ইয়াবার প্রবেশদ্বারে র্যাবের আরো পাঁচটি ক্যাম্প
কক্সবাজার প্রতিনিধি: বলা হয়, বাংলাদেশে সর্বনাশা ইয়াবা’র প্রবেশদ্বার টেকনাফ। এবার দেশে ইয়াবা’র প্রবেশ বন্ধে টেকনাফে স্থাপিত হয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) পাঁচটি নতুন ক্যাম্প।
ফলে ইয়াবার স্বর্গরাজ্যে সৃষ্টি হয়েছে নতুন করে আতঙ্ক । প্রাণ বাঁচাতে পালাতে শুরু করেছে সীমান্তের ইয়াবার কারবারিরা।
সারাদেশের ন্যায় কক্সবাজারেও গত রমজানের শেষের দিকে মাদক বিরোধী অভিযান শুরু হয়। কিন্তু শুরু হতে না হতে বিতর্কের মুখে অভিযান স্তিমিত হয়ে যায়। এর ফলে আদৌ ইয়াবা বন্ধ হবে কিনা, তা নিয়ে নানা কথা শুরু হয়। তবে সব বিতর্ক’র অবসানে আবারও ইয়াবা নির্মূলে উদ্যোগ নিয়েছে র্যাব। এরই অংশ হিসেবে সীমান্ত এলাকা টেকনাফে নতুন পাঁচটি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে ।
র্যাব জানায়, উখিয়া ও টেকনাফের ওপারে মিয়ানমার। মিয়ানমারের কারখানায় তৈরি ইয়াবা টেকনাফ-উখিয়া সীমান্ত দিয়েই দেশে ঢোকে। সীমান্তে পাহারার জন্য বিজিবি ও নৌপথ পাহারার জন্য কোস্টগার্ড রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে পুলিশ। এরপরও ইয়াবা পাচার বন্ধ হয়নি। তাই ইয়াবা বন্ধে এই নতুন পাঁচটি ক্যাম্প।
টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ, সাবরাং, টেকনাফ সদর, বাহারছড়া ও হোয়াইক্যং এলাকায় এই পাঁচটি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। এর আগে কক্সবাজার ও টেকনাফে আরও দুটি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। নতুন করে স্থাপিত প্রতিটি ক্যাম্পে স্থানীয় থানার চেয়ে অধিক জনবল থাকবে। যারা প্রধানত ইয়াবা দমনে লড়বে।
জানা গেছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সর্বশেষ একটি তালিকা তৈরি করে। সেই তালিকায় কক্সবাজারের ১১৫১ জনের জড়িত থাকার নাম উঠে আসে। এদের মধ্যে ৬০ জন গডফাদার।
তালিকা অনুযায়ী, কক্সবাজারের আট উপজেলার মধ্যে টেকনাফে ৯১২ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী আছেন। এছাড়া কক্সবাজার সদর থানায় ৪৩ জন, রামুতে ৩৪ জন, কুতুবদিয়ায় ৪৮ জন, উখিয়ায় ৭ জন, মহেশখালীতে ৩০ জন এবং পেকুয়ায় ২২ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী রয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টেকনাফের এক জনপ্রতিনিধি (ইউনিয়ন পর্যায়ের) বলেন, ‘টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ দিয়ে সবচেয়ে বেশি ইয়াবা ঢুকে। এখান দিয়ে রাতভর ইয়াবার বড় বড় চালান ঢোকে। কিন্তু অদৃশ্য ইশারায় প্রশাসন এসব না দেখার ভান করে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আর ইয়াবার বদনাম কুড়াতে এবং প্রজন্মকে ধ্বংস হতে দিতে চাই না। নতুন করে র্যাবের পাঁচটি ক্যাম্প হওয়ায় আশায় বুক বেঁধেছি। আমরা আশা করি র্যাব ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সাথে আতাঁত না করে সত্যিকার অর্থে ইয়াবা নির্মূলে কাজ করবে।’
কক্সবাজার পিপলস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাদকবিরোধী অভিযান এলাকার মানুষ সানন্দে গ্রহণ করলেও চিহ্নিত গডফাদাররা এলাকায় অবস্থান করেন। এ কারণে ইয়াবা চোরাচালান বন্ধ হয় না।
র্যাব-৭ কক্সবাজার সিপিসি-২-এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান বলেন, ‘দেশব্যাপী র্যাবের “চলো যাই যুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে” শীর্ষক অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। কক্সবাজারকে মাদকমুক্ত করার লক্ষ্যে টেকনাফে আনুষ্ঠানিক টহলের মাধ্যমে নতুন ক্যাম্পগুলোর যাত্রা শুরু হয়েছে। ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ীদের আর রক্ষা নেই।’
রাইজিংবিডি/কক্সবাজার/৭ আগস্ট ২০১৮/সুজাউদ্দিন রুবেল/টিপু
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন