দুজনে মিলে মারধরের পর ছাত্রকে টিসি
মারধরের কারণে ছিঁড়ে যাওয়া শার্ট দেখাচ্ছে ছাত্র আরমান
নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর : যশোরের বেনাপোলে এক স্কুলছাত্রকে শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মিলে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এরপর ওই ছাত্রকে টিসিও দেওয়া হয়েছে।
যশোরের বেনাপোল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে । মারধরের শিকার হওয়া ছাত্রের নাম আরমান খলিফা । সে ওই স্কুলের দশম শ্রেণির বাণিজ্য বিভাগের একজন মেধাবী ছাত্র। বুধবার (১৫ মার্চ) আরমানকে প্রধান শিক্ষক শওকত আলী স্কুল থেকে টিসি দিয়ে বের করে দেন।
আরমান খলিফা বেনাপোল পোর্ট থানার পোড়াবাড়ি গ্রামের বিল্লাল হোসেনের ছেলে। বিদ্যালয় ত্যাগের কারণ হিসাবে টিসিতে ‘পিতার/অভিভাবকের ইচ্ছা/ স্থানান্তর’ লেখা থাকলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনোটাই লেখেনি। এ ঘটনায় অভিভাবক মহল ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। আরমান ভালো লেখাপড়ার জন্য কয়েকবার পুরস্কৃত হয়েছে বলেও জানিয়েছেন অভিভাবকরা।
শিক্ষার্থী আরমান খলিফা জানায়, গত সোমবার (১৩ মার্চ) স্কুলে ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র ক্লাস নেওয়ার সময় শিক্ষক কামরুজ্জামান বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মোশাররফ হোসেনকে বলেন, ‘দেখেন ছেলেমেয়েরা পড়ালেখা করে না। এরা কোনো পড়া পারে না।’
তখন আরমান দাঁড়িয়ে বলে, ‘স্যার, আপনি তো আমাদের পড়া ধরেননি’। এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে স্যার তাকে জোরে কানে থাপ্পড় মারে এবং জামার কলার ধরে দেয়ালের সাথে মাথা ঠোকায়। এরপর ক্লাস থেকে বের করে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মোশাররফ হোসেনও তার জামার কলার ধরে গলা চেপে একপর্যায়ে দেয়ালের সাথে মাথা ঠোকাতে থাকে।
আরমান জানায়, ‘তখন আমি আত্মরক্ষার্থে মোশাররফ হোসেনের সাথে হাতাহাতি করতে বাধ্য হই। আমি তাকে বলি, আমি অন্যায় করেছি, স্যার আমাকে মারুক- আপনি মারার কে? আমি যদি তাকে বাধা না দিতাম তাহলে তিনি আমাকে গলা টিপে হয়তো মেরে ফেলতেন।’
আরমান জানায়, ‘স্যার কামরুজ্জামান এবং ম্যানেজিং কমিটির সদস্য দুজনে টেনেহিঁচড়ে আমার গায়ের জামা পর্যন্ত ছিঁড়ে ফেলে।’
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক শওকত আলীর কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘তেমন কোনো কিছু না। ওই ছাত্র পড়া পারেনি তাই শিক্ষক তাকে শাসন করেছে।’
ম্যানেজিং কমিটির সদস্য তাকে মারধর করেছে কি না এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। যা হয়েছে তা নিয়ে সব মিটমাট হয়ে গেছে।’
আরমানকে টিসি দিয়ে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়া হবে এমন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে- এ প্রশ্নের জবাবে প্রধান শিক্ষক বলেন, না এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। অথচ ওই প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষরিত বিদ্যালয় ত্যাগের সনদ (টিসি) বুধবার (১৫ মার্চ) দুপুরে ওই ছাত্রকে দিয়ে বের করে দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুস সালাম বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে আমার কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ এলে আমি বিষয়টি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’
রাইজিংবিডি/যশোর/১৬ মার্চ ২০১৭/বি এম ফারুক/টিপু/এএন
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন