ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

জঙ্গিবাদ ইস্যু সরকারের ‘দুরভিসন্ধিমূলক’ কৌশল : মওদুদ

এসকে রেজা পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:০৮, ২২ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জঙ্গিবাদ ইস্যু সরকারের ‘দুরভিসন্ধিমূলক’ কৌশল : মওদুদ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : সরকার আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে জঙ্গিবাদ ইস্যু প্রচার করে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে চায় অভিযোগ করে বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ বলেছেন, এটি সরকারের একটি ‘দুরভিসন্ধিমূলক’ কৌশল।

জঙ্গিবাদ ইস্যুকে ‘অতিরঞ্জিত’ করায় এতে প্রকৃত অপরাধীদের ধরার পরিবর্তে সাধারণ মানুষ হয়রানি হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন প্রবীণ এই আইনজীবী।

বুধবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। ‘মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের ভূমিকা’ শীর্ষক এ সভার আয়োজন করে ‘আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি সংসদ’।

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘এটা নিশ্চয় সরকারের কোনো কৌশল। দুরভিসন্ধিমূলক একটি স্ট্র্যাটেজি তারা (আওয়ামী লীগ) গ্রহণ করেছে। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে জঙ্গিবাদের কর্মকাণ্ডগুলো ফলাওভাবে প্রচার করে সরকার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। কিন্তু এতে কোনো লাভ হবে না।’

জঙ্গিবাদ ইস্যুকে অতিরঞ্জিত করা হচ্ছে মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এতে অনেক নিরীহ মানুষকে জঙ্গি অভিযানের নামে অহেতুক হয়রানি করা হচ্ছে। শোনা যাচ্ছে, উপজেলা পর্যায়ে নাকি জঙ্গিবাদবিরোধী অভিযান পরিচালিত হবে। সেটি হলে ভুল হবে। কারণ এই অভিযানের নামে পুলিশ-র‌্যাব সাধারণ মানুষকে হয়রানি করবে।’

বিএনপি জঙ্গিবাদ নির্মূল করেছে দাবি করে দলটির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘শায়খ আবদুর রহমান, বাংলা ভাইদের বিচারের আওতায় এনে আমরাই জঙ্গি নির্মূল করেছিলাম। বিএনপি আমলে এদের ফাঁসি হয়েছে। বিএনপিই জঙ্গিবাদ নির্মূল করেছিল। কিন্তু এই সরকার ক্ষমতায় আসার পরে দেখা যাচ্ছে, জঙ্গিবাদের উত্থান হচ্ছে।’

সরকার জঙ্গিবাদ নির্মূল করতে চাইলে সব রাজনৈতিক দলসহ জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার আহ্বান জানান মওদুদ আহমদ।

‘যারা সত্যিকার জঙ্গি তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করুন। আমরা এ ব্যাপারে সহযোগিতা করব। আর জঙ্গিবাদ যদি এতই জাতীয় ইস্যু হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে একে দমন করতে র‌্যাব-পুলিশ একা পারবে না। সরকারের একার পক্ষে সম্ভব হবে না। যদি দমন করতে হয়, জাতীয় পর্যায়ে সব রাজনৈতিক দল ও জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। সবাই মিলে কাজ করলে জঙ্গিবাদ নির্মূল হবে।’

বর্তমান নির্বাচন কমিশন গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন,  ‘সরকারি দলের নেতারা ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী কালকেও মাগুরায় ভোট চেয়েছেন। কিন্তু এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। তবে এই ভোটের প্রচারণার অধিকার বিএনপিকেও দিতে হবে। অর্থাৎ লেবেলে প্লেয়িং ফিল্ড বলতে যা বোঝায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে।’

তিনি অভিযোগ করেন, সরকারি দল ভোটের প্রচারণা চালালেও বিএনপির নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় হয়রানি করা হচ্ছে। সভা-সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয় না।

সুতরাং এখনই বুঝতে পারছি, আগামী নির্বাচন আপনারা কেমন করতে চান। কিন্তু বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রেখে মামলা-মোকদ্দমা দিয়ে সে ধরনের একদলীয় নির্বাচন করার চেষ্টা করলে সেটি সুষ্ঠু হবে না। সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল ও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলব- বলেন বিএনপির এই নীতিনির্ধারক।

আগামী নির্বাচনে অংশ না নিলে বিএনপির নিবন্ধন বাতিল হযে যাবে বলে যে কথা বলা হচ্ছে সে প্রসঙ্গে মওদুদ আহমদ বলেন, ‘নিবন্ধন থাকুক আর না থাকুক আমাদের এটি কোনো ইস্যু নয়। আমাদের ইস্যু হচ্ছে জনগণের অধিকার এবং গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা। এখন সেই গণতন্ত্র নেই যে স্বপ্ন একাত্তরে জনগণ দেখেছিল। এখন যে সংকট চলছে সেটি মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার সংকট। সুতারং ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনাই আমাদের সবচেয়ে বড় ইস্যু।’

আয়োজক সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি শফিউল আলম রাহীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. সুকোমল বড়ুয়া।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ মার্চ ২০১৭/রেজা/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়