কর আরোপ করতে পারলে তামাক থেকে ১০০ বিলিয়ন টাকা আদায় সম্ভব।

মোজাফফর হোসেন পল্টু বলেন, গত কয়েক বছরে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেলেও তামাকজাত দ্রব্যের দাম সে হারে বৃদ্ধি পায়নি বরং মুদ্রাস্ফিতি ও মানুষের আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় তামাকের প্রকৃত মূল্য কমেছে। সুতরাং তামাকজাত দ্রব্যের চাহিদা কমাতে অন্যান্য পদক্ষেপের পাশাপাশি এর প্রকৃত মূল্য ও তামাকজাত দ্রব্যের ওপর নির্দিষ্ট হারে কর বৃদ্ধি করে এটি মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।

স্বাগত বক্তব্যে গাউস পিয়ারী বলেন, এসডিজি অর্জনে তামাকজাত দ্রব্যের ওপর কর বৃদ্ধির বিকল্প নেই। তামাক শুধু স্বাস্থ্য নয়, জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ, অর্থনীতি ও জীববৈচিত্রের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এছাড়া কৃষি জমিতের তামাক চাষ খাদ্য নিরাপত্তায় হুমকি। সুতরাং তামাক সংশ্লিষ্ট সব প্রক্রিয়ায় কর বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। তামাকজাত দ্রব্যের ওপর কর বৃদ্ধির মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন, রাজস্ব বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, অপুষ্টি, তামাকজনিত রোগ ও মৃত্যু হ্রাস করা সম্ভব।

মোহাম্মদ রূহুল কুদ্দুস বলেন, মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল অর্জনে আমরা সফল হয়েছি। এবার এসডিজি অর্জনে আমাদের আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। তামাক কোম্পানি থেকে আমাদের কত টাকা আয় হচ্ছে তা মূল বিষয় নয়। আমাদের দেশে তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার করে যে মৃত্যু হচ্ছে তা রুখতে তামাকের ওপর উচ্চ হারে কর আরোপ করতে হবে।

নূরুল ইসলাম হাসিব বলেন, পৃথিবীব্যাপী স্বীকৃত যে তামাকের ওপর কর বাড়লে তামাকের ব্যবহার কমবে। তবে আমাদের দেশের তামাকে কর বাড়ানোর ক্ষেত্রে তামাক কোম্পানির প্রভাব খুবই বেশি। তাদের প্রভাবের কারণে দেশের তামাকের ওপর কর আদায়ের প্রক্রিয়াটি জটিল। এই জটিল প্রক্রিয়ার জন্য লক্ষ্য অনুসারে তামাকের ওপর কর আদায় সম্ভব হচ্ছে না।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ এপ্রিল ২০১৮/সাওন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়