‘ইতালি না থাকায় বিশ্বকাপে শৈল্পিক ফুটবলের অভাববোধ করব’
গোলাম রাব্বানী ছোটন
দরজায় কড়া নাড়ছে রাশিয়া বিশ্বকাপ। ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ খ্যাত ফুটবল বিশ্বকাপের পর্দা উঠবে আগামী ১৪ জুন।
এখনই চায়ের কাপে ঝড় উঠতে শুরু করেছে বিশ্বকাপ নিয়ে। কে কোন দলের সমর্থক তা জাহির করার প্রচেষ্টা চলছে পুরোদমে। বড় বড় পতাকা বানিয়ে তাক লাগানোর চেষ্টাও চলছে। আর চিরস্থায়ী দ্বন্দ্বে রূপ নেওয়া আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল সমর্থকদের দ্বন্দ্ব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভালোভাবেই শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশ ফুটবল দলের বর্তমান ও প্রাক্তন ফুটবলাররা, কোচ ও সংগঠকরা কে কোন দলকে সমর্থন করেন? তাদের মতো ফুটবলবোদ্ধাদের মতে এবারের বিশ্বকাপে ফেবারিট কোন দল? সেগুলো জানার চেষ্টা করেছে রাইজিংবিডি ডটকম। বিশ্বকাপের আগ পর্যন্ত তাদের দেওয়া তথ্য ও তত্ত্বের ভিত্তিতে রাশিয়া বিশ্বকাপের ফেবারিট দলগুলো নিয়ে রাইজিংবিডিতে প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। তাদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আমিনুল ইসলাম।
আজ প্রকাশিত হলো নারী ফুটবলে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনে দেওয়া কোচ গোলাম রাব্বানী ছোটনের সাক্ষাৎকার। বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের দায়িত্বেও আছেন তিনি।
প্রশ্ন : রাশিয়া বিশ্বকাপ নিয়ে আপনার প্রত্যাশা? আপনার ফেবারিট?
গোলাম রাব্বানী ছোটন : রাশিয়া বিশ্বকাপে আমার ফেবারিট ব্রাজিল।
প্রশ্ন : কেন ব্রাজিলকে এগিয়ে রাখছেন?
গোলাম রাব্বানী ছোটন : আমি যখন থেকে ফুটবল বুঝতে শুরু করেছি তখন থেকেই ব্রাজিলের খেলা আমার ভালো লাগে। সেই থেকে আমি সব সময় ব্রাজিলের সমর্থক। আর ব্রাজিলকেই আমি ফেবারিট মানছি। তাছাড়া বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে তারা খুব দাপুটে ফুটবল খেলেছে। দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলে শীর্ষে থেকে রাশিয়া বিশ্বকাপ নিশ্চিত করেছে। তরুণ ও অভিজ্ঞদের মিশেলে তারা ভালো দলও গড়েছে। তাই ব্রাজিলকে আমার ফেবারিট মনে হচ্ছে।
প্রশ্ন : আচ্ছা চারবারের চ্যাম্পিয়ন ইতালির এবং নেদারল্যান্ডসের না থাকা বিশ্বকাপের জন্য কতটুকু কষ্টের?
গোলাম রাব্বানী ছোটন : ইতালি না থাকায় আসলে শৈল্পিক ফুটবলের কিছুটা হলেও অভাববোধ করব আমরা। আর নেদারল্যান্ডস বিশ্বে টোটাল ফুটবলের জনক। তারাও নেই। আসলে তাদেরও অভাবোধ করব আমরা। ইতালি কিংবা নেদারল্যান্ডস বিশ্বকাপে সব সময়ই ভালো খেলা উপহার দেয়। এবার দর্শকরা সেটা মিস করবে। বিষয়টা আসলেই কষ্টের।
প্রশ্ন : মেসি-রোনালদোর খোলস থেকে কি রাশিয়া বিশ্বকাপ বের হয়ে আসতে পারবে?
গোলাম রাব্বানী ছোটন : হতেই পারে। কারণ, বিশ্বকাপের ফাইনাল রাউন্ডে যারা আসে তারা সবাই ভালো দল। আপনি যদি আইসল্যান্ডের কথা বলেন, তাদের দেশে জনসংখ্যা অল্প। তারপরও তারা চমক দেখিয়ে বিশ্বকাপে এসেছে। প্রত্যেকের দলেই অভিজ্ঞ ও সম্ভাবনাময় খেলোয়াড় রয়েছে। যেকেউ যেকোনো দল থেকে উঠে আসতে পারে।
প্রশ্ন : বিশ্বকাপ এলেই বাংলাদেশে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা নিয়ে উৎসব হয়। এত পতাকার মধ্যে বাংলাদেশের পতাকা না দেখে কি কষ্ট হয়?
গোলাম রাব্বানী ছোটন : আসলে এটা ব্যক্তিগত ভালোলাগা, ভালোবাসা ও আবেগের বিষয়। এটা আমি আসলে ওভাবে দেখি না। আর বাংলাদেশের পতাকা না দেখাটা তো কষ্টেরই।
প্রশ্ন : বাংলাদেশ কি আসলেই কোনো সময় বিশ্বকাপ খেলতে পারবে?
গোলাম রাব্বানী ছোটন : আসলে পুরুষদের বিশ্বকাপে প্রতিদ্বন্দ্বিতা অনেক বেশি। প্রত্যেক দেশেরই পুরুষ টিম খুবই শক্তিশালী। এমন কী মধ্যপ্রাচ্যের পুরুষ টিমও বেশ শক্তিশালী। কিন্তু সেই তুলনায় মধ্যপ্রাচ্যের নারী টিমগুলো অতোটা শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারেনি এখনো। সেক্ষেত্রে আমাদের পুরুষ টিমের বিশ্বকাপ খেলাটা কঠিন। তবে নারীদেরটা তুলনামূলকভাবে সহজ। নারী ফুটবলের কার্যক্রম যেভাবে চলছে সেটা যদি দীর্ঘমেয়াদে চলে তাহলে সম্ভব। এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবলের চূড়ান্ত পর্বে কিন্তু আমরা নারী বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন ও রানার-আপ দলের সঙ্গে খেলেছি। তাদের বিপক্ষেও বাংলাদেশের মেয়েরা যেভাবে পারফরম্যান্স করেছে তাতে আমি আশাবাদী। মেয়েদের দীর্ঘমেয়াদে ধরে রাখা গেলে এবং আরো খেলোয়াড় পাইপলাইনে রাখা গেলে বিশ্বকাপে খেলা সম্ভব।
প্রশ্ন : নারী টিম নিয়ে আপনাদের পরিকল্পনা কেমন?
গোলাম রাব্বানী ছোটন : আসলে বঙ্গমাতা ও জেএফএ কাপ থেকে প্রতিবছরই আমরা প্রতিভাবান ফুটবলার পাচ্ছি। তাদেরকে আমরা ক্যাম্পে নিয়ে আসি। দীর্ঘমেয়াদে প্রশিক্ষণ দিই। এবারও জেএফএ কাপ থেকে ৫ জন প্রতিভাবান ফুটবলার পেয়েছি আমরা। তাদের ক্যাম্পে নিয়ে এসেছি। আমরা সব সময়ই খোঁজ-খবর রাখি। যেখন যেখানে ট্যালেন্ট পাওয়া যায় তাদের আমরা নিয়ে আসি। জাতীয় দলের জন্য গড়ে তুলছি।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩০ মে ২০১৮/আমিনুল/ইয়াসিন
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন