মুক্তিযোদ্ধাদের মানহানি : খালেদার বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন
নিজস্ব প্রতিবেদক : যুদ্ধাপরাধীদের মদদ দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের মানহানি ঘটিয়েছেন মর্মে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেছে পুলিশ।
চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি তেজগাঁও থানার ওসি (তদন্ত) এ বি এম মশিউর রহমান ঢাকার ৮নং মহানগর হাকিমের আদালতে ওই প্রতিবেদন দাখিল করেন। তবে বৃহস্পতিবার বিষয়টি জানা গেছে।
ঢাকা মহানগর হাকিম নূর নবী ওই প্রতিবেদন গত ২২ মার্চ আমলে নিয়ে প্রাক্তন এ প্রধানমন্ত্রীকে আগামী ১১ জুন আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালতে দেওয়া ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করলে দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মন্ত্রিপরিষদ গঠন করেন। ওই মন্ত্রিপরিষদে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের যারা প্রকাশ্য এবং আত্মস্বীকৃতি পাকিস্তানের দোসর হিসেবে নিজেদের পরিচয় প্রতিষ্ঠা করেছিল, সেই জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রশিবির, আল বদর, আল শামস কমিটির সদস্যদের নিয়ে মন্ত্রী ও এমপি বানান। পরবর্তীকালে উক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেই আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে মৃত্যুদণ্ডসহ বিভিন্ন দণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। তন্মধ্যে খালেদা জিয়ার সরকারের মন্ত্রিত্বপ্রাপ্ত মতিউর রহমান নিজামী এবং আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের মুত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। কিন্তু তারা ক্ষমতায় থাকাকালীন মন্ত্রিত্বের সুবিধা নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র এবং জাতীয় পতাকা তাদের বাড়ি এবং গাড়িতে ব্যবহার করেছেন। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া স্বাধীনতাবিরোধী ব্যক্তিদের তার মন্ত্রিসভায় মন্ত্রিত্ব প্রদান করে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত পতাকাকে উক্ত স্বাধীনতাবিরোধীদের গাড়িতে তুলে দিয়ে সত্যিকারের দেশপ্রেমিক জনগণের মর্যাদা ভুলণ্ঠিত করেছেন। তাই তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৫০০ ধারায় মানহানির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। অন্যদিকে প্রচলিত আইনে মৃত ব্যক্তির বিচারের সুযোগ না থাকায় প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে অব্যাহতির প্রদানের সুপারিশ করা হলো।’
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী ‘স্বীকৃত স্বাধীনতাবিরোধীদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়ে দেশের মানচিত্র এবং জাতীয় পতাকার মানহানি ঘটানোর অভিযোগে সিএমএম আদালতে একটি মানহানির মামলা দায়ের করেন। ওই দিন ঢাকা মহানগর হাকিম রায়হানুল ইসলাম তেজগাঁও থানার ওসিকে ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দেন।
মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তার প্রয়াত স্বামী প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে আসামি করা হয়।
মামলায় বলা হয়, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করার পর মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান ৭ নভেম্বর সিপাহী বিপ্লবের মাধ্যমে সামরিক সরকারের দায়িত্ব দখল করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছেন। ১৯৮১ সালের ১৭ মে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসলে তাকে হুমকি দিয়ে তার বাবার বাড়িতে প্রবেশ করতে দেন নাই। এ ছাড়া খালেদা জিয়া ২০০১ সালে ক্ষমতা গ্রহণ করে স্বাধীনতাবিরোধী আলবদর রাজাকারদের হাতে মন্ত্রিত্ব তুলে দেন। যার মাধ্যমে স্বীকৃত স্বাধীনতাবিরোধীদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়ে দেশের মানচিত্র এবং জাতীয় পতাকার মানহানি ঘটিয়েছেন।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ এপ্রিল ২০১৭/মামুন খান/সাইফুল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন