ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

আদালতের আদেশ গ্রহণযোগ্য নয় : বিএনপি

এসকে রেজা পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:৪১, ১ নভেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আদালতের আদেশ গ্রহণযোগ্য নয় : বিএনপি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিএনপির সংশোধিত গঠনতন্ত্র গ্রহণ না করার বিষয়ে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ ‘গ্রহণযোগ্য’নয় জানিয়ে তা নাকচ করে দিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিষয়টিতে বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দলের গঠনতন্ত্র নিয়ে একটা রিট পিটিশনের বিষয়ে কোর্টের আদেশ একেবারেই নজিরবিহীন। আমাদের কাছে এটা গ্রহণযোগ্য নয়।’

বুধবার রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যারয়ে স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠক শেষে দলের এই অবস্থানের কথা জানান বিএনপির মহাসচিব।

বিএনপির গঠনতন্ত্রে আনা ৭ ধারার সংশোধনী নিয়ে এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আবেদনের নিষ্পত্তি হওয়ার আগ পর্যন্ত বিএনপির সংশোধিত গঠনতন্ত্রের গ্রহণ না করতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছে।  হাইকোর্টের এক আদেশের ফলে দুর্নীতিতে দণ্ডিত খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে দলীয় নেতৃত্বে রাখার পথ কার্যত আটকে গেছে।

নয় মাস আগে আনা ওই বিএনপির এই সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করে আওয়ামী লীগের আইনজীবী মোজাম্মেলন হোসেন নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছিলেন। ওই আবেদন এক মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বলেন হাইকোর্ট।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রাজনৈতিক দল নিজের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চলে, সেই গঠনতন্ত্রটা যেটা থাকে সেটাই চূড়ান্ত। সেক্ষেত্রে এই ধরনের রুল কতটুকু গ্রহণযোগ্য, আইনজীবীরা বলেছেন এটা গ্রহণযোগ্যই না।’

‘আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান-এ বিষয়ে কোনো রকমের সন্দেহ নেই। এটাই মূল কথা।’

সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে রাজনৈতিকভাবে বিরোধী দলকে মোকাবিলা না করে সম্পূর্ণভাবে আদালতকে ব্যবহার করে তারা রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির মহাসচিব।

তিনি বলেন, ‘সংবিধানে যতগুলো সংশোধনী এনেছে ত্রয়োদশ ও পঞ্চদশ সংশোধনীগুলো–এসব কিন্তু জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আনেনি, আদালতের একটা রায় নিয়ে সংশোধন করেছে। সংসদ কিংবা কোনো রেফারেন্ডামেও জনগণ ওইসবের সিদ্ধান্ত দেয়নি।

‘সব কিছু আদালতের আশ্রয় নিয়ে তারা করেছে এবং আদালতকে দিয়ে ওইসব গণতন্ত্র বিরোধী কাজ হয়েছে। এখন একটা পার্টির প্রধান কে হবেন, কে হবেন না, সদস্য কে হবেন, হবেন না সেটা পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্ধারিত হবে। এজন্য আমরা মনে করছি যে, এই রিট পিটিশন এবং এটা বিএনপির বিরুদ্ধে একটা সামগ্রিক চক্রান্ত যেটা চলছে এটা তারই একটা অংশ,’ বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়ার যে একটা চক্রান্ত সেই চক্রান্তের ফলোশ্রুতিতে দেশনেত্রীকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে বন্দী করে রেখেছে। সেই চক্রান্তের কারণে তারেক রহমানকে দেশের বাইরে থাকতে হচ্ছে। বিএনপির হাজার হাজার নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলা দেওয়া হচ্ছে সেই চক্রান্তেই।’

‘উদ্দেশ্য একটাই বিএনপিকে ধ্বংস করে দেওয়া। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিচার বিভাগকে তারা হাতিয়ার হিসেবে এক্ষেত্রে ব্যবহার করছে। আমরা পুরো প্রচেষ্টার নিন্দা জানাচ্ছি। বিএনপি হচ্ছে সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল। দীর্ঘ ৪০ বছর বিএনপি বহুবার ক্ষমতায় এসেছে জনগনের রায় নিয়ে। বিএনপিকে সহজেই ধ্বংস করা যাবে না, নির্মূল করা যাবে না।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘এই আদেশ অকার্যকর। ভুল তথ্যের ভিত্তিতে আদালত এই আদেশ দিয়েছে বলে আমরা মনে করি। আমাদের মহাসচিবকে বাদী করা হয়েছে অথচ মহাসচিবকে এ বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি। উচ্চ আদালতের সার্টিফাইড কপি সংগ্রহ করে আমরা বুঝব।’

শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, জয়নাল আবেদীন, এজে মোহাম্মদ আলী প্রমুখ ছিলেন।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১ নভেম্বর ২০১৮/রেজা/ইভা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়