ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

আবারো ভর্তুকি দাবি বিএসএফআইসি’র

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০৪, ২৩ অক্টোবর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আবারো ভর্তুকি দাবি বিএসএফআইসি’র

কেএমএ হাসনাত : ভর্তুকি হিসেবে কয়েক মাস আগে ৩৮০ কোটি টাকা পাওয়ার পর আবারো ৫০০ কোটি টাকা ভর্তুকি চেয়েছে চিনিকল নিয়ন্ত্রকারী সংস্থা বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি)। এ অর্থ পাওয়া গেলে কলগুলো সচল রাখার জন্য শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হবে বলে বিএসএফআইসি সূত্রে জানা গেছে।

সম্প্রতি শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে একটি চিঠি দিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে ভর্তুকি হিসেবে এ অর্থ দাবি করা হয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ক্রমাগত লোকসান দিয়ে সচল রাখা হচ্ছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চিনিকলগুলোকে। এসব চিনিকল সচল রাখার জন্য বর্তমান সরকারের শেষ সময়ে এসে ৫০০ কোটি টাকা ভর্তুকি চাওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে চিঠিতে বলা হয়েছে লোকসানের কারণে এ মুহূর্তে চিনিকলগুলো শ্রমিক কর্মচারীদের নিয়মিত বেতন-ভাতা ও বোনাস বাবদ ১২৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা, অবসরোত্তর পাওনা বাবদ ২২৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা, সরবরাহকারীদের বকেয়া ৫০ কোটি টাকা এবং ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের মাসিক কিস্তি পরিশোধ করতে বর্তমানে ৭০০ কোটি টাকার প্রয়োজন। তবে শুধু ১৫টি মিল সচল রাখতে শ্রমিকদের পাওনা এবং আসন্ন আখ মাড়াই মৌসুমে বিভিন্ন সামগ্রী ও আখ ক্রয় বাবদ আপাতত ৫০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়ার দাবি করা হয়েছে। কারণ বিএসএফআইসি চলতি মৌসুমে ১০ লাখ মেট্রিক টন আখ সরকারি মিলগুলোতে সরবরাহ নিশ্চিত করতে চায়।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে, সরকারের ভিশন-২০২১ ও সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা অনুসারে বিএসএফআইসি ই-গেজেট ও ই-পুর্জি বাস্তবায়নে সহায়তা করে আসছে। এ জন্য ২০১৬-২০১৭ মাড়াই মৌসুম থেকে  চাষিদের মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আখের মূল্য পরিশোধ করে আসছে। এছাড়াও চিনিকলগুলোর ওজন যন্ত্র ডিজিটাল করার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ফলে চাষিদের মাঝে আখ চাষে উৎসাহ বেড়েছে। বেড়েছে উৎপাদন।’

রাষ্ট্রীয় মালিকাধীন ১৫টি চিনিকল এখনও লোকসান দিচ্ছে। চলতি বছর ১৫টি চিনিকলের লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৭০০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। তবে কয়েক মাস আগে বিএসএফআইসি কর্তৃপক্ষকে ৩৮০ কোটি টাকা ভর্তুকি দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। ফলে চিনিকল শ্রমিকদের মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফেরে। তবে বাকি এক হাজার ৩২০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ভর্তুকি দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা অর্থ মন্ত্রণালয়ের নেই বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে অবশ্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বিভিন্ন সভা সেমিনারে ভর্তুকি দিয়ে চিনি শিল্প সচল না রাখার পক্ষে মত দেন।

সরকারি ১৫টি চিনিকলে মোট ১৮ হাজার শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তা কর্মরত আছে। এছাড়াও ৫ লাখ ইক্ষু উৎপাদন পরিবারসহ প্রায় ৪৫ লাখ লোক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে দেশের চিনি শিল্পের ওপর নির্ভরশীল। বিএসএফআইসি’র অধীনে থাকা চিনিকলগুলোর বার্ষিক মোট উৎপাদন ক্ষমতা ২ লাখ ১০ হাজার টন। তবে বার্ষিক উৎপাদন কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৬০ হাজার টনে। দেশে প্রতিবছর চিনির চাহিদা ১৫ থেকে ১৬ লাখ টন। ভর্তুকি দিয়ে সচল রাখা চিনিকলগুলোর অবদান খুবই কম। তবু প্রতিবছর নানা কারণে চিনিকলগুলোকে ভর্তুকি দিয়ে সচল রাখা হচ্ছে। সামনে নির্বাচন- এ বিবেচনায় শিল্প মন্ত্রণালয়ের দাবি অনুযায়ী ভর্তুকি হিসেবে ৫০০ কোটি টাকা পেয়েও যেতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ অক্টোবর ২০১৮/হাসনাত/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়