ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালান চক্রের পাঁচ সদস্য রিমান্ডে

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৫০, ৩০ জানুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালান চক্রের পাঁচ সদস্য রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর কাওলা এলাকা থেকে আটক করা আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালান চক্রের পাঁচ সক্রিয় সদস্যের এক দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বুধবার শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ দিদার হোসাইন রিমান্ডের আদেশ দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিমানবন্দর থানার এসআই সুজন ফকির আসামিদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।

অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন।

উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে একদিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন।

রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন- ফাতেমা ইমাম তানিয়া (২৬), আফসানা মিমি (২৩) ও সালমা সুলতানা (২৬), শেখ মোহাম্মদ বাঁধন ওরফে পারভেজ (২৮) ও রুহুল আমিন ওরফে সায়মন (২৯)।

এর আগে রাজধানীর বিমানবন্দর থানার কাওলা এলাকা থেকে তাদের আটক করে র‌্যাব।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বলেন, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোর উপকণ্ঠে মাউন্ট লাভিয়ান এলাকায় দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ অভিযানে ২৭২ কেজি হেরোইন, ৫ কেজি কোকেনসহ মো. জামাল উদ্দিন ও রাফিউল ইসলাম নামক দুই বাংলাদেশি গ্রেপ্তার হন। গত ১৪ ডিসেম্বর শ্রীলঙ্কার একই এলাকা থেকে ৩২ কেজি হেরোইনসহ বাংলাদেশি নাগরিক সূর্যমণি গ্রেপ্তার হন। মাত্র এক মাসের মধ্যে ৩০৪ কেজি হেরোইন, ৫ কেজি কোকেনসহ তিন বাংলাদেশি গ্রেপ্তার হওয়ায় শ্রীলঙ্কায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। এই টাস্কফোর্স অভিযান পরিচালনা করে আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালানের সঙ্গে সম্পৃক্ততার প্রমাণাদি সাপেক্ষে চয়েজ রহমান নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা হয়। আলোচিত এই বিষয়ে র‌্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে। এই ঘটনার অংশ হিসেবে তাদের পাঁচজনকে আটক করে র‌্যাব।

মুফতি মাহমুদ খান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তিরা আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালান চক্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে জানান। বাংলাদেশে তাদের নিয়ন্ত্রক মো. আরিফ উদ্দিন। আরিফ উদ্দিনের আল-আমিন ফ্যাশন বায়িং হাউস নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আরিফ ওই ব্যবসার অন্তরালে আন্তর্জাতিক মাদক সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত। আটক ব্যক্তিদের জানা মতে, আরিফ উদ্দিনের নিয়ন্ত্রণে ওই মাদক চোরাচালান চক্রে ১৫ থেকে ২০ জন বাংলাদেশি যুক্ত রয়েছেন। এই চক্র দেশের অভ্যন্তরেও মাদক (ইয়াবা) ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত।

আটক ব্যক্তিরা জানান, আরিফ নিজে রিক্রুটিং করতেন। এছাড়া, রেহানা ও আটক রুহুল আমিন ওরফে সায়মন, রিক্রুটিংয়ের কাজ করতেন। রিক্রুটিংয়ের ক্ষেত্রে মূলত স্বল্পশিক্ষিত, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত স্মার্ট মেয়েদের প্রাধান্য দেওয়া হতো। পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমে তাদের ব্যবসায়িক কাজে নিয়োজিত করা হতো। তারপর বিশ্বস্তদের দেশের অভ্যন্তরে তাদের যে মাদক ব্যবসা আছে, সেখানে মাদক সংগ্রহ, সরবরাহ ও বিতরণের জন্য ব্যবহার করা হতো।

পরবর্তী সময়ে দক্ষ হয়ে উঠলে তাদের বিদেশে পাঠিয়ে বিদেশি সংস্কৃতির সঙ্গে অভ্যস্ত এবং পাসপোর্টের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি করা হতো। পরে তাদের বিদেশে মাদক সরবরাহ ও বিতরণের কাজে ব্যবহার করা হয়। এই মাদক সিন্ডিকেটের আফগানিস্তান, পাকিস্তান, চীন, মালয়েশিয়া ও শ্রীলঙ্কায় নেটওয়ার্ক রয়েছে। মাদক পরিবহনে বিভিন্ন পথ ব্যবহার করা হয়।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩০ জানুয়ারি ২০১৯/মামুন খান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়