ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০৯ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২৬ ১৪৩১

সর্বশেষ আত্মসমর্পণের সুযোগ নিল ৬ বনদস্যু বাহিনী

মুহাম্মদ নূরুজ্জামান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৩১, ১ নভেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সর্বশেষ আত্মসমর্পণের সুযোগ নিল ৬ বনদস্যু বাহিনী

মুহাম্মদ নূরুজ্জামান, বাগেরহাট শেখ হেলালউদ্দিন স্টেডিয়াম থেকে : বর্তমান সরকারের আমলে সর্বশেষ আত্মসমর্পণের সুযোগ নিল সুন্দরবনের আরো ছয়টি বনদস্যু বাহিনী। এ বাহিনীর ৫৪ সদস্য বৃহস্পতিবার দুপুরে বাগেরহাটের শেখ হেলালউদ্দিন স্টেডিয়ামে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন।

দস্যু বাহিনীগুলো আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে ৫৮টি অস্ত্র এবং ৩ হাজার ৩৫১ রাউন্ড গুলি জমা দিয়েছেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করেন

আত্মসমর্পণকৃত দস্যু বাহিনীগুলো হলো- আনোয়ারুল বাহিনী, তইবুর বাহিনী, শরীফ বাহিনী, ছাত্তার বাহিনী, সিদ্দিক বাহিনী ও আল আমিন বাহিনী।

অনুষ্ঠানে ইতিপূর্বে আত্মসমর্পণ করা দস্যুদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়। তারা যাতে স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারে, সেই ব্যাপারে তাদের সহযোগিতা করা হবে বলে ডিভিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিশ্রুতি দেন।

অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ পর্যন্ত সুন্দরবনসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ৩২টি দস্যু বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছে। দস্যুরা র‌্যাবের প্রতি আস্থা স্থাপন করেছে। যে কারণে একের পর এক দস্যু বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছে। এখন জেলেরা সুন্দরবনে মাছ ধরছে বিনা বাঁধায়।

তিনি বলেন, ‘‘জানামতে সুন্দরবনে আর কোনো দস্যু বাহিনী নেই। যে কারণে এখন থেকে আর জেলেরা অপহরণের শিকার হবে না। হামলার শিকার হবে না। আমরা জেলেদের বাঁচাতে সক্ষম হয়েছি। র‌্যাব, পুলিশ, কোস্টগার্ড এবং বিজিবিকে শক্তিশালী করা হয়েছে। ফলে সুন্দরবনে এখন শান্তির সু-বাতাস বইতে শুরু করেছে।’’ এরপরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে অস্ত্র ও গুলি জমা দিয়ে ৬টি বাহিনীর নেতারা আত্মসমর্পণ করেন।

এ সময় ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন ডা. মোজাম্মেল হোসেন এমপি, ছাত্তার বাহিনীর প্রধান আব্দুস ছাত্তার, বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী, মাস্টার বাহিনীর প্রধান আব্দুল কাদের মাস্টার, দস্যু নাজিম শেখের কন্যা কলেজ ছাত্রী নাসরিন সুলতানা, দাদা ভাই বাহিনীর সদস্য কামাল শিকারির স্ত্রী নূরানী বেগম, জেলে আলম ফিটার। র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ অনুষ্ঠান পরিচালনা ও সভাপতিত্ব করেন।

ভিডিও কনফারেন্স শেষে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

তিনি বলেন, সুন্দরবনে আর কোনো দস্যু নেই। তবে, যদি ২/১টি থেকে থাকে সেগুলো র‌্যাব পুলিশের নজরদারিতে আর বনে টিকতে পারবে না। কোনো বাহিনী নতুন করে তৈরি হলে তাদের আর ফিরে আসার আহ্বান জানানো হবে না। কঠোরভাবে দমন করা হবে।

বক্তৃতা করেন কেসিসি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, সংসদ সদস্য মীর শওকত আলী বাদশা। উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য বেগম হাবিবুন নাহার, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. লোকমান হোসেন মিয়া, রেঞ্জ ডিআইজি দিদার আহমেদ, কেএমপি কমিশনার মো. হুমায়ুন কবির প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে র‌্যাব-৬ খুলনার অধিনায়ক হাসান ইমন আল রাজি বলেন, এটিই সর্বশেষ বনদস্যু আত্মসমর্পণ। আপাতত আত্মসমর্পণের আর সুযোগ থাকবে না।

এর আগে বিভিন্ন সময় ২৬টি দস্যু বাহিনীর ২৭৪ জন সদস্য আত্মসমর্পণ করেছে। আত্মসমর্পণের সময় দস্যুরা ৪০৪টি আগ্নেয়াস্ত্রসহ বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ জমা দেয়। এ পর্যন্ত র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ১৩৫ জন দস্যু নিহত হয়েছে।



রাইজিংবিডি/খুলনা/০১ নভেম্বর ২০১৮/মুহাম্মদ নূরুজ্জামান/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়