ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

না’গঞ্জে পুলিশ-এলাকাবাসী সংঘর্ষে যুবক নিহত

হাসান উল রাকিব || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৪৬, ১৩ জানুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
না’গঞ্জে পুলিশ-এলাকাবাসী সংঘর্ষে যুবক নিহত

নিজস্ব প্রতিবেদক, নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় শনিবার রাতে পুলিশ ও এলাকাবাসীর সংঘর্ষে আশিকুর রহমান নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। রোববার দুপুরে লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

পুলিশের দাবি, মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি গ্রেপ্তার করার পর আসামিপক্ষের লোকজন তাদের ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে।

এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবদুল্লাহ আল মামুনকে প্রধান করে তিন সদস্যের  তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বন্দর থানা পুলিশের একটি দল উপজেলার মদনপুরের চাঁনপুর এলাকায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশ স্থানীয় ইউপি সদস্য খলিলুর রহমান সমর্থক আসামি দিপু ও সুজনকে আটক করে। খবর পেয়ে দিপু ও সুজনের সহযোগীরা এবং এলাকার লোকজন মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে আসামিদের ছিনিয়ে নেয়।

এ সময় পুলিশের সঙ্গে সন্ত্রাসীদের দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয় এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক প্রায় আধ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। সংঘর্ষের সময় পুলিশের দুটি গাড়ি ভাংচুর করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ও আত্মরক্ষার্থে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে।

এতে আশিকুর রহমান নামে এক পোশাক কর্মী নিহত হয়। এছাড়া বাবুল নামে গুলিবিদ্ধ এক যুবককে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সংঘর্ষের সময় পুলিশের এসআই মোহাম্মদ আলী, কনস্টেবল দেবাশীষ, কনস্টেল মনোয়ার, মোহনসহ উভয়পক্ষের ১৫ জন আহত হয়েছে।

পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠায় এবং রিফাত ও নুরনবী নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করে।

নিহত আশিক লালমনিরহাট জেলার শহীদুল ইসলামের ছেলে। তিনি বন্দর উপজেলার চাঁনপুর এলাকায় পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। আহত বাবুল কুমিল্লার বাইতোলা গ্রামের মোক্তার হোসেনের ছেলে।

তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও মদনপুর পরিবহন স্ট্যান্ডের চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গত ১৮ নভেম্বর স্থানীয় ইউপি সদস্য খলিলুর রহমান ও আমির হোসেনের বিরোধকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি মামলা করে। ওই মামলার বিষয়ে পুলিশ একটি পক্ষের হয়ে এবং তাদের লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে আসামি গ্রেপ্তার করতে গেলে অপর পক্ষের সঙ্গে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। পরে এলাকাবাসী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের সময় পুলিশের ওপর হামলা করে গাড়ি ভাংচুর ও শর্টগান ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় বন্দর থানার এসআই মো. আলী বাদী হয়ে ২৪ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত দুই/তিনশত জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে। এ ছাড়া একজন নিহতের ঘটনায় আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

তিনি জানান, এ ঘটনার ব্যাপারে তদন্ত চলছে। সংঘর্ষ ও নিহতের ঘটনায় পুলিশ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



রাইজিংবিডি/নারায়ণগঞ্জ/১৩ জানুয়ারি ২০১৯/হাসান উল রাকিব/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়