‘শিশুর প্রতি সহিংসতা রোধে আইনের যথাযথ প্রয়োগ প্রয়োজন’
নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেছেন, শিশুর প্রতি সহিংসতা রোধ করতে হলে দেশে প্রচলিত আইনগুলোর যথাযথ প্রয়োগ প্রয়োজন।
রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে শিশু অধিকার সংরক্ষণে ২০১৮ সালের পরিস্থিতি, বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা ও উত্তরণের উপায় শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
কাজী রিয়াজুল হক বলেন, শিশুদের জন্য পৃথক আদালত রাখার প্রয়োজন, যেন শিশুদের বিকাশ বাধাগ্রস্ত না হয়। শিক্ষাক্ষেত্রে শারীরিক শাস্তি বন্ধের লক্ষ্যে মনিটরিং ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। শিশুরা যেন যৌন হয়রানির শিকার না হয় সেজন্য প্রত্যেকটা স্কুলে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কমিটি গঠন প্রয়োজন।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. আবু তালেব বলেন, বর্তমান সরকার শিশুদের সব সময় অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে। সরকার শিশুদের জন্য পৃথক কমিশন এবং পৃথক অধিদপ্তর গঠনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। আশা করছি, ২০১৯ সালের শেষ নাগাদ আমরা শিশুদের জন্য পৃথক কমিশন এবং পৃথক অধিদপ্তর গঠনের কাজ অনেক দূর এগিয়ে নিতে পারব।
এডুকো বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর জনি এম সরকার বলেন, বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাথমিক শিক্ষায় বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে সফল হলেও শিক্ষার মান এখনো উদ্বেগের বিষয়। একজন শিশুর ১১ বছরের স্কুলজীবনের সাড়ে ৪ বছর নষ্ট হয়ে যায়। তারা ১১ বছরে শিখে মাত্র সাড়ে ৬ বছরের পাঠ্যক্রমের সমান। আবার দেশের পঞ্চম শ্রেণির প্রতি চারজন শিক্ষার্থীর তিনজনই নিজেদের শ্রেণির উপযোগী সাধারণ মানের অঙ্ক কষতে পারে না।
সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশের চাইল্ড রাইটস গভর্নেন্স অ্যান্ড চাইল্ড প্রটেকশন ডিরেক্টর আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, এ দেশের সামাজিক কাঠামোতে শিশুরা সবচেয়ে দুর্বল এবং সবচেয়ে নির্যাতনের শিকার। শিশুদের প্রতি সহিংসতা রোধের লক্ষ্যে জাতীয় শিশু সুরক্ষা কাঠামো গঠন প্রয়োজন এবং এখানে কার কী দায়িত্ব সেটি উল্লেখ করা প্রয়োজন। শিশুদের জন্য একটি আলাদা কমিশন গঠন করতে হবে। এছাড়া, শিশুদের প্রতি সকলের সংবেদনশীল হতে হবে।
জাতীয় কন্যা শিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সচিব নাসিমা আক্তার জলি বলেন, ইউনিসেফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের শতকরা ৫৯ শতাংশ মেয়ে শিশুর বিয়ে হচ্ছে ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই। বাল্যবিয়ের শিকার হওয়া এক তৃতীয়াংশ ১৮ বছর হবার আগেই সন্তান জন্মদান করেন। এর ফলে কিশোরী প্রসূতির মৃত্যুর ঝুঁকি ৫ থেকে ৭ শতাংশ বেড়ে যায়।
এ সময় বাংলাদেশের শিশু পরিস্থিতি বিষয়ে কোয়ালিশনের পর্যালোচনা ও সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের শিশু অধিকার ইউনিটের টিম লিডার মো. নূরুননবী। উপস্থিত ছিলেন, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের শিশু সুরক্ষা উপদেষ্টা শাহনাজ রহমান, সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩১ মার্চ ২০১৯/নাসির/রফিক
রাইজিংবিডি.কম