ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

পরিবহন খাতে স্বার্থের দ্বন্দ্বের অবসান চায় টিআইবি

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:২৩, ৩১ জুলাই ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পরিবহন খাতে স্বার্থের দ্বন্দ্বের অবসান চায় টিআইবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: সড়ক দুর্ঘটনা রোধে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করার পাশাপাশি এ খাতে বিদ্যমান স্বার্থের দ্বন্দ্বের অবসানের আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

রাজধানীসহ সারাদেশে একের পর এক সড়ক দুর্ঘটনায় নাগরিকদের জীবন ও সম্পদহানির প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার এই দাবি জানায় সংস্থাটি।

পাশাপাশি বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ), সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতেরও দাবি জানায়।

এক বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সংশ্লিষ্টজনদের চূড়ান্ত গাফিলতি, আইনের কঠোর প্রয়োগ না হওয়া, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহে সুশাসনের অভাব, উচ্চ পর্যায়ের সিন্ডিকেটসহ নানাবিধ জটিলতা ও অনিয়মের বেড়াজালে বন্দি সড়ক পরিবহন খাত। একদিকে পরিবহন মালিক সমিতি ও সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নেতৃত্ব ও অন্যদিকে সরকারের মন্ত্রীর মতো দায়িত্বশীল অবস্থানের একাকার হওয়ার ফলে সৃষ্ট স্বার্থের দ্বন্দ্বের হাতে জিম্মি পরিবহন খাত। আর এই সুযোগে মুনাফালোভী একশ্রেণির মালিকপক্ষ অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন চালক দিয়ে ফিটনেসবিহীন যানবাহন পরিচালনার মাধ্যমে পরিবহন খাতে এক অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।

তিনি বলেন, ‘প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল বেড়েই চলেছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিআরটিএ এবং অন্যান্য কর্তৃপক্ষ এই অরাজকতার দায় কোনভাবেই এড়াতে পারে না। এই অবস্থার অবসানের জন্য প্রথম ও অপরিহার্য পদক্ষেপ হচ্ছে পরিবহন খাতকে স্বার্থের দ্বন্দ্ব মুক্ত করা।

টিআইবি’র এক গবেষণা প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘গণপরিবহন নিয়ন্ত্রণে বিআরটিএ বিভিন্ন উদ্যোগের কথা বললেও কার্যত গত ১০ বছরেও মোটরযান নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে বিআরটিএ কার্যকর কোন ভূমিকা পালন করেনি। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, বিআরটিএসহ গণপরিবহন নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাসমূহ ঢাকা মেট্রোপলিটন সিটিসহ সারাদেশে বিভিন্ন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের দৌরাত্মের কাছে জিম্মি। পাশাপাশি যখন রাষ্ট্রীয় উচ্চপদে আসীন ব্যক্তি এ ধরণের সংগঠনসমূহ ও তার সদস্যদের অপরাধ ধামাচাপা দিতে তৎপর হন তখন পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে ওঠে। অন্যদিকে সুশাসনের ঘাটতি এবং মাঠ পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণের অভাবে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাতেও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ ট্রাফিক বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহ।’

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাসে এবং নাগরিকদের নিরাপদে চলাচলের সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি পরিবহন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও সংগঠনকে অন্যায় পৃষ্ঠপোষকতা বন্ধ করতে হবে। আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে ফিটনেসবিহীন যান চলাচল বন্ধ এবং অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন চালক দিয়ে যান চালানোর সুযোগ বন্ধ করতে হবে।’

২০০৯ সালে সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা নিয়ে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে টিআইবি। যেখানে গাড়ি নিবন্ধন, রুট পারমিট সংগ্রহ ও সড়কে গাড়ি পরিচালনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন স্তরে ঘুষ ও চাঁদা লেনদেনের তথ্য উঠে আসে। এছাড়া ঘুষের বিনিময়ে অদক্ষ চালকদের পরীক্ষা ছাড়াই লাইসেন্স সংগ্রহের তথ্যও পাওয়া যায়।’




রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩১ জুলাই ২০১৮/এম এ রহমান/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়