পাভেল রহমান : নরসিংদী শিল্পকলা একডেমিতে রবীন্দ্রসঙ্গীত শিখতে গিয়ে বন্ধুরা মিলে গড়ে তুলেন নাট্য সংগঠন নাট্যশীলন। সেই সংগঠন থেকেই নাটক বিষয়ক একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়। প্রশিক্ষক জাহিদ রিপন তখন মাইমের কিছু বিষয় শেখান নাট্যকর্মীদের। কর্মশালায় প্রশিক্ষণ নিতে গিয়ে নিথর মাহবুবের মনে হয় মাইমটা আমাকে দিয়ে হবে। এরপর থেকে মাইমের সঙ্গেই তার পথ চলা।
১৯৯৯ সাল থেকে ২০১৪। সময়ের দীর্ঘ যাত্রায় নিথর মাহবুব এখন মাইম শিল্পী হিসেবে বেশ পরিচিত। মঞ্চ এবং টেলিভিশন মিডিয়ায় সমানতালে কাজ করে চলেছেন তিনি। সম্প্রতি রাইজিংবিডির বিনোদন বিভাগের মুখোমুখি হয়েছিলেন মাইম এবং অভিনয় জীবনের নানা গল্প নিয়ে।
রাইজিংবিডিকে নিথর মাহবুব জানান, মাইম অনেকটা নিজে নিজেই চেষ্টা করে শিখতেন। ২০০২ সালের পর ঢাকায় এসে কিছুটা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করেন মাইম শেখা অভিযান। গড়ে তুলেছেন মাইম আর্ট নামে একটি সংগঠনও। এ সংগঠন থেকেই ২০১৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে মঞ্চে এসেছে একক মাইম প্রযোজনা ‘লাইফ ইজ বিউটিফুল’।
এ প্রসঙ্গে নিথর মাহবুব বলেন, ২০০২ সালে এসে স্বপ্নদলের নাট্যচর্চায় যুক্ত হই। এ দলটির হয়ে বেশ কিছু মঞ্চ প্রযোজনায় অভিনয় করেছি। এ সময়টাতে অভিনয় এবং মাইমের অনেক বিষয় শিখেছি জাহিদ রিপন ভায়ের কাছে। ২০০৭ সাল থেকে মাইম আর্ট নিয়ে কাজ শুরু করি। ২০০৮ সালে পরিচয় হয় মাইম শিল্পী জিল্লুর রহমান জন এর সঙ্গে। এরপর বিশ্বখ্যাত মাইম শিল্পী পার্থ প্রতিম মজুমদার এবং মশরুল হুদার সান্নিধ্য পেয়েছি। তাদের কাছ থেকেই মাইমের অনেক বিষয় শিখেছি।
কি ধরণের মাইম করেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে নিথর মাহবুব বলেন, মূলত অ্যাক্রোব্যাটিক মাইমের প্রতি আমার এক ধরণের দুর্বলতা আছে। এছাড়া কর্পোরাল মাইম, শ্যাডো মাইমগুলোও নিয়মিত করছি।
মঞ্চ নাটকে অভিনয় প্রসঙ্গে নিথর মাহবুব বলেন, এখন পর্যন্ত স্বপ্নদলের ‘জাদুর প্রদীপ’, ‘ডাকঘর’, নাটকে অভিনয় করেছি। স্বপ্নদলের বাইরে অভিনয় করেছি ‘বিয়ে বিরম্বনা’, ‘নাও ইউ সি ইট’। এছাড়া শব্দ নাট্যচর্চার হয়ে অভিনয় করেছি ‘রাজা সাহিত্য কারখানা’, প্রভৃতি নাটকে। এছাড়া জেনেসিস থিয়েটারের সঙ্গে অভিনয় করেছি ‘দামাল ছেলে নজরুল’ নাটকে।
শোবিজ অঙ্গনেও দেখা গেছে, অভিনেতা নিথর মাহবুবকে। বেশ কিছু ধারবাহিক এবং খন্ড নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। ইতোমধ্যে ধারাবাহিক নাটক ‘থ্রি কমরেডস’, ‘ললিতা’ উল্লেখযোগ্য। প্রয়াত মোহাম্মদ হান্নানের ‘শিখন্ডি কথা’, সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন এ তরুণ অভিনেতা। বাংলালিংক, স্পিড এনার্জি ড্রিংকস, গ্রামীনফোন, সসের বস, হাতিল ফার্নিচার’সহ বেশ কিছু বিজ্ঞাপনচিত্রেও মডেল হয়েছেন তিনি।
মঞ্চ এবং শোবিজ অঙ্গনে অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও তার সমস্ত স্বপ্ন মাইম নিয়ে। একদিন বিশ্বখ্যাত মাইম শিল্পী হতে চান। বাংলাদেশের মাইম শিল্পটাকে একটা সাংগঠনিক ভিত্তির উপর দাঁড় করাতে চান। এ স্বপ্ন নিয়েই চলছে নিথর মাহবুবের মাইম অভিযান।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/৭ জুন ২০১৪/শান্ত/রাশেদ শাওন