‘আ.লীগ অসাম্প্রদায়িক দল, বিভ্রান্তির সুযোগ নেই’
সচিবালয় প্রতিবেদক : বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একটি অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক দল, এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তবে যাদের সঙ্গেই আলোচনা করুক না কেন, আওয়ামী লীগ তার এই নীতি থেকে এক চুলও সরে আসেনি।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত ত্রান ভান খোয়ার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে তিনি এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
হেফাজত ইসলামের সঙ্গে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সমঝোতা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘হেফাজতের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নিজেই পরিষ্কার করেছেন। কওমি মাদ্রাসার ১৫ লাখ ছাত্রের স্বীকৃতির বিষয় ঝুলে ছিল, প্রধানমন্ত্রী সেটা নিষ্পত্তি করেছেন। তার মানে এই নয় যে তাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের আপোষ কিংবা জোট হচ্ছে। আসলে এ নিয়ে বিভ্রান্তির কোনো সুযোগ নেই।’
‘আওয়ামী লীগ একটি বড় দল। তৃণমূল থেকে দলটি বড় হয়েছে। তারপরও দলের ভুল ত্রুটি থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। আমরা তা সংশোধনের চেষ্টা করছি,’ বলেন মন্ত্রী।
আওয়ামী লীগ ইতিমধ্যে নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছে জানিয়ে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘আমরা এখন থেকে কাজ শুরু করেছি।’
তিনি বলেন, ‘সবারই নির্বাচনী কৌশল আছে এবং সেটি থাকবে। আমাদেরও আছে। ভোটের সময় নানা কৌশল অবলম্বন করতে হয়, আওয়ামী লীগ সেটাই করছে।’
আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে বলেও মন্তব্য করেন বাণিজ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচন করবে কোনো সন্দেহ নেই। তবে গণমাধ্যমের সামনে তারা যা বলছে তা রাজনৈতিক কারণে বলছে।’
‘বর্তমান সরকারের অধীনে বিএনপিকে নির্বাচনে আসতে হবে, অন্য কোনো কিছু করে লাভ হবে না,’ বলেন তোফায়েল আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘তারা শুধু দাবি-দাওয়া দেয়, কিন্তু তা আদায় করতে পারে না। তাহলে দাবি দিয়ে লাভ কিসে? কারণ দাবি আদায় করতে না পারাটা একটা পরাজয়।’
‘বিএনপির অভ্যাস অহেতুক অভিযোগ করা। যেমন সকালে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ করে, কিন্তু বিকেলে দেখা যায় তাদের দল ও প্রার্থী বিজয়ী হয়েছে।’ বিএনপিকে এই মিথ্যাচারের অভ্যাস পরিহার করার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
এর আগে ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত ত্রান ভান খোয়ার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য ভিয়েতনামের প্রতি আহ্বান জানান। বাংলাদেশের সঙ্গে ভিয়েতনামের বাণিজ্য বৃদ্ধিসহ দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় বৈঠকে। এ সময় বাণিজ্যসচিব উপস্থিত ছিলেন।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘ভিয়েতনামের সঙ্গে বাংলাদেশের যৌথ অর্থনৈতিক কাউন্সিল আছে। ২০১৫ সালে কাউন্সিলের সর্বশেষ সভা হয়েছে। এই কাউন্সিলের আগামী সভা করতে আমার সম্মতি নিতে এসেছিলেন তিনি। চলতি বছরেই এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। তবে সভার তারিখ দুই দেশ পরবর্তীকালে আলোচনা করে নির্ধারণ করবে।’
কাউন্সিলের সর্বশেষ সভায় কী আলোচনা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে। ভিয়েতনামে আমরা ওষুধ রপ্তানি করি। তাই সেখানে ওষুধ রপ্তানিতে আমরা ডিউটি ফ্রি সুবিধা চাইব।’
রমজানের আগে ডলারের দাম বাড়ছে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রমজানের আগে ডলারের দাম বাড়া ভালো লক্ষণ নয়। এতে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়।’
তবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার কথা বলেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমাদের ৩২ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ আছে। প্রয়োজনে আমরা রিজার্ভের ডলার ব্যবহার করব। কারণ এ মুহূর্তে উদ্যোগ না নিলে এর প্রভাব রমজানে পড়বে। বিষয়টি নিয়ে আমি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছেন। ফলে ডলারের দাম ৮৪ থেকে ৮২ টাকায় নেমে এসেছে। আশা করছি এটি ৮০ টাকার নিচে নেমে আসবে।’
রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৭ এপ্রিল ২০১৭/নঈমুদ্দীন/সাইফুল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন