ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

অসুস্থতার কারণে আদালতে যাননি খালেদা জিয়া

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৪৪, ১৬ জানুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
অসুস্থতার কারণে আদালতে যাননি খালেদা জিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পায়ে ফোঁড়া উঠায় তিনি অসুস্থ, এজন্য তিনি আদালতে যাননি।

বুধবার পুরান ঢাকার বকশীবাজারে অস্থায়ী ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক আবু সৈয়দ দিলজার হোসেনের আদালতে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলার শুনানিতে এ কথা বলেন দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল।

এদিন মামলাটি চার্জ শুনানির জন্য ধার্য ছিল। আর মামলাটিতে কারাগারে থাকা খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করতে গত ১০ জানুয়ারি প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট জারি করেন আদালত। কিন্তু খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকায় তাকে আদালতে হাজির করেনি কারা কর্তৃপক্ষ।

আজ বেলা ১১টা ৪৭ মিনিটে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। শুরুতে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, মামলাটি চার্জ শুনানির জন্য আছে। মামলার প্রধান আসামি খালেদা জিয়া কাস্টডিতে আছেন। তাকে আজ হাজির করতে পারিনি। তিনি অনুপস্থিত থাকলেও অন্যান্য আসামিরা চার্জ শুনানি করতে পারেন।

তিনি বলেন, এ মামলায় জামিনে থাকলেও খালেদা জিয়া অন্য দণ্ডপ্রাপ্ত। তিনি বর্তমানে কারাগারে আছেন। তার অনুপস্থিতিতে অন্য আসামিরা শুরু করতে পারেন। খালেদা জিয়া আদালতে আসলে তার পক্ষে শুনানি করা হবে। অন্য আসামিরা শুরু না করলে কার্যক্রম এগিয়ে নিতে পারবো না।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার বলেন, খালেদা জিয়া কাস্টডিতে আছেন। অসুস্থ থাকায় আদালতে আসেননি। আমরা তার উপস্থিতিতে চার্জ শুনানি করতে চাই। যেহেতু খালেদা জিয়া কাস্টডিতে আছে, সেহেতু তার অনুপস্থিতিতে চার্জ শুনানি করলে আইন সম্মত হবে না। ইচ্ছা থাকলে, প্রস্তুতি থাকলেও অন্য আসামির পক্ষে চার্জ শুনানি শুরু করলে আইনের খেলাপ হয়ে যাবে। আইনকে প্রতিপালন করে এগোতে হবে।

তখন মোশাররফ হোসেন কাজল এর বিরোধিতা করে বলেন, উপস্থিত অন্য আসামিরা শুরু করতে পারেন। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া সম্মানিত লোক। অনেক সময় তিনি ঘুমিয়ে থাকেন, তাকে আনা যায় না। আর তাকে তো জোর করে আনা যাবে না। যতটুকু জেনেছি খালেদা জিয়ার পায়ে ফোঁড়া উঠেছে, এজন্য উনি আসেননি। অন্যরা শুরু করুক।

যখন সব আসামির উপস্থিতি নিশ্চিত হবে তখন শুনানি করার আবেদন করেন মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার। অন্য আসামির আইনজীবীরা চার্জ শুনানি পেছানোর আবেদন করেন।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত বলেন, দীর্ঘদিন মামলাটির বিচার কার্যক্রম বন্ধ ছিল। আপনারা এখনও চার্জ পিটিশন দাখিল করবেন বলে আপনার সময় চাচ্ছেন? এর আগেও পিটিশন দিতে পারতেন। হাইকোর্ট মামলাটি ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন। মামলাটি নিষ্পত্তি করতে আপনাদের সহযোগিতা চাই। এরপর আদালত পরবর্তী চার্জ শুনানির তারিখ ২৪ জানুয়ারি ধার্য করেন। আর ওই দিন সব আসামিকে আদালতে হাজির থাকার নির্দেশ দেন।

জরুরি বিধিমালা সংযুক্ত এ মামলার অভিযোগপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করে মামলা বাতিল চেয়ে আবেদন করেন খালেদা জিয়া। রিট আবেদনের কারণে প্রায় আট বছর নিম্ন আদালতে বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। রিট খারিজ করে উচ্চ আদালত ২০১৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে দুই মাসের মধ্যে আত্মসমর্পণে নির্দেশ দেন। উচ্চ আদালতের নির্দেশে ওই বছরের ৫ এপ্রিল আত্মসমর্পণ করে জামিন পান খালেদা জিয়া।

২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. গোলাম শাহরিয়ার ১৩ জনের বিরুদ্ধে বাদি হয়ে তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

২০০৮ সালের ১৩ মে মামলাটি তদন্ত করে জোট সরকারের প্রভাবশালী ৯ প্রাক্তন মন্ত্রী ও উপমন্ত্রীসহ মোট ২৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের উপ-পরিচালক মো. জহিরুল হুদা অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

২৪ আসামির মধ্যে প্রাক্তন মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, আব্দুল মান্নান ভুইয়া, প্রাক্তন মন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী এবং খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রাহমান কোকো মারা গেছেন। মামলাটিতে বর্তমান আসামির সংখ্যা ২০ জন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ জানুয়ারি ২০১৯/মামুন খান/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়