ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

খুলনাকে গুঁড়িয়ে ঢাকার রেকর্ড জয়

আবু হোসেন পরাগ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৫৯, ৮ জানুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
খুলনাকে গুঁড়িয়ে ঢাকার রেকর্ড জয়

ক্রীড়া প্রতিবেদক, মিরপুর থেকে : আরেকটি ফিফটিতে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দিলেন হজরতউল্লাহ জাজাই। দারুণ বোলিংয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন সাকিব আল হাসান। ব্যাটে-বলের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে খুলনা টাইটান্সকে উড়িয়ে দিয়ে বিপিএলে টানা দ্বিতীয় জয়ের স্বাদ পেলে ঢাকা ডায়নামাইটস।

মঙ্গলবার দিনের প্রথম ম্যাচে খুলনাকে ১০৫ রানে হারিয়েছে ঢাকা। খুলনা হারল প্রথম দুই ম্যাচেই। আর ঢাকা বিপিএলে রানের হিসাবে দ্বিতীয় বড় জয়ের রেকর্ড গড়ল। ২০১৩ সালের বিপিএলে সিলেট রয়্যালসের বিপক্ষে চিটাগং কিংসের ১১৯ রান সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ড।

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেটে ১৯২ রান করেছিল ঢাকা। জবাবে ১৩ ওভারে ৮৭ রানেই অলআউট হয়ে যায় খুলনা। ফিল্ডিংয়ের সময় চোট পাওয়া আলী খান ব্যাটিংয়ে নামতে পারেননি।



টস হেরে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ম্যাচের মতো এদিনও ঝড় তোলেন জাজাই। যদিও দ্বিতীয় ওভারেই আউট হয়ে যেতে পারতেন বাঁহাতি আফগান ব্যাটসম্যান। শরিফুল ইসলামের বলে ক্যাচ তুলেছিলেন মিড অনে। কিন্তু ক্যাচটা হাতে জমাতে পারেননি ডেভিড ভিসে।

১২ রানে জীবন পেয়ে সেই শরিফুলের পরের ওভারেই তাণ্ডব চালান জাজাই। তিন ছক্কা ও দুই চারে এই ওভার থেকে তোলেন ২৭ রান।  পরের ওভারে সুনীল নারিনকে ফিরিয়ে ৬৭ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন ভিসে। পুল করতে গিয়ে মিড অনে নারিন ক্যাচ দেন ১৯ রানে।

নারিন ফিরলেও দ্বিতীয় উইকেটে রনি তালুকদারের সঙ্গে ৪৩ রানের আরেকটি ভালো জুটি গড়েন জাজাই। পাশাপাশি তিনি নিজে তুলে নেন টানা দ্বিতীয় ফিফটি। ৪৫ থেকে মাহমুদউল্লাহকে লং অনের ওপর দিয়ে উড়িয়ে ফিফটি পূর্ণ করেন ২৫ বলে।



রনিকে (২৮) ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন মাহমুদউল্লাহ। এরপরই ছোট একটা ধস নামে ঢাকার ইনিংসে। আগের ম্যাচে ১১৬ রানের উদ্বোধনী জুটির পর ২০ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়েছিল তারা। এবার ১ উইকেটে ১১০ থেকে দ্রতই স্কোর হয়ে যায় ৪ উইকেটে ১১৩!

মাহমুদউল্লাহ জুটি ভাঙার পর বিপজ্জনক জাজাইকে থামান পল স্টার্লিং। অধিনায়ক সাকিব মেরেছেন গোল্ডেন ডাক। ৩৬ বলে ৩ চার ও ৫ ছক্কায় ৫৭ রান করেন জাজাই।

এরপর ৫৫ রানের একটা জুটিতে দলের স্কোর দেড়শ পার করেন দুই ক্যারিবিয়ান কাইরন পোলার্ড ও আন্দ্রে রাসেল। তবে দুজনের কেউ শেষ পর্যন্ত থাকতে টিকতে পারেননি। প্রথম ৯ ওভারেই একশ ছোঁয়া ঢাকাও তাই দুইশ করতে পারেনি।



পোলার্ড ১৬ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় করেন ২৭ রান। রাসেল ২২ বলে ৩ ছক্কায় করেন ২৫। শুভাগত হোম অপরাজিত ছিলেন ১১ রানে। খুলনার হয়ে ভিসে ও স্টার্লিং নেন ২টি করে উইকেট।

বড় লক্ষ্য তাড়ায় খুলনার শুরুটা ভালো হয়নি। প্রথম ম্যাচে ১৭০ রান তাড়ায় ৯০ রানের উদ্বোধনী জুটির পরও ৮ রানের হার সঙ্গী হয়েছিল তাদের। সেই ম্যাচে ফিফটি করা স্টার্লিং এবার ফিরেছেন ১ রানে। দ্বিতীয় ওভারে বাঁহাতি স্পিনার সাকিবকে লেগ সাইডে উড়াতে গিয়ে তিনি ক্যাচ তোলেন মিড অনে। কিছুটা পেছনে দৌড়ে গিয়ে বল তালুবন্দি করেন রাসেল।

দ্বিতীয় উইকেটে ২৯ রানের জুটিতে প্রতিরোধ গড়েছিলেন জুনায়েদ সিদ্দিক ও জহুরুল ইসলাম। কিন্তু এ জুটি ভাঙার পর নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট হারায় তারা। তিন বলের মধ্যে ফেরেন জহুরুল (১) ও জুনায়েদ (১৬ বলে ৩১)। নারিনকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে বল আকাশে তোলেন জহুরুল। সাকিবকে একই শটের চেষ্টায় ব্যর্থ জুনায়েদও।

টিকতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ ও নাজমুল হোসেন শান্ত। অফ স্পিনার শুভাগতকে পুল করতে গিয়ে মাহমুদউল্লাহ (৮) ক্যাচ দেন সরাসরি মিড উইকেটে। পেসার মোহর শেখকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে পুল করে শান্ত (১৩) ক্যাচ দেন ডিপ স্কয়ার লেগে। তখন ৬০ রানেই ৫ উইকেট নেই খুলনার।



এরপর আসা-যাওয়ার মিছিলে যোগ দেন বাকিরা। আরিফুল হকের অপরাজিত ১৯ রান শুধু পরাজয়ের ব্যবধানই কমাতে পারে।

৩ ওভারে ১৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ঢাকার সেরা বোলার সাকিব। সমান ওভারে ২২ রানে ২ উইকেট নেন নারিন। শুভাগত ও মোহর পেয়েছেন একটি করে উইকেট।

ঢাকার টানা দ্বিতীয় জয়ের মতো জাজাই ম্যাচসেরাও হয়েছেন টানা দ্বিতীয় ম্যাচে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৮ জানুয়ারি ২০১৯/পরাগ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়