ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

স্বাধীন কুর্দিস্তান প্রতিষ্ঠায় অসুবিধা কোথায় ॥ আহমদ রফিক

আহমদ রফিক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:২১, ৫ ডিসেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
স্বাধীন কুর্দিস্তান প্রতিষ্ঠায় অসুবিধা কোথায় ॥ আহমদ রফিক

শুরুতেই বলে রাখা ভালো, আমি জাতিসত্তার, বিশেষত ভাষিক জাতিসত্তার আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারে বিশ্বাসী। দূর অতীতে ধর্মীয় ভাষা লাতিন প্রভাবিত ইউরোপীয় ভূখণ্ড ভেঙে যদি ভাষিক জাতিরাষ্ট্র গঠিত হতে পারে, কিংবা বছর কয় আগে ১৯৭১-এ সশস্ত্র যুদ্ধে পাকিস্তান ভেঙে ভাষিক জাতিরাজ বাংলাদেশ গঠিত হতে পারে, বা ধর্মীয় জাতিগোষ্ঠী ইহুদিদের জন্য জাতিসংঘের তদারকিতে পরাশক্তিদের ইচ্ছায় ‘ইজরাইল’ নামে ধর্মীয় জাতিরাষ্ট্র গঠিত হতে পারে, তাহলে বড় সড় কুর্দি জাতির জন্য ‘কুর্দিস্তান’ গঠনে বাধা কোথায়? কেন জাতিসংঘ থেকে শুরু করে বড় শক্তিমান জাতিরাষ্ট্রগুলো এ ব্যাপারে উদাসীন? কেন আন্তর্জাতিক রাজনীতি যুক্তিসঙ্গত কুর্দিস্তান নিয়ে মাথা ঘামাতে নারাজ?

 

এই ‘কেন’র জবাব বেশ জটিল কায়েমি স্বার্থ এবং নানা কারণে আশ্রিত। মোটা দাগে বিচার করতে চাইলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্র বিশেষের রাজনৈতিক স্বার্থ, আন্তর্জাতিক কায়েমি স্বার্থের টান এজন্য দায়ী। দায়ী বিশ্বের শক্তিমান রাষ্ট্রগুলোর উদারতার অভাব এবং কারো কারো রক্ষণশীলতার প্রভাব। কোনো বহুজাতিক-বহুভাষী রাষ্ট্রই চায় না তার অখণ্ডতা নষ্ট হোক, বিচ্ছিন্নতাবাদের টানে রাষ্ট্রের অংশবিশেষ নিয়ে নতুন, স্বাধীন রাষ্ট্র গঠিত হোক। তাই যেকোনো মূল্যে বিচ্ছিন্নতার বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চলে, রক্ত ঝরে, নিষ্ঠুরতার ব্যাপক প্রকাশ ঘটে।

 

অবশ্য বহুজাতিক রাষ্ট্রে জাতিগত অর্থনৈতিক বৈষম্যের কারণে ক্ষুদ্র বা দুর্বল জাতিসত্তার প্রতিবাদ শুরু হয় স্বায়ত্তশাসনের দাবি নিয়ে, কেন্দ্রীয় শাসনের যুক্তিহীন অনড়তায় তা শেষ পর্যন্ত বিচ্ছিন্নতাবাদী স্বাধীনতার আন্দোলনে, ক্রমে সশস্ত্র যুদ্ধে পরিণত হয়। তাতে কখনো সাফল্য কখনো ব্যর্থতা। শেষোক্ত উদাহরণ হতে পারে শ্রীলঙ্কার তামিল আন্দোলন ও বিদ্রোহ। অনুরূপ উদাহরণ স্পেনের বাষ্কভাষীদের বা ভারতীয় কাশ্মিরে সংগঠিত আন্দোলন। উপনিবেশে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন বা বিদ্রোহ, বিপ্লবগুলো একই চরিত্রের যা মুক্তি সংগ্রাম নামে পরিচিত।

 

॥ দুই ॥

কুর্দি ভাষিক জাতিসত্তার লড়াইও পূর্বোক্ত মুক্তি সংগ্রাম দ্বারা পরিচালিত। তাদের অবস্থান মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক রাষ্ট্রের সীমান্তে বা অভ্যন্তরে। যেমন ইরান, ইরাক, সিরিয়া, তুরস্ক ইত্যাদি রাষ্ট্রে। এর মধ্যে একমাত্র ইরানের শিয়া কুর্দিরাই স্বায়ত্ত্বশাসন ভোগ করে বলে সেখানে সশস্ত্র বিদ্রোহ দেখা দেয় নি। তবু স্বাধীনতার পক্ষে অসন্তোষ যে একেবারে নেই তা নয়। বিশেষ করে যখন অন্যত্র কুর্দিদের স্বাধীনতার লড়াই চলছে এবং বর্তমান ইরাকের একাংশে কুর্দিশাসন বিদ্যমান।

