ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

প্রেমতলার বাড়িতে বোমা আর বোমা

রেজাউল করিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৩৫, ১৬ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
প্রেমতলার বাড়িতে বোমা আর বোমা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম : সীতাকুণ্ড উপজেলার প্রেমতলায় জঙ্গি আস্তানায় অভিযান শেষে ভবনের ভেতরে ঢুকে বিভিন্ন ধরনের বোমা ও বিস্ফোরক ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখেছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। তিন চার রকমের শক্তিশালী বোমা পাওয়া গেছে সেখানে।

পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের (সিটিসি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ছানোয়ার হোসেন জানান, সেখানে যে উপাদান পাওয়া গেছে সেসব দিয়ে অন্তত ৪০/৫০টি বোমা তৈরি করা সম্ভব। তিনি বলেন, ‘আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ও গুলিতে নিহত চার জঙ্গির মধ্যে দুইজন নব্য জেএমবির বোমা বিশেষজ্ঞ ছিলেন।’

বৃহস্পতিবার দুপুরে ‘ছায়ানীড়’ নামের দুই তলা ওই ভবনের সামনে তিনি সাংবাদিকদের জানান, সেখানে অভিযানের আগে তাদের কাছে তথ্য ছিল, দুজন লোক আছে বাড়িটিতে, যারা বোমা বানাতে দক্ষ। সে কারণে পুলিশের সোয়াত টিমে সদস্যদের প্রবেশে সময় লেগেছে।

ছানোয়ার হোসেন আরো জানান, ভবনে ছোট-বড় কয়েকটি বোমা এবং ১২ সেট জেল এক্সপ্লোসিভ পাওয়া গেছে। এছাড়া পাইপের টুকরো, সুইচ, ব্লাস্টিংস ক্যাপ এবং একটি কার্টনের ভেতরে লিকুইড এক্সপ্লোসিভ পেয়েছে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল। বিস্ফোরক বোঝাই দুটি সুইসাইডাল ভেস্টসহ চারটি বোমা নিষ্ক্রিয় করেছেন তারা।



প্রসঙ্গত, প্রেমতলার পার্শ্ববর্তী আমিরাবাদ এলাকার এক বাড়ি থেকে এক জঙ্গি দম্পতিকে অস্ত্র ও বিস্ফোরকসহ আটকের পর তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বুধবার বিকেলে ছায়ানীড়ে অভিযানে যায় সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ। কিন্তু বাড়ির ফটকে পৌঁছার পর ভেতর থেকে গ্রেনেড ছোড়া হলে বিস্ফোরণে সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোজাম্মেল হক আহত হন।

এ ঘটনার পর পুলিশ ও সোয়াত সদস্যরা ওই বাড়ি ঘিরে অবস্থান নেন। ঢাকা থেকে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের সঙ্গে যোগ দেন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ও বোমা নিস্ক্রিয়কারী দলের সদস্যরা। ওই বাড়ি ঘিরে সারা রাত অপেক্ষার পর বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান শুরু করে।

পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম জানান, অভিযান শুরুর পর পাশের একটি ভবনের দোতলা থেকে সোয়াত সদস্যরা ছায়ানীড়ের ছাদে যান। তিনি বলেন, ‘এ সময় ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি দিয়ে বিস্ফোরকের ভেস্ট পড়া দুজন ছাদে চলে আসে। তারা বিস্ফোরণ ঘটাতে যাচ্ছে দেখে সোয়াত সদস্যরা গুলি করলে এক জঙ্গি ছাদের ওপর পড়ে যায়। অন্যজন বিস্ফোরণ ঘটাতে সক্ষম হয়। এতে দুই জঙ্গির শরীর ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। এছাড়া আরও দুই জঙ্গি পুলিশের গুলিতে নিহত হয়।’

ছানোয়ার হোসেন আরো জানান, সোয়াত টিম ঢোকার সময় সিঁড়িতে ছাদের কাছাকাছি জায়গায় তিন থেকে চার কেজি ওজনের বোমায় বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা। বিস্ফোরণে সিড়িঘর ভেঙে পড়ে এবং তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশ ছিটকে দূরে ছড়িয়ে পড়ে। তিনি বলেন, সুইসাইডাল এক্সপ্লোশানের এত বড় ঘটনা দেশে আগে কখনো তারা দেখেননি।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ মার্চ ২০১৭/রেজাউল করিম/শাহনেওয়াজ/এনএ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়