ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

গুণগত কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক

হাসান মাহামুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৩৫, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
গুণগত কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক : গুণগত কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বাংলাদেশের সংস্কার কার্যক্রমে সহায়তা করার ঘোষণা দিয়েছে দাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংক।

পরিবর্তনশীল পরিবেশে আরো বেশি, অপেক্ষাকৃত ভাল বেতনের এবং গুণগত মানের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বাংলাদেশ সরকারের সক্ষমতা জোরদারে সহায়তা দিতে দাতা সংস্থাটি আজ বৃহস্পতিবার ২৫০ মিলিয়ন ডলারের উন্নয়ন নীতি কার্যক্রম বিষয়ক ঋণ অনুমোদন করেছে।

‘প্রগ্রামাটিক জবস ডেভেলপমেন্ট পলিসি ক্রেডিট’-এর আওতায় এই সহায়তা পাবে বাংলাদেশ। এই কর্মসূচির লক্ষ্য হলো-নারী, তরুণ ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীসহ নাগরিকদের জন্য অধিকতর এবং অপেক্ষাকৃত ভাল কর্মসংস্থান সৃষ্টির বাধাগুলো দূর করতে শক্তিশালী নীতি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো তৈরিতে বাংলাদেশকে সহায়তা করা।

সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সত্বেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কর্মসংস্থান সৃষ্টির গতি ধীর হয়েছে এবং যা তৈরি পোশাক খাতে প্রায় স্থবির হয়ে আছে। কর্মসংস্থান বৃদ্ধির হার ২০০৩-১০ সাল সময়কালের ২.৭% থেকে কমে ২০১০-১৬ সময়কালে ১.৮% শতাংশ হয়েছে। নারী, পিছিয়ে থাকা অঞ্চলের শ্রমিক এবং তরুণরা গুণগত মানের কর্মসংস্থানে প্রবেশের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসংস্থানের চ্যালেঞ্জকে আরো  বাড়িয়ে দিচ্ছে, যার মোকাবিলায় অকৃষি খাতে উল্লেখযোগ্য হারে কর্মসংস্থান বাড়ানোর প্রয়োজন।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপালে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান বলেন, বাংলাদেশ প্রবৃদ্ধি ত্বরানিত করা ও দারিদ্র্য কমানোর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। কিন্তু কর্মসংস্থান বৃদ্ধির হার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সমানতালে এগোয়নি। বাংলাদেশের জন্য অধিকতর এবং গুণগত কর্মসংস্থান সৃষ্টি, উচ্চ মধ্যম আয়ের মর্যাদায় উন্নীত হওয়ার একটি পূর্বশর্ত।

তিনি আরো বলেন, এজন্য প্রতি বছর শ্রমশক্তিতে যুক্ত হওয়া ২.২ মিলিয়ন তরুণের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে এবং শ্রম বাজারে আরো বেশি নারীকে আকৃষ্ট করতে হবে। এই অর্থায়নটি বাণিজ্য ও বেসরকারি বিনিয়োগ উজ্জীবিত করার সংস্কারে, শ্রমিকদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা জোরদারে করবে পিছিয়ে পড়া জনসংখ্যার কর্মসংস্থানে সহায়তা করবে।

আশা করা হচ্ছে, বহুমুখী উৎপাদন খাতগুলোতে বড় আকারের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে, এই সংস্কার কর্মসূচি বিনিয়োগ পরিবেশের উন্নতি, ব্যবসা করার ক্ষেত্রে বাধা দূর করা এবং কাষ্টমসের আধুনিকায়ন ও বাণিজ্য সহজীকরণে সহায়তা করবে। শ্রমিকদের সুরক্ষায় এ কর্মসূচি শ্রম আইনের সংশোধনীগুলো বাস্তবায়ন ও পেনশন কর্মসূচির সংস্কারে সহায়তা করবে।

সংস্থাটির লিড ইকোনমিস্ট ও টাস্ক টিম লিডার টমাস ফারোল বলেন, এই কর্মসূচি শ্রমঘন কর্মকাণ্ডে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, কর্মসংস্থানের গুণগত মান উন্নয়ন, বিভিন্ন অভিঘাত মোকাবিলায় সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং নারী, তরুণ ও অভিবাসীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে। এছাড়া  নারী, তরুণ ও প্রবাসী অভিবাসীদের অপেক্ষাকৃত ভাল কর্মসংস্থানের জন্য উপযোগী করে তুলতে, এই কর্মসূচি তাদের বাজার-চাহিদা অনুযায়ী দক্ষতা তৈরিতে সাহায্য করবে।

কর্মজীবী মায়েদের জন্য শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রের প্রাপ্যতা বাড়ানো এবং নারী ও যুব সম্প্রদায়কে প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান সেবার দেওয়ার মাধ্যমে এই কর্মসূচির আরো অধিত সংখ্যক নারীকে শ্রমবাজারেও যুক্ত করবে।

বিশ্বব্যাংকের সহযোগী সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইডিএ) বাংলাদেশকে ৩০ বছর মেয়াদি এই ঋণ দেবে। এর গ্রেস পিরিয়ড ৫ বছর।

প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে ৩০ বিলিয়ন ডলারের অনুদান ও সুদ-মুক্ত ঋণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বাংলাদেশে বর্তমানে সবচেয়ে বড় আইডিএ কর্মসূচি চলছে যার পরিমাণ ১২.২ বিলিয়ন ডলার।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ ডিসেম্বর ২০১৮/হাসান/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়