 

মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে কুর্দি জাতিয়তাবাদের প্রতিবাদী প্রকাশ অন্য কারো কারো তুলনায় দীর্ঘদিনের। এতে এই জাতিসত্তাটির অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, অনেক রক্ত ঝরেছে, অনেক মৃত্যু ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। তবু অদম্য সাহস, সহিষ্ণুতা ও লড়াকু মানসিকতা নিয়ে কুর্দিরা তাদের কুর্দিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম জারি রেখেছে দীর্ঘ সময় ধরে। এ লড়াইয়ের পরিচয় দিতে গেলে কুর্দি জাতীয়তার ইতিহাস সম্পর্কে দু’চার কথা বলা দরকার।

 

কুর্দিরা মূলত ইরানি ভাষাভাষীদের একটি স্বতন্ত্র শাখার ভাষিক জনগোষ্ঠী যাদের আদি বসবাস ইরানের উত্তর পশ্চিমে পার্বত্য অঞ্চলে। আনুমানিক ১৬০০ খ্রিস্টাব্দের সময়পর্ব থেকে আন্তর্জাতিক মহলে তাদের জাতিগত স্বাতন্ত্র্য পরিচিতি পায়। সম্ভবত এর আগে খ্রিস্টান-মুসলমান ধর্মীয় যুদ্ধ তথা ক্রুসেডের সময়পর্বে এরা ওই উপলক্ষে তুরস্ক, সিরিয়া, ইরাক প্রভৃতি অঞ্চলে বসতি নিশ্চিত করে। আর বিশ শতকে ভাগ্যাহত প্যালেস্টাইনদের মতো কুর্দিরা রাজকীয় বিরোধিতা ও ষড়যন্ত্রের মুখে জাতিগত অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে ব্যস্ত থাকে। কামাল পাশার নব্য তুর্কি জাতীয়তাবাদী তুরস্ক রাষ্ট্রেও কুর্দিরা সুদিনের মুখ দেখেনি। দেখেনি ইরান বা ইরাক ও সিরিয়ার রাজনৈতিক উত্থানপতনের নৈরাজ্যে। কুর্দি জাতিসত্তা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায় নি।

 

এমনকি বাথ সমাজবাদীদের শাসনামলেও ইরাক ও সিরিয়ায় কুর্দিদের দুরবস্থার অবধি ছিল না। বিশেষ করে ইরাকে সুন্নি সাদ্দাম হোসেনের একনায়কী শাসনকালে কুর্দিদের ওপর নিগ্রহ চলেছে যথেষ্ট। সংশ্লিষ্ট প্রতিটি রাষ্ট্রের চেষ্টা কুর্দিদের নিশ্চিহ্ন করা। কিন্তু কাজটা সহজ হয়নি প্রথমত কুর্দিদের লড়াকু মনোবলের কারণে এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতির নানামুখী স্বার্থের টানে।

 

এসব কারণে কুর্দিরাও তাদের স্বার্থরক্ষার প্রয়োজনে কখনো কখনো সাম্রাজ্যবাদী বা প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে যা শুদ্ধ রাজনৈতিক আচারের হিসেবে মেনে নেওয়া কঠিন। কিন্তু রাজনীতি বিশেষ করে গণতান্ত্রিক জাতীয়তাবাদী রাজনীতির ধর্মেই নিহিত রয়েছে সুবিধাবাদ, স্বার্থরক্ষার সুবিধাবাদ যা আপন স্বার্থ রক্ষায় বা প্রতিষ্ঠায় নির্মম হতে দ্বিধা করে না।

 

এ প্রসঙ্গে সিরিয়ার শাসকদের জাতিগত নীতির বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। আসাদ বা বাশারের রাষ্ট্রীয় মতাদর্শ বাথ-সমাজবাদী ধারার হলেও তাদের একনায়কী শাসন কুর্দিদের সম্পর্কে যুক্তিগ্রাহ্য নীতি গ্রহণ করেনি, বরং বিপরীত পথেই হেঁটেছে। মার্কিন প্রভাবিত সিরিয়া বিদ্রোহীরা একাধিক মতের এবং অগণতান্ত্রিক ও প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী বা আইএস গ্রুপের হওয়া সত্ত্বেও সিরিয়ার কুর্দিযোদ্ধারা তাদের সঙ্গে সদভাব রেখে চলছে। এটা বাশার রাজনীতির অদূরদর্শিতার পরিণাম।

 

