ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

মৃত্যু দেখে এসে হাসি খুঁজছে রোহিঙ্গা শিশুরা

হাসান মাহামুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:২৭, ২৯ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মৃত্যু দেখে এসে হাসি খুঁজছে রোহিঙ্গা শিশুরা

মিয়ানমারে হারিয়ে এসেছেন আত্মীয় স্বজনদের। ছেলেকে কোলে নিয়ে নাফ নদীতে নেমেছিলেন এই মা। শরণার্থী হিসেবে বাংলাদেশে আসতে পেরে তিনি স্বস্তি পেয়েছেন। মাত্র কয়েক মাস বয়সের শিশুটিও তাই পেছনের আতঙ্ক ভুলে মায়ের কোলে হাসছে প্রাণখুলে। (ছবি : মিলটন আহমেদ)

হাসান মাহামুদ : মিয়ানমারের প্রাচীন রোসাঙ্গের অধিবাসী মুসলমানরা এখন বৌদ্ধ উগ্রপন্থীদের ধর্মান্ধতায় শুধু জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তায় ভুগছেন না, বরং তারা স্বদেশ থেকে বিতাড়িত হয়ে এক অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে যাত্রা করতে বাধ্য হয়েছেন। নাফ নদী পার হয়ে এসব রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে। জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে শুধু প্রবেশই করছে না, বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুঁজছে এখানে।

টেকনাফ সীমান্তে প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছে রোহিঙ্গারা। অনুপ্রবেশের আশায় অপেক্ষা করে আছে জঙ্গলে, পথের ধারে। কেউ এখানে অস্থায়ী আবাস গড়ে বসতি স্থাপনের চেষ্টা করছেন। মিলটন আহমেদের তোলা ছবি ও তথ্য দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই ফটো ফিচার।

 


রোহিঙ্গা আদিবাসী জনগোষ্ঠী পশ্চিম মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের একটি উল্লেখযোগ্য নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী। এরা ইসলাম ধমের্র অনুসারি। রোহিঙ্গাদের আলাদা ভাষা থাকলেও তা অলিখিত। মিয়ানমারের আকিয়াব, রেথেডাং, বুথিডাং, মংডু, কিয়ক্টাও, মাম্ব্রা, পাত্তরকিল্লা এলাকায় এদের বাস। কিন্তু গত কয়েকদিনের সহিংসতায় তাদের জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তবুও স্বামীহারা মা সন্তানদের আগলে মিয়ানমার ছেড়েছেন। সন্তানদের নিরাপত্তার অনুপ্রবেশের পর আশায় বসে আছেন সীমান্ত এলাকায়। অবুঝ শিশুরা আশ্রয় খুঁজে নিচ্ছেন মায়ের কোলে।

 


রোহিঙ্গাদের অনেকেই এরই মধ্যে টেকনাফে অস্থায়ী বসত গড়েছেন। কিন্তু এখনো তাদের চোখে মুখে মিয়ানমার আর্মিদের বিভীষিকার চিহ্ন যেন ভাসছে। আতঙ্ক এখনো রয়ে গেছে শিশুদের চোখেও।

 

সম্প্রতি জাতিসংঘের সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি) একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, মিয়ানমারে সামরিক সহিংসতার পর থেকে ৮০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা শিশু অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে। ফলে তীব্র অপুষ্টির শিকার হচ্ছে শিশুগুলো। তবুও এসব শিশুর দৃষ্টি অসীমে।

 

একটু মাথা গোঁজার ঠাঁইয়ের জন্য রোহিঙ্গারা তাকিয়ে আছে বাংলাদেশ সরকারের অনুকম্পার আশায়। মানবতার খাতিরে বাংলাদেশ রকার রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে কখনোই কঠোর পদক্ষেপ নেয়নি। তবে তারা অবশ্যই শরণার্থী। এর মধ্যেও কিশোররা রয়েছেন বিনোদনের আশায়।

 

বিজিবি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নজরদারি  সত্বেও প্রতিদিনই টেকনাফ ও উখিয়ার বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে ঘটছে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঘটনা। কেউ কেউ টেফনাফে অস্থায়ী আবাস গড়েছেন। তবুও তাদের চোখে এখনো রাজ্যের আতঙ্ক।

 

অভাব অনটনের মধ্যেও নতুন করে বসতি স্থাপন শুরু করেছে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গারা। ক্যাম্পে অবস্থানরত স্বজনদের বস্তিতে স্থান সংকুলান না হওয়ায় নিজ উদ্যোগে এসব বস্তিঘর গড়ে তুলছেন তারা। অস্থায়ী বসতি গড়া রোহিঙ্গারা আর ফিরে যেতে চায় না মিয়ানমারে।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৯ আগস্ট ২০১৭/হাসান/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়