ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ট্রেনে অব্যবস্থাপনা নিয়ে সংসদে ক্ষোভ

আসাদ আল মাহমুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৩৫, ২৮ জুন ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ট্রেনে অব্যবস্থাপনা নিয়ে সংসদে ক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের প্রতিটি রেলওয়ে স্টেশনে টিকিট কালোবাজারি, সময়মতো ট্রেন না আসা, ট্রেনের টয়লেট ও ওয়েটিং রুম নোংরা, ট্রেনের জমি দখল হয়ে যাওয়াসহ নানা অব্যবস্থাপনা নিয়ে সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সংসদ সদস্যরা। তারা এ সব ব্যাপারে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৮-১৯ সালের বাজেটে প্রস্তাবিত দায়মুক্ত ব্যয় ব্যতিত অন্যান্য ব্যয় সম্পর্কিত মঞ্জুরি দাবির ওপর ছাটাই প্রস্তাবের ওপর বক্তব্য দিতে গিয়ে এ সব বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।

এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম বলেন, ‘‘সবচেয়ে গণমুখী পরিবহন হলো রেলওয়ে। একটি ট্রেনে এক থেকে দুই হাজার লোক যাতায়াত করতে পারেন। কিন্তু মাঝখানে আমরা এই রেল বাদ দিয়ে সড়ক পথে মনোযোগ দিয়েছিলাম। রেলওয়ের মতো নিরাপদ ভ্রমণ আবার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য মন্ত্রীর কাছে অনুরোধ থাকবে।’’

নূরুল ইসলাম ওমর (বগুড়া-৬) বলেন, ‘‘আমি লক্ষ্য করেছি ১০টার ট্রেন রাত ১টায় আসে। সেটা এখনো পরিবর্তন হয়নি। প্ল্যাটফর্মের অবস্থার পরিবর্তন হয়নি।  এনটেনডেন্সকে কোথায় থাকে, তাদের খুঁজে পাওয়া যায় না। এ সব কারণে রেলওয়ে যাতায়াত প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা টিকিট পাই না। সিট নেই। কেবিন নেই। আমরা উত্তরবঙ্গের মানুষের অপরাধটাও কী? আমাদের ওই লাইনে পুরাতন ট্রেন চলে। ৮/১০ বছর অন্য মন্ত্রীর এলাকা ঢাকা-চট্টগ্রাম চলার পর ট্রেনগুলো আমাদের ওই লাইনে চলে। এই সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।’’

স্বতন্ত্র সদস্য রুস্তুম আলী ফরাজী (পিরোজপুর-৩) বলেন, ‘‘আমরা রেল নিয়ে যেটা দেখি, শুনি সেটা হলো- মানুষ টিকিট পায় না, ট্রেনের জানালা দিয়ে ওঠে, ছাদে ওঠে। এ ব্যাপারে মন্ত্রীর নজর দেওয়া উচিত। মন্ত্রী যদি প্রকল্পগুলো স্বচ্ছভাবে বাস্তবায়ন করেন, তাহলে এই সমস্যার সমাধান হবে।’’ 

নারী আসনের রওশন আরা মান্নান বলেন, ডিজিটাল যুগে রেলওয়ের সব কিছু নতুন করে করতে হবে। রেলের অনেক সম্পদ লুটপাট হয়ে যায়। এটি বন্ধ করতে হবে। একটি দালাল চক্র সব সময় স্টেশনে হাঁটাচলা করে। এদের শাস্তি দিতে হবে। সিন্ডিকেট থেকে বের করতে পারলে রেল লাভজনক হবে।

নূরুল ইসলাম মিলন (কুমিল্লা-৮) বলেন, রেলের টয়লেটে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার খুব অভাব। টয়লেট ও স্টেশন পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা একান্তভাবে প্রয়োজন। সময়মত ট্রেন ছাড়ে না। সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে।

সেলিম উদ্দিন (সিলেট-৫) বলেন, ট্রেনের টিকেট কিনতে চাইলে টিকিট পাওয়া যায় না। একজনের নামে বরাদ্দ টিকেট অন্যজন নিয়ে যায়।

আবদুল মুনিম চৌধুরী (হবিগঞ্জ-১) বলেন, ট্রেনের প্রথম শ্রেণীতে ওঠার পর দেখলাম ফ্যান চলে না। চারদিকে দুর্গন্ধ। এটা যদি প্রথম শ্রেণী হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ যেখানে বসছে, সেটার কী অবস্থা। তিনি বলেন, ট্রেনের চালকেরা অনেক জায়গায় থামিয়ে তেল বিক্রি করে। এটা বন্ধ করতে হবে।

এ সবের জবাবে রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, বিএনপি আমলে রেলপথকে একেবারে অবহেলা করে এটা তুলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। একদিনে ১৩ হাজার কর্মীকে গোল্ডেন হ্যান্ডসেক দেওয়া হয়েছিল। রেলস্টেশন বন্ধ, রেলপথ বন্ধ করে রেলকে ধ্বংসের পরিকল্পনা করেছিলেন খালেদা জিয়া সরকার।

তিনি বলেন, অবিলম্বে রেলের প্রভূত উন্নয়ন ঘটবে। রেল বিশ্বের অন্য যে কোনো দেশের কাতারে চলে যাবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৮ জুন ২০১৮/আসাদ/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়