জানি একনায়কী শাসকরা কখনো সমঝোতার নীতিতে বিশ্বাস করে না। করলে বিশ্বের কিছু না কিছু সমস্যা এড়ানো সম্ভব হতো। এ ক্ষেত্রে বাশারও চিরাচারিত একনায়কী পথ ধরেই চলছে।

 

ইরাকি কুর্দিদের কথা আগে উল্লেখ করেছি সাদ্দামি শাসন উপলক্ষে এবং এর পরিণাম উল্লেখে। সাদ্দামের আচরণের কারণে ইরাকি কুর্দিরা বুশ-ব্লেয়ারের ইরাকি অভিযান শেষে সেখানে স্থাপিত পুতুল সরকারে অংশ নিয়েছিল এবং তার কিছু সুফল ভোগ করছে। কুর্দিরা সুন্নি হলেও প্রয়োজনে শিয়াদের সঙ্গে সদভাব রেখে চলতে অভ্যস্ত, যেমন ইরানে। ইরাকে তাদের ওই নীতিরই প্রকাশ। তবে তাদের উচিত হবে না আইএস-এর সঙ্গে হাত মিলানো কিংবা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদকে বিশ্বাস করা। কারণ অতীত ইতিহাস তেমন ইঙ্গিতই দেবে।

 

কুর্দিদের বিরুদ্ধে মার্কিনি অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে তুরস্কের নির্মমতা সম্ভবত সবচাইতে বেশি। পেছন ফিরে তাকালে দেখা যায় প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কুর্দিরা তুর্কি সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল তাদের জাতিসত্তার স্বীকৃতি আদায় করতে। যুদ্ধশেষে ১৯১৯-২০ সম্পাদিত তুর্কি শান্তিচুক্তিতে কুর্দি রাষ্ট্রের বিষয়টি ইতিবাচক আলোচনায় আসে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে উদীয়মান সাম্রাজ্যের ভূখণ্ড ভাগাভাগির সময় পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদ কুর্দিদের কথা ভুলে গিয়ে নিজদের স্বার্থের কথাই ভেবেছে বানরের পিঠা ভাগের মতো।

এ ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তারা ইউরোপীয় মিত্র দেশগুলোর ভূমিকা ছিল স্বার্থপর বিশ্বাসহন্তার। কুর্দিদের স্বাধীনতা দূরে থাক স্বায়ত্তশাসনের প্রশ্নটিও শিকেয় ওঠে। বাস্তব হলো প্যালেস্টাইনি আরবদের নিয়ে একই রকম খেলা খেলেছে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী শক্তি। তাই প্যালেস্টাইনিরা গাজা ভূখণ্ডে সাময়িক আশ্রয় পেলেও জাতিসংঘ-স্বীকৃত স্বাধীন প্যালেস্টাইনি রাষ্ট্র গঠন করতে পারে নি। ইজরাইলি স্বার্থের তাস আস্তিনে রেখে এক্ষেত্রে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ দুহাতে খেলেছে এবং খেলছে।

কুর্দিদের অবস্থাই বা ভিন্ন হবে কেন। হতাশ কুর্দিদের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া দাবি আদায়ের জন্য সশস্ত্র পন্থা গ্রহণ। গড়ে ওঠে কুর্দিস্তান প্রতিষ্ঠার পার্টি (পি.কে.কে) নব্য তুর্কি ও পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী রাজ্যগুলোর চোখে সন্ত্রাসবাদী বা চরমপন্থী হিসেবে চিহ্নিত। অবশ্য এ ব্যাপারে ভিন্নমত প্রকাশ করে রাশিয়া, চীন, ভারত ও সুইজারল্যান্ড, এমন কি জাতিসংঘও। আরাফাতের প্যালেস্টাইনি আল ফাত্তাহ সংগঠন নিয়ে অবশ্য বিভিন্ন সময়ে প্রকাশ পেয়েছে মিশ্র অভিমত।

 

॥ তিন ॥

সম্ভবত ইউরোপীয়-পছন্দ হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে ইউরোপ-এশিয়ার দ্বাররক্ষী রাষ্ট্র তুরস্ক আতাতুর্কি ঐতিহ্য ভুলে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদীর সঙ্গে হাত মেলায় ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দেওয়া যেন তার জীবন মরণ প্রশ্ন হয়ে ওঠে। তবে তার মূল খুঁটি অবশ্য দূরদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে। অর্থ ও অস্ত্রের বিনিময়ে সে বহুদিন থেকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থের তাবেদার। আর ওই শক্তির জোরে সে এক প্রবল কুর্দিবিরোধী অভিযান চালাচ্ছে। নিশ্চিহ্ন করেছে কুর্দি-অধ্যুষিত গ্রামের পর গ্রাম। হাজার হাজার বাস্তহারা কুর্দি আশপাশের দেশগুলিতে আশ্রয় নিয়েছে।

 

তুর্কি কুর্দিরা আর আগের অবস্থানে থাকেনি। এর কারণ পূর্ব ধারা তুরস্কে এর দুয়ানি শাসনের পীড়ন ও দমন নীতি। এর মধ্যেই সংসদীয় নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির অনুসারী নতুন কুর্দি গণতন্ত্রী দল সম্প্রতি পার্লামেন্টের ৫৫০ আসনের মধ্যে ৮০ টি আসন লাভ করে। কিন্তু কুর্দি স্বার্থের দাবি আদায়ে সক্ষম হয় নি শক্তিশালী এ দল। স্বায়ত্তশাসন প্রশ্নে অনড় তুর্কি শাসক শ্রেণী, বিশেষ করে বর্তমান একনায়কী শাসকের দেয়াল।

 

রাজনীতির এটাই নিয়ম যে নিয়মতান্ত্রিক পথ বন্ধ হয়ে গেলে সশস্ত্র লড়াইয়ের ঘরামী তৈরি হয়। এক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে। গত কয়েক দশক ধরে স্বভাবতই কুর্দিরা সশস্ত্র লড়াইয়ের পথ বেছে নিয়েছে। যদিও তাতে নির্যাতন, রক্তপাত ও মৃত্যুর সংখ্যা অনেক অনেক বেশি। দেয়ালে পিঠ-ঠেকা কুর্দিরা তাই আপাত-অসম্ভবের পথেই হাঁটতে শুরু করেছে। তাদের যুদ্ধ চলছে একাধিক ফ্রন্টে। যেমন ওরা লড়েছে একদা ইরাকে, এখন সিড়িয়ায়। আর তুরস্কের সঙ্গে তো চলছে লাগাতার লড়াই। রাইফেল হাতে কুর্দিনারী তার ভাইয়ের পাশে রণাঙ্গনে এসে দাঁড়িয়েছে জান বাজি রেখে। সংসারধর্ম আপাতত শিকেয় তোলা থাক। এমন এক মরিয়া ভাব সম্প্রতি সক্ষম কুর্দি জনগোষ্ঠীর মধ্যে।

 

ইরাক তো এখন ছত্রভঙ্গ, তবু রক্তঝরা বন্ধ হয়নি। সিরিয়া প্রাণপণে লড়ছে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে। শান্তি, অর্থনীতি, মানবিকচেতনা পথে বসেছে। এ দুই রাষ্ট্র কুর্দিদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে পারতো। কিন্তু হয়নি। হওয়া উচিত ছিল সুন্নি তুর্কির। কিন্তু তুর্কির কুর্দি-বিরোধিতা বরং প্রবল। তাই প্রবল হতাশা নিয়ে সশস্ত্র কুর্দিরা জাতিসত্তার অস্তিত্ব রক্ষা ও জাতিরাষ্ট্র গঠনে মরিয়া হয়ে উঠেছে আদর্শ ও ন্যায়নীতির তোয়াক্কা না করে। সিরিয়ায় তাদের লক্ষ্য দেশটিকে বিভক্ত করে এক কোণে কুর্দিস্তান প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু যুদ্ধরত দেশটিতে এত স্বার্থের সমাহার যে সে লক্ষ্য অর্জন সহজ হবে বলে মনে হয় না।

 

আর তুরস্কে ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থান শেষে প্রেসিডেন্ট এরদুয়ান এখন এতোটা শক্তিমান যে তার কুর্দিবিরোধী ভূমিকা ক্রমশ আরো প্রকট হতে থাকবে। অন্যদিকে কুর্দিরা সংগ্রামের শপথে বলীয়ান, ভাষিক কুর্দি জাতিরাষ্ট্র তারা প্রতিষ্ঠা করবেই। কিন্তু অভ্যুত্থান উত্তর পূর্বে এরদুয়ান-পুতিন সম্পর্ক ও চুক্তি তুর্কি রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে যা প্রভাব ফেলার কথা সিরিয়া যুদ্ধের ওপর। তবু কুর্দিদের প্রত্যাশা সিরিয়ায় যদি এক খণ্ড জমি ধরে রাখা যায়। আপাত, হোক না একাধিক বিচ্ছিন্ন খণ্ডের কুর্দিস্তান যা নিয়ে জাতিসংঘে ও আন্তর্জাতিক মহলে দরবার করা যাবে পূর্ণাঙ্গ একটি কুর্দি জাতিরাষ্ট্রের জন্য।

 

লেখক : প্রাবন্ধিক

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৫ ডিসেম্বর ২০১৬/